ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় শ্রমিক ধর্মঘটে স্থবির হয়ে পড়েছে। সোমবার কর্ম সপ্তাহ শুরুর দিনটির সকালে জার্মানি জুড়ে বিমানবন্দর এবং বাস ও ট্রেন স্টেশনগুলো থেকে কোনো যান চলাচল না করায় লাখ লাখ যাত্রী ও ভ্রমণকারী সমস্যায় পড়েন। ভেরদি ট্রেড ইউনিয়ন এবং রেলওয়ে ও পরিবহন ইউনিয়ন ইভিজির ডাকা ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
খাদ্য ও জ্বালানির উচ্চমূল্যের কারণে জীবনযাত্রার মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ায় কয়েক মাস ধরে ইউরোপের বড় অর্থনীতিগুলোর শিল্পক্ষেত্রে দেখা দেওয়া অস্থিরতার সর্বশেষ নজির এটি। ধর্মঘটের কারণে জার্মানির দুটি বৃহত্তম বিমানবন্দর মিউনিখ ও ফ্রাঙ্কফুর্ট ফ্লাইট স্থগিত করে আর জার্মানির ট্রেন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডয়েচে বান দূরবর্তী ট্রেন পরিষেবাগুলো বাতিল করে। ভেরদি ইউনিয়ন জার্মানির সরকারি খাতের প্রায় ২৫ লাখ কর্মীর পক্ষ হয়ে মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে মধ্যস্থতা করছে, এদের মধ্যে সরকারি গণপরিবহন ও বিমানবন্দরগুলোও রয়েছে। আর রেলওয়ে ও পরিবহন ইউনিয়ন ইভিজি বাস কোম্পানিগুলো ও ডয়েচে বানের প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার কর্মীর পক্ষ হয়ে মধ্যস্থতা করছে। ভেরদি শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান ফ্রাঙ্ক ভ্যানেকা কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় এই ধর্মঘটের বিষয়ে বলেছেন, শ্রমিকদের এই আন্দোলন উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে লাখ লাখ শ্রমিকের বেঁচে থাকার চেষ্টার অংশ।
জার্মানিতে ভোক্তা মূল্য ফেব্রুয়ারিতে যা প্রত্যাশা করা হয়েছিল তার চেয়েও বেশি বেড়ে যায়। এ সময় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৩ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি ঘটে। ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে সুদের হার বাড়িয়ে এসব খরচের চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে।
ইভিজির চেয়ারম্যান মার্টিন বুরকাট সোমবার স্থানীয় একটি সংবাদপত্রকে বলেছেন, নিয়োগকর্তারা এখনো কোনো কার্যকর প্রস্তাব দেননি। তিনি সতর্ক করে বলেন, আসন্ন ইস্টারের ছুটির দিনগুলোসহ যে কোনো সময় আরো সতর্কতামূলক ধর্মঘট হতে পারে। ডয়েচে বান রবিবার বলেছে, এই ধর্মঘট ‘পুরোপুরি বাড়াবাড়ি, অযৌক্তিক এবং অপ্রয়োজনীয়।’ পরিবহন শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করতে হলে ভাড়া ও কর বৃদ্ধিও করতে হবে বলে সতর্ক করেছে তারা।