শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ অপরাহ্ন

বিদেশে উচ্চশিক্ষা, ভালো আবাসন বাছাইয়ে যা জানা প্রয়োজন

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৩

বিদেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক আবাসন খুঁজে বের করাটা একটু কঠিন কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকার ব্যবস্থা থাকলে এ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। বিদেশে পড়াশোনার জন্য ধাপে ধাপে নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়। নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার জন্য যাবতীয় নির্দেশনা পূরণ, প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা, থাকার জায়গা নির্বাচনসহ নানা পথ অতিক্রম করতে হয় একজন শিক্ষার্থীকে।

এ ক্ষেত্রে বিদেশের নতুন পরিবেশে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে ভালো আবাসন ব্যবস্থা। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ভালো আবাসন খুঁজে পেতে কোন নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করতে হবে।

এলাকা নির্ধারণ করা
বিদেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক আবাসন খুঁজে বের করাটা একটু কঠিন বটে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকার ব্যবস্থা থাকলে এ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। তা না হলে ৩ থেকে ৪ বছর কোথায় কাটাবেন, সেখানকার সুবিধা-অসুবিধাসহ সবকিছু জানতে কিছুটা সময় লাগে। এজন্য নিজের স্বাচ্ছন্দ্য মোতাবেক কী ধরনের থাকার জায়গা প্রয়োজন তা খুঁজে বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার খরচ, স্থানীয় হটস্পট, আশেপাশের এলাকা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। এ ছাড়া এমন জায়গা বাছাই করতে হবে যেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সহজে আসা যাবে।

পরিসর বাছাই করা
প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ওপরে থাকার জায়গার পরিসর কেমন হবে তা নির্ভর করবে। বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী হোমস্টে, স্টুডেন্ট অ্যাপার্টমেন্ট কিংবা ডর্ম নির্বাচন করার সুবিধা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি স্থানীয় কোনো পরিবারের সঙ্গে থেকে সেখানকার সংস্কৃতি এবং জীবনধারার স্বাদ অনুভব করতে চায় তবে হোমস্টে বাছাই করতে হবে।

অন্যদিকে সুবিধা এবং ব্যক্তিগত গোপনীয়তা যদি হয় প্রধান শর্ত, তাহলে স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে হবে। আর বন্ধুদের সঙ্গে থাকতে চাইলে শেয়ার্ড অ্যাপার্টমেন্ট হবে ভালো বিকল্প। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট শহর এবং প্রত্যাশার ওপর নির্ভর করে থাকার জায়গার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্ধারণ করুন কোন ধরনেরর পরিবেশে থাকতে চান।

স্থান নির্বাচনের সময় প্রথমেই শহরের কোন এলাকায় থাকতে চান তা নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে থাকতে চাইবে, তেমনি বাইরেও থাকার ভালো ব্যবস্থা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

যেমন, বাসা থেকে ক্যাম্পাসের দূরত্ব, পায়ে হেঁটে নাকি ট্রেন বা বাসে করে যাওয়া-আসা করা যায়, যাতায়াতে কেমন খরচ হবে, কতটুকু সময় ব্যয় হবে, বাড়ির ব্লকে ক্যাফে বা লাইব্রেরির সুবিধা চান কি না, যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাসমৃদ্ধ জনবসতিপূর্ণ এলাকা নাকি নিরিবিলি স্থানে থাকতে চান ইত্যাদি।

বাজেট তৈরি
বিদেশে পড়ার পরিকল্পনার সময় অন্যান্য খরচের মতোই আবাসনের জন্য কী পরিমাণ ব্যয় হবে তার একটি বাজেট করতে হবে। বাজেট করার আগে স্থান এবং জীবনযাত্রার খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকা আবশ্যক। এ ছাড়া ওই এলাকায় আপনার চাহিদা অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে কি না তা জেনে নিতে হবে। সবকিছু যাচাই করার পরই আবাসন খরচের বাজেট করতে হবে। অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেওয়ার সময় চুক্তির বিবরণ মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে এবং বাজেটের বাইরে যাতে খরচ না হয় এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কিছু কিছু দেশে ইন্টারনেট, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ খরচ ভাড়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত থাকে না বিধায় বাড়তি খরচ সমন্বয় করে বাজেট করতে হবে।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
কম খরচে ক্যাম্পাসের আশেপাশে থাকা, বিনোদনের পর্যাপ্ততা এবং পরিবহন সুবিধার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না। বিশেষ করে প্রথমবার বিদেশে পড়তে যাওয়া অল্পবয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। যেসব এলাকায় ২৪ ঘণ্টা নজরদারি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় সেসব স্থান থাকার জন্য উপযুক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবশ্য এই সুবিধা পাওয়া যায়। ক্যাম্পাসের বাইরে থাকতে হলে কোন স্থানটি নিরাপদ হবে তা খুঁজে বের করতে হবে। মোট কথা, এলাকার নিরাপত্তা প্রোটোকল সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে থাকার জায়গা বাছাই করতে হবে।

পরিচিতদের পরামর্শ নেওয়া
যে দেশে পড়তে যাবেন সেখানে কোনো বন্ধু, সিনিয়র বা আত্নীয় থাকলে থাকার জায়গা নিয়ে খুব বেশি ভাবতে হবে না। এ ক্ষেত্রে বিদেশে বসবাসকারী সহপাঠীদেরও পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। কোন স্থানে খরচ কম, কী কী সুবিধা আছে সে সম্পর্কে অভ্যন্তরীণ তথ্য পাওয়া যাবে। এ ছাড়া যেসব বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে তার ধারণাও সহজে পাওয়া যাবে। এজন্য যাওয়ার আগে বিদেশে বসবাসরত স্থানীয়দের সাথে পরিচিত হতে হবে।

বিনয়ী আচরণ করা
বাড়ি খোঁজার সময় অন্যের কাছে নিজের ব্যক্তিত্ব তুলে ধরতে পারলে পছন্দসই বাড়ি পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ হবে। এ ক্ষেত্রে ওয়ার্ডেন বা বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলার সময় নিজেকে ভালো আচরণ করতে হবে। এমনভাবে কথা বলতে হবে যাতে বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়া দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাদের সম্পদের যত্ন নেওয়ার কথা নিজে থেকে বললে তারা খুশি হবে। ভাড়া নেওয়ার সময় নিজের গোপনীয়তা যাতে সুরক্ষিত হয় তা বিনয়ী আচরণের সহিত আদায় করতে হবে।

ফাঁদে না পড়া
বিদেশে বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় প্রতারিত হয় অনেকে। বাড়িওয়ালা বা দালালের বিবরণ যাচাইয়ের আগে ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়া উচিত নয়। অফিসিয়াল রসিদ না পেয়ে অগ্রিম অর্থ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চুক্তি স্বাক্ষর করার সময় কোনো কিছু না বুঝলে প্রশ্ন করতে হবে এবং চুক্তির বৈধতা সম্পর্কে জানতে হবে। ব্যাকআপের জন্য কাগজপত্র না পেয়ে অর্থ পরিশোধ করবেন না।

মানিয়ে নেওয়া
বিদেশে বাসস্থান খোঁজার সময় সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সব সময় পছন্দ অনুযায়ী সবকিছু নাও মিলতে পারে, তাই নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভালো থাকার স্থানের সন্ধান পেতে এবং কম সময়ের মধ্যে বুক করতে চাইলে ইউনিপ্লেস, অ্যাম্বারস্টুডেন্ট, নেস্টপিকের মতো ওয়েবসাইটগুলো দেখা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: দ্য ইউনি গাইড, ভার্জ ম্যাগাজিন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com