1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কোন দেশে পড়তে যেতে চান বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা?
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: কোন দেশে পড়তে যেতে চান বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা?

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ মে, ২০২১

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে যায়।

অনেক স্নাতক পর্যায়ে অগাস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে সেমিস্টার শুরু হয় বলে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু করা হয় ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস নাগাদ।

এ বছর এইচএসসি উত্তীর্ণ জান্নাতুল ফেরদৌসি বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ”বাংলাদেশে একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু ইচ্ছা আছে বিদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। কারণ এখানে প্রাইভেটে পড়াশোনা করতে যে টাকা লাগবে, তার সাথে আরো কিছু টাকা মেলালে বিদেশে পড়াশোনার খরচ হয়ে যাবে।”

তিনি কয়েকটি দেশের কথা বিবেচনা রেখে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে এর মধ্যেই কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগও করেছেন।

জান্নাতুল ফেরদৌসির আগ্রহ কানাডার প্রতি।

”কানাডার পরিবেশ অনেক ভালো বলে শুনেছি। ঠাণ্ডা একটু বেশি হলেও পড়াশোনা শেষে সেখানে ভালো ভবিষ্যৎ আছে। তাই আমি কানাডার প্রতিই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।”

বিদেশে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহায়তা করে থাকে বেশ কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। যারা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ থেকে শুরু করে ভিসার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।

এরকম একটি প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল স্টাডি কনসালটেন্সির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বিবিসিকে বলছেন, ”এখন যে শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়াশোনা করতে চান, তাদের প্রথম পছন্দ কানাডা অথবা অস্ট্রেলিয়া। এছাড়া যুক্তরাজ্য, চীন, মালয়েশিয়া, জার্মানি এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতেও অনেকে যেতে চান।”

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে

পছন্দের দেশ বাছাইয়ে কী ভূমিকা রাখছে?

শফিকুল ইসলাম বিবিসিকে বলছেন, ”অনেকে পড়াশোনা করার জন্যই বিদেশে যেতে চান। আবার অনেকে যেতে চান ভালো একটি ভবিষ্যৎ তৈরির চিন্তা মাথায় নিয়ে।”

তিনি জানাচ্ছেন, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া বেছে নেয়ার প্রধান কারণ, এসব দেশে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষে অভিবাসনে বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকে। ফলে খরচ বেশি হলেও শিক্ষার্থীরা এই দুইটি দেশেই বেশি যাওয়ার চেষ্টা করছেন। পড়াশোনা করতে গেলেও তাদের লক্ষ্য থাকে পরবর্তীতে সেখানে স্থায়ী হওয়া।

”যাদের বাজেট খানিকটা কম, তারা মালয়েশিয়া অথবা চীনে যাচ্ছেন। এসব দেশে ভর্তি হওয়া সহজ, ভিসা পেতেও ঝামেলা কম হয়, ভর্তি হতে আইইএলটিএস লাগে না। ফলে অনেক শিক্ষার্থী ভাবেন, বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়ে প্রায় সেই খরচে বিদেশে পড়াশোনা করে আসবেন।”

সিরিয়াস স্টুডেন্টদের অনেকে ইউরোপের দেশে জার্মানি, নরওয়ে, সুইডেন যেতে আগ্রহী।

”এস্তোনিয়া, পোল্যান্ডের মতো পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোয় অনেক শিক্ষার্থীরা যেতে চান, কারণ সেখানে যাওয়ার খরচ খুব কম, ভিসা পাওয়াও সহজ। কিন্তু আমরা দেখেছি, এসব দেশে যারা যান, তারা পড়াশোনায় খুব একটা আগ্রহী থাকেন না। পরবর্তীতে তারা কাজের সন্ধানে অন্য দেশে চলে যান।”

একসময় যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের যাওয়ার হিড়িক থাকলেও, এখন সেই প্রবণতা নেই।

”তখন অনেক ভিসা কলেজ ছিল, যাদের কাজই ছিল বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যে যেতে সহায়তা করা। পরবর্তীতে সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। কড়াকড়িও অনেক বেড়েছে। ফলে যুক্তরাজ্যে যেতে চাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এখন অনেক কম।” বলছেন মি. ইসলাম।

অনেক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আগ্রহী হলেও তাদের সংখ্যা একেবারেই কম বলে জানান শফিকুল ইসলাম।

”ইউএসএ-র সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভিসা, যে কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এই দেশকে বেছে নিতে সাহস করে না। তারপরেও কিছু কিছু শিক্ষার্থী সেখানে যাচ্ছেন।”

ভারতের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজেও বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করতে যান।

শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অনেক প্রতিষ্ঠান

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অনেক প্রতিষ্ঠান

কোন বিষয়গুলো বেছে নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা?

বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিয়ে কাজ করে, এমন প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ কাউন্সিল ও আইডিপির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিজ্ঞান, ব্যবসা, উন্নয়ন, সামাজিক সেবাসহ প্রায় সব ধরণের বিষয়ই বেছে নিচ্ছেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।

শফিকুল ইসলাম বলছেন, ”স্নাতক পর্যায়ে প্রায় সব ধরণের বিষয় বেছে নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে যারা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে যাচ্ছেন, তারা আগের পড়াশোনা বা পেশাগত বিষয় বেছে নিচ্ছেন।”

পড়াশোনার খরচ

শফিকুল ইসলাম জানাচ্ছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও জায়গা ভেদে পড়াশোনার খরচের কম বেশি হয়ে থাকে।

”কানাডা অথবা অস্ট্রেলিয়ায় প্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনা করতে হলে বছরে ২০/২১ লাখ টাকা লাগবে। ব্যবসা বা অন্যান্য বিষয়ে পড়তে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা লাগতে পারে।”

পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোয় থাকা-খাওয়া ও টিউশন ফিসহ বছরে ১০/১২ লাখ টাকার মধ্যে হয়ে যায়।

জার্মানিতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি না লাগলেও ১০ লাখ টাকা ব্লক একাউন্টে রাখতে হয়। সেখান থেকে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইউরো উত্তোলন করা যায়।

যুক্তরাজ্যে প্রকৌশলসহ জটিল বিষয়গুলোতে পড়াশোনার ক্ষেত্রে থাকাখাওয়াসহ বছরে ২৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়। তবে অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রে এই খরচ ১৭/১৮ লাখ টাকা হয়ে থাকে।

মালয়েশিয়ায় পড়াশোনার ক্ষেত্রে বছরে ৮/১০ লাখ টাকা লাগে।

বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com