সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০৬ অপরাহ্ন

বিদেশি বিনিয়োগ খুঁজছে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল

  • আপডেট সময় সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

আগামী মার্চ বা এপ্রিলে উৎপাদনে যাচ্ছে লায়ন-কল্লোল লিমিটেড। আরও কয়েকটি কোম্পানি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তাদের কারখানার নির্মাণকাজ শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন–যা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল নামেও পরিচিত–এখন রপ্তানিমুখী কোম্পানিকে প্রাধান্য দিয়ে বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) খুঁজছে।

অর্থনৈতিক অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাওয়াচি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “আমরা এখন রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এফডিআই পাওয়ার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি, কারণ এটি বাংলাদেশকে এফডিআইয়ের জন্য আরও আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করবে।”

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বহুজাতিক ইলেকট্রনিক্স এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্স নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড ইতোমধ্যেই সেখানে উৎপাদন শুরু করেছে। প্রতিদিন এক হাজার ইউনিট রেফ্রিজারেটর ও টেলিভিশন উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি। ৩৩.৪ একর জমি লিজ নিয়ে নির্মিত কারখানায় ৭৮ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে সিঙ্গার।

আগামী মার্চ বা এপ্রিলে উৎপাদনে যাচ্ছে জাপানি প্রতিষ্ঠান লায়ন-কল্লোল লিমিটেড। আরও কয়েকটি কোম্পানি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তাদের কারখানার নির্মাণকাজ শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাসায়নিক, খাদ্য, হোম অ্যাপ্লায়েন্স সামগ্রীর মতো পণ্য উৎপাদনে বেশ কয়েকটি রপ্তানিমুখী বিদেশি কোম্পানি এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

কাওয়াচি জানান, কোভিড-১৯ মহামারির পরে অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে গ্রাহক পরিদর্শন কমে গিয়েছিল, তবে ব্যবসা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হয়েছে এবং বিনিয়োগ ও জমি কেনার বিষয়ে বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে।

সিঙ্গার বাংলাদেশ এবং লায়ন কল্লোল ছাড়াও জার্মানির রুডলফ জিএমবিএইচ, লায়ন কর্পোরেশন, ওনোডা এবং জাপানের নিক্কা কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড অঞ্চলটিতে জমি নিয়েছে।

গত বছর, বেঙ্গল আইআরআইএস টাকুমি লিমিটেডের সঙ্গে একটি সাব-লিজ চুক্তি সই করে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন। প্রতিষ্ঠানটি গার্মেন্টস শিল্পের জন্য বোতাম উৎপাদনে একটি অত্যাধুনিক কারখানা স্থাপন করবে।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে, উচ্চ মানের হেয়ার প্রোডাক্ট উৎপাদন ও জাপানে রপ্তানির জন্য আর্টনেচার বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে জমি বিক্রি সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করে এই বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সরকার ও জাপানের যৌথ উদ্যোগে ১,০০০ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি।

পর্যায়ক্রমে এ অঞ্চলে জমি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১৯০ একর হস্তান্তর করা হয়েছে এবং ৫০০ একর জমিতে প্রথম ধাপের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে– যা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়া, দ্বিতীয় ধাপে আরও ৫০০ একর জমি উন্নয়নের জন্য নতুন প্রকল্প শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন গত মাসে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বর্তমানে তারা অগ্রাধিকারমূলক অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর বাছাইকৃত তালিকায় গুরুত্ব দিচ্ছেন– যা শিল্প উন্নয়নকে তরান্বিত করবে।

ওই তালিকার মধ্যে রয়েছে— জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল।

চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “আমাদের প্রতিশ্রুতি হলো, আমরা এই জোনগুলোতে আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং ইউটিলিটি পরিষেবা, যেমন— পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস এবং সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করবো। এর মাধ্যমে, আমরা ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সমর্থ হবো এবং এতে করে ২,৩৮,০০০ এরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করি।”

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com