বিদেশে যাওয়ার সময় অনেকেই ভাবেন, ভিসা পেয়ে গেলেই সব শেষ, এখন শুধু ফ্লাইট ধরে গন্তব্যে পৌঁছানোই বাকি! কিন্তু বাস্তবতা হলো—ইমিগ্রেশন পেরিয়ে না গেলে আপনার যাত্রা অসম্পূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ইমিগ্রেশন অফিসগুলো বেশ কঠোর হয়েছে, বিশেষ করে যারা ট্যুরিস্ট ভিসায় ভ্রমণ করতে চান, তাদের জন্য বাড়তি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আমার অভিজ্ঞতা – ইমিগ্রেশনে কী ঘটেছিল?
বিদেশে যাওয়ার সময় আমি নিজেই বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। তাই এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি, যাতে অন্যরা আগে থেকে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারেন।
প্রথম ধাপ: বোর্ডিং পাস নেওয়ার সময় কঠোর যাচাই-বাছাই

বোর্ডিং পাস নিতে গেলে সাধারণত কয়েক মিনিট সময় লাগে, কিন্তু এবার ১০-১৫ মিনিট ধরে নানা প্রশ্ন করা হলো।
কি কি প্রশ্ন করা হতে পারে?

আপনি এর আগে কোন দেশে গেছেন?

কবে গেছেন, কতদিন ছিলেন, কখন ফিরেছেন?

আপনার বর্তমান ভ্রমণের উদ্দেশ্য কী?

আমি সব প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিলাম, তারপর তারা বোর্ডিং পাস দিলো।

পরে আমি জানতে চাইলাম, এত প্রশ্ন কেন করা হলো?

তারা জানালেন—উপরের নির্দেশ অনুযায়ী, এখন প্রত্যেক যাত্রীর তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় ধাপ: ইমিগ্রেশনে আরও কঠোর পরীক্ষা

বোর্ডিং পাস পাওয়ার পর ইমিগ্রেশন কাউন্টারে গেলে অফিসার আমাদের আরেকজন কর্মকর্তার কাছে পাঠালেন।

সেখানে আরও বিস্তারিতভাবে যাচাই-বাছাই শুরু হলো।

আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে?

আপনি কোথায় যাচ্ছেন এবং কেন যাচ্ছেন?

আপনার ট্যুর প্ল্যান কী? (হোটেল বুকিং, ফ্লাইট রিটার্ন টিকেট, পরিকল্পনা ইত্যাদি)

ব্যাংকের লেনদেন কেমন? (তারা স্টেটমেন্ট দেখতে চাইতে পারে)

এই প্রক্রিয়া ৩০-৪০ মিনিট পর্যন্ত সময় নিতে পারে।

সবকিছু ঠিক থাকলে তবেই অনুমতি দেওয়া হয়।
বিদেশে যেতে হলে কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন?

ব্যাংকে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স রাখুন – সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য ১-৩ লাখ টাকা ব্যালেন্স থাকা ভালো।

ব্যাংক স্টেটমেন্ট আপডেট রাখুন – ইমিগ্রেশন চাইলে লেনদেনের তথ্য দেখাতে হবে।

ফ্লাইট টিকেট ও হোটেল বুকিং প্রস্তুত রাখুন – আপনার যাত্রার বিস্তারিত তথ্য জানা থাকা জরুরি।

যাত্রার কারণ স্পষ্টভাবে জানুন – কাজে যাচ্ছেন নাকি ঘুরতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে সন্দেহ থাকলে সমস্যা হতে পারে।

প্রয়োজনে সাপোর্টিং ডকুমেন্টস সঙ্গে রাখুন – যেমন চাকরির প্রমাণপত্র, ব্যবসার কাগজ, ইনকাম রিপোর্ট ইত্যাদি।
কেন ইমিগ্রেশন এত কঠোর হয়েছে?

অনেক ট্যুরিস্ট ভিসাধারী বিদেশে গিয়ে অবৈধভাবে থেকে যান, তাই এখন কঠোরতা বাড়ানো হয়েছে।

মানুষ পাচার ও ভিসা অপব্যবহারের ঘটনা বেড়ে গেছে, তাই এখন যাচাই-বাছাই অনেক বেশি হচ্ছে।

অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন দেশ ইমিগ্রেশন নীতিতে কঠোরতা এনেছে।
আপনার ভিসা থাকলেও ইমিগ্রেশন পার হওয়া বাধ্যতামূলক। তাই যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে।
অনেকে ভিসা পেয়েও ইমিগ্রেশনে আটকে যান, শুধু মাত্র সঠিক তথ্য দিতে না পারার কারণে!
যারা বিদেশে যেতে চান, তারা যেন প্রস্তুতি নিয়ে যান, যাতে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা না হয়। ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিলে আপনাকে ফিরিয়ে দেওয়া হতে পারে।
Like this:
Like Loading...