1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
বিটিভির মাহফুজা ৪০০ কোটি টাকার মালিক
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৪:২৬ অপরাহ্ন

বিটিভির মাহফুজা ৪০০ কোটি টাকার মালিক

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪
দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) সাবেক জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) মাহফুজা আক্তারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। শিল্পী, কলাকুশলী, ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ, সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ ও অনুষ্ঠান না বানিয়েই বিলের কোটি টাকা তুলে নিয়ে সাড়ে ১৫ বছরে দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি।সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক সুজিত রায় গত বছরের ৭ মার্চ সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে একটি অভিযোগ জমা দেন। দুদক অভিযোগটি গ্রহণ করে বিভাগীয় তদন্তের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একই বছরের ১৯ মার্চ সংগীত শিল্পী অসিত রঞ্জন বিশ্বাস এবং শিল্পী সমাজের পক্ষে সংগীত শিল্পী রুবেল মিয়া মহাপরিচালক বরাবর বিভিন্ন অভিযোগ দেন। এ ছাড়া মাহফুজা আক্তারের বিরুদ্ধে ১৩২ পৃষ্ঠার বিস্তারিত একটি অভিযোগ দুদকে জমা হয়। অভিযোগ যাচাই ও দুদকের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিটের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অনীহা প্রকাশ করেন।অভিযোগে জানা গেছে, মাহফুজা আক্তার বিটিবির চট্টগ্রাম কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকাকালীন ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে অবৈধভাবে নিজেই ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে মোট ৬৩৯টি অনুষ্ঠান প্রযোজনা করেন। অসংখ্য অনুষ্ঠান নির্মাণ ও প্রচার না করে নির্মাণ দেখিয়ে মোট ৭৯ লাখ ৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া তিনি এক কোডের টাকা আরেক কোডে ব্যবহার দেখিয়ে ১ কোটি ২৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি পিপিআর-এর নিয়ম ভেঙে, কোনো টেন্ডার আহ্বান না করে, দৈনিক ২-৩টি সরাসরি ক্রয় দেখিয়ে মাল না কিনেই টাকা আত্মসাৎ করেন। অন্যদিকে ২০২১-২২ অর্থ বছরেও পিপিআর-এর নিয়ম না মেনে দৈনিক ২৫ হাজার টাকা করে ক্রয় দেখিয়ে ৪৭ লাখ ৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। চট্টগ্রাম কেন্দ্রে যোগ দেওয়ার পরই বিভিন্ন ফার্নিচার এবং পর্দা ক্রয় দেখিয়ে ২১ লাখ ৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।গত ১২ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিটিভির সাবেক জিএম মাহফুজা আক্তারকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। সংস্থাটি বলছে, ২১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মধ্যে বিটিভির শিল্পী সম্মানী খাত থেকে তিন কর্মকর্তার যোগসাজশে ১৩ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম বলেন, দুদক নীতিমালার ভিত্তিতেই অনুসন্ধানপর্বে সম্পদ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য তার একটা বক্তব্য নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগটির তদন্ত চলছে। দুদক সূত্র জানায়, মাহফুজা আক্তার কানাডার টরন্টোয় বাংলা টাউনের ৮ নম্বর রোডে ৩ মিলিয়ন ডলার দিয়ে একটি বাড়ি কিনেছেন।

এ ছাড়া ঢাকা ও রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে প্রায় শত কোটি টাকার সম্পদ। এর মধ্যে রাজধানীর ভাটারায় আছে আট তলা একটি বাড়ি। গুলশান-নিকেতনে ৩ হাজার বর্গফুটের বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, রামপুরা-বনশ্রীতে প্রায় আড়াই হাজার বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট, রংপুরের মিস্ত্রিপাড়ায় সাত কাঠা জমিতে ছয় তলা বাড়ি, নিউ জুম্মাপাড়ায় আরও দুটি একই ধরনের বাড়ি, গঙ্গাচড়ার গজঘণ্টা এলাকায় একটি পেট্রল পাম্প ও কয়েক বিঘা জমি এবং দুটি দামি প্রাইভেট কার রয়েছে তার। জানা গেছে, মাহফুজা আক্তার ২০২২-২৩ অর্থবছরে অনুষ্ঠান নির্মাণের নামে বাজেটের অতিরিক্ত ১৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অনুমোদন না নিয়েই খরচের নামে আত্মসাৎ করেন।

সাপ্তাহিক ও ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ আদেশে মোহসীন সরদারের নামে নাটক নির্মাণ ও প্রচার দেখিয়ে ভুয়া শিল্পী সম্মানী বাজেট তৈরি করে ৯১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। ৩৪৩টি বড় বাজেটের বিল নিজেরাই পাস করিয়ে ৪৭ লাখ টাকা নামে-বেনামে তুলে আত্মসাৎ করেন। বিভিন্ন নাটকের প্রযোজক হয়ে ভুয়া নামে চেক ইস্যু করে ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া ‘জাইকা’র এইচডি প্রকল্পের পিডি হয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com