সান ফ্রান্সেসকোর কুখ্যাত অ্যালকাট্রাজ কারাগার সংস্কার করে পুনরায় চালুর নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিহাসে কুখ্যাত এই কারাগারটি তিনি ব্যবহার করতে চান সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধীদের সাজা দেওয়ার জন্য।
রোববার, ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বহু দিন ধরে হিংস্র, সহিংস অপরাধীদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। এসব অপরাধীর বেশির ভাগই চিহ্নিত অপরাধী, যারা বারবার যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এই ভয়ংকর অপরাধীদের সাজা দিতেই আইন, শৃঙ্খলা ও ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে পুনরায় চালু হবে অ্যালকাট্রাজ।’
ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘আজ আমি কারা অধিদপ্তর, বিচার বিভাগ, এফবিআই এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে নির্দেশ দিচ্ছি যেন তারা অ্যালকাট্রাজকে বড় পরিসরে সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে পুনরায় চালু করে।’ তাঁর মতে, এটি হবে এমন এক কারাগার, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়ংকর, হিংস্র ও দুর্ধর্ষ অপরাধীদের রাখা হবে।
বর্তমানে অ্যালকাট্রাজ একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, যা সানফ্রান্সিসকো গোল্ডেন গেট ব্রিজের কাছে অবস্থিত। একসময় এটি মার্কিন নৌবাহিনীর দুর্গ ছিল। বিশ শতকের শুরুতে এটিকে কারাগারে পরিণত করা হয়। ১৯৩০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ কারাগারটির নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং ফেডারেল বন্দীদের আনা শুরু হয়। পরে ১৯৬৩ সালে বন্ধ হয়ে যায় এটি। মূলত অতিরিক্ত খরচের কারণে কারাগারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ফেডারেল ব্যুরো অব প্রিজনের ওয়েবসাইটঅনুযায়ী, বিচ্ছিন্ন দ্বীপে অবস্থিত হওয়ায় এটি পরিচালনায় অন্য যেকোনো কারাগারের তুলনায় প্রায় তিনগুণ খরচ হতো।
এই কারাগারকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে সিনেমাও। বার্ডম্যান অব অ্যালকাট্রাজ, দ্য রকসহ জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলো এই কারাগারকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
সেই কারাগারকে নতুন করে চালুর করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন ডেমোক্র্যাটরা। ডেমোক্র্যাট নেতা ও ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেস সদস্য ন্যান্সি পেলোসির মতে, অ্যালকাট্রাজকে পুনরায় চালুর নির্দেশ বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, ‘ছয় দশকেরও বেশি সময় আগে বন্ধ করা হয়েছে অ্যালকাট্রাজকে। এখন এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এই সময়ে এসে প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবটা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ভেনেজুয়েলানদের কুখ্যাত গ্যাং ত্রেন দে আরাগুয়ার সদস্য আখ্যা দিয়ে এল সালভাদরের কারাগারে পাঠানোকে কেন্দ্র করে আদালতের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, আইনগত জটিলতা এড়াতেই নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।