হিন্দুদের একটি উৎসব দোলযাত্রা। দোলযাত্রার সাথে আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে জড়িত; আর তা হলো হোলি উৎসব। এই উৎসবকে বসন্ত উৎসবও বলা হয়। প্রচলিত বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ফাগুন মাসের ১৪তম রাতের পরের দিন পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। হোলির আগের দিন অবশ্য শ্রীকৃষ্ণের পূজা করা হয়। তখন শুকনো রং ছড়ানো হয়। হোলি উৎসবটি বর্তমানে শুধু আর হিন্দুদের দোলাযাত্রা সাথে জড়িত উৎসব হিসেবে সীমাবদ্ধ নেই। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব বাঙালিদের উৎসব হয়ে উঠেছে হোলি খেলা। এই উৎসবের মাধ্যমে যেন রঙিন হয়ে ওঠে সবার বাঙালিয়ানা। বিদেশীরাও বর্তমানে যোগ দেয় বাংলাদেশের হোলি উৎসবে।
এই উৎসবের তাৎপর্য হলো অন্যের প্রতি নিজের ভালবাসা প্রকাশ করা। মিষ্টি মুখ করিয়ে সম্পর্কে বাঁধনটিকে আরও শক্ত করে তোলা। প্রিয় মানুষদের নতুন নতুন উপহার প্রদান করে তাদেরকে আনন্দিত করে তোলা। হিন্দু ধর্মের রীতি অনুসারে এই দিন বিবাহিত মেয়ে ও তার জামাইকে নতুন জামা কাপড় দিতে হয়। দিনব্যাপী চলে রঙ মাখামাখি। দোলাযাত্রা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মবলম্বীরা পরস্পরকে আবির মাখিয়ে উৎসবটি পালন করে থাকে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দুদের এই উৎসব এখন সব ধর্মের বাঙালিদের একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার, সুতারনগর, গোয়ালনগর, রায়সাহেব বাজার, ঝুলবাড়ি শাঁখারিবাজার এলাকায় বড় আকারে এই উৎসব পালন করা হয়। এই উৎসবের সময় পুরো ঢাকার তরুণ-তরুণীরা পুরান ঢাকায় জড়ো হয়ে নানা রঙে রঙিন হয়ে ওঠেন।
হোলি খেলা উপলক্ষে বিশাল আয়োজন থাকে পুরান ঢাকায়। নানা রঙের রং, গুলাল, ওয়াটার গান, শুকনো রং পাওয়া যায় নানা দোকানগুলোতে। উৎসব উপলক্ষে অন্য দোকানগুলো বন্ধ করে রাখা হয়। পুরান ঢাকার এই হোলি উৎসব বর্তমানে পুরান ঢাকা বিভিন্ন উৎসবগুলো একটি বিশেষ উৎসব হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠছে।