শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

বাংলাদেশের এমন পাঁচটি স্থান যেগুলো সত্যিকার অর্থেই বিদেশকেও হার মানায়!

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ২০২১

ঘুরে বেড়াতে আমাদের কার না ভাল লাগে? আর সেই ভ্রমণটা যদি হয় বিদেশে তাহলে তো কথাই নেই, তাইনা? কিন্তু বিদেশ ভ্রমণের প্রবল ইচ্ছে থাকলেও সামর্থ্যের অভাবে হয়তো আমাদের অনেকেরই আর বাইরের দেশে ঘুরতে যাওয়া হয়না।

শীতের ছুটিতে কিংবা সেমিস্টার ব্রেকে আমাদের অনেক বন্ধুরা যখন বিদেশে ঘুরে বেড়ায়, তখন মন খারাপ করে বসে থেকে তাদের ফেসবুকে দেয়া ছবিগুলোতে লাইক দিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের করার আর কিছুই থাকেনা।

শেষ শীতের ছুটিতে যখন আমিও এরকম মন খারাপ করে বসে থেকে আমার বিদেশ ভ্রমণে ব্যস্ত বন্ধুদের ছবিতে লাইক দিয়ে যাচ্ছি ঠিক তখন এই লাখ টাকার প্রশ্নটা আমার মাথায় এলো। আমাদের দেশে কি ঘুরতে যাবার মত কোন জায়গা নেই যেটি কিনা বিদেশকে হার মানায়?

দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কি এতটাই অসুন্দর যে এখানে মন ভাল করে দেবার মতন সুন্দর কোন জায়গা নেই?

দারুণ সব লেখা পড়তে ও নানা বিষয় সম্পর্কে জানতে ঘুরে এসো আমাদের ব্লগের নতুন পেইজ থেকে!

প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে আমি বাংলাদেশের চমৎকার যে জায়গাগুলো খুঁজে পেয়েছি সে জায়গাগুলোর ছোট্ট করে বর্ণনা তো তোমাদের সামনে তুলে ধরাই যায়! চলো দেখে আসি বাংলাদেশের এমন পাঁচটি স্থান যেগুলো সত্যিকার অর্থেই বিদেশকেও হার মানায়!

১. সাজেক ভ্যালি

ছোট বয়সে আমাদের জীবনের ব্যস্ততা অনেক কম থাকে। বিশাল এই দুনিয়া নিয়ে অনেক রকমের চিন্তা শিশুদের মনে ঘুরপাক খায়। সুনসান দুপুরবেলায় সবাই যখন ভাতঘুমের কোলে লুটিয়ে থাকে, বাড়ির ছোট্ট শিশুটি হয়তো তখন আকাশের পানে তাকিয়ে ভাবে, ইশ, যদি দূরের ঐ মেঘকে একবার ছুঁয়ে দেয়া যেতো!

প্রেজেন্টেশন দিতে গেলে প্রায়ই আমরা নার্ভাস হয়ে পড়ি, তারপর জঘন্য প্রেজেন্টেশন দিয়ে ডিপ্রেশনে ভুগি। এ সমস্যার সমাধানের জন্যে রয়েছে দারুণ কিছু বুদ্ধি!
আরও জানতে নিজেই ঘুরে এসো ১০ মিনিট স্কুলের এক্সক্লুসিভ এই প্লে-লিস্টটি থেকে।

ছোটবেলার এই মেঘ ছুঁয়ে দেয়ার স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলতে সাজেক ভ্যালির জুড়ি নেই। দূর সীমানায় সবুজ পাহাড় যেন নীল আকাশের সখা! সাপের মত পেঁচানো রাস্তা বেয়ে রোমাঞ্চকর এক যাত্রার পরেই দেখা মেলে সাজেক ভ্যালির।

আন্তরিক পাহাড়ি মানুষদের সাহচর্য আর সেনাবাহিনীর নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় সাজেক ভ্যালি যেকোন মানুষের ভ্রমণ তালিকার প্রথম দিকেই থাকবে!

২. হিমছড়ি

ব্যক্তিগতভাবে এই জায়গাটি আমার খুব পছন্দের। আমার মনে হয় প্রতিটা জায়গারই একটা পারফেক্ট মোমেন্ট থাকে যে সময়টায় ওই জায়গাটাকে সবচাইতে ভাল লাগে। আমি যেদিন প্রথম হিমছড়ির চূড়ায় উঠি তখন ঠিক বেলা আড়াইটা। সূর্য তখন হালকা পশ্চিমে হেলে পড়েছে, তবে তার তেজ কমেনি একটুও।

সিঁড়ি বেয়ে চূড়ায় উঠে শান্ত হয়ে যখন আমি সমুদ্রের দিকে তাকালাম, এক অসম্ভব রকমের ভালোলাগায় মনটা ভরে গেলো! দুপুরের সূর্যের তীব্র আলো যেন ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মাহুতি দিচ্ছে সাগরের জলের মাঝে! আর সেই আলোর প্রতিফলনে মনে হচ্ছে যেন হাজার হাজার রূপোর দানা ঝিকিমিকি করছে সমুদ্রের বুকে!

এই সৌন্দর্যে চোখ ধাঁধিয়ে যেতেই উলটো ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখি জগতের সব সুখ যেন সবুজ হয়ে গা এলিয়ে দিয়েছে পাহাড়ের উপর! সাগর আর পাহাড়ের এই মনমাতানো মিতালির খোঁজ আসলেই এক জীবনে খুব কমই পাওয়া যায়!

৩. রাতারগুল

bhromon, enjoyment, life tips, travel hacks, travel places, travel tips, travelling
সহজ ভাষায় বলতে গেলে রাতারগুল হলো একটি বাদাবন বা ‘সোয়াম্প ফরেস্ট’। সারাবছর পানির নিচে ডুবে থাকা এই বাদাবনের সৌন্দর্য অতুলনীয়। নৌকা বেয়ে যাওয়ার সময় মাথার ওপরে শত শত গাছ যেন ছায়া দিয়ে মমতার হাত বাড়িয়ে দেয় আমাদের দিকে।

সবুজাভ জলের মায়ায় আটকে যেয়ে মন আর এখান থেকে ফিরে আসতে চায়না। নৌকোর বৈঠার জল কেটে যাওয়া দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই মনে প্রশ্ন জাগে, জীবন কেন এতটা সুন্দর?

৪. সুন্দরবন

পৃথিবীর সবচাইতে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আর রয়েল বেঙ্গল টাইগারের একমাত্র আবাসভূমি হলো আমাদের সুন্দরবন। সুন্দরবনের আসল সৌন্দর্য এর নির্জনতায়। জালের মত ছড়িয়ে থাকা সরু খালের মাঝ দিয়ে নৌকো বেয়ে যাওয়ার সময় নিশ্চুপ প্রকৃতি মনের মাঝে অন্যরকম এক ভালোলাগা এনে দেয়।

সেই নির্জনতাকে চিরে দিয়ে হঠাৎ করেই হয়তো ডেকে ওঠে একাকী কোন পাখি, ঝোঁপের আড়াল থেকে মাথা তুলে নিষ্পাপ আর মায়াময় চোখে উঁকি দেয় হরিণের দল। মনের উপর বেশ বড় রকমের প্রভাব ফেলে সুন্দরবনের এই নিশ্চুপ পরিবেশ। আমরা যারা নিয়মিত কোলাহলের মাঝে থেকে অভ্যস্ত, তারা এই নির্জনতার প্রেমে পড়ে যাই সহজেই!

আমাদের জীবনে আমরা প্রায় সময়েই খুব বিষণ্ণতায় ভুগি, যার উৎপত্তি হতে পারে বিভিন্ন বিষয় থেকে। আর এই বিষণ্ণতা থেকে মুক্তির জন্যে ঝটপট ঘুরে এসো ১০ মিনিট স্কুলের এই এক্সক্লুসিভ প্লে-লিস্ট থেকে!
৫. সেন্ট মার্টিন

সেন্ট মার্টিন এতটাই চমৎকার একটি জায়গা যে, এখান থেকে ঘুরে এসেছে কিন্তু এখানকার প্রেমে পড়ে আবারো ফিরে যায়নি এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। সুন্দর আর ছোট্ট এই দ্বীপটি কোরাল রিফ দিয়ে ঘেরা থাকায় খুব সহজেই পর্যটকদের নজর কাড়ে। টলটলে নীল জল সেন্ট মার্টিনের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে! সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা নারিকেল গাছগুলো আমাদের ভালোলাগার সাক্ষী হয়েই দাঁড়িয়ে থাকে যুগের পর যুগ!

আসছে ছুটিতে তোমার যেসব বন্ধুরা বিদেশে বেড়াতে যাবে, তাদের ছবিতে মন খারাপ করে লাইক দেয়া বাদ দিয়ে এবার তোমার পালা এই জায়গাগুলো ঘুরে আসার। অপার সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ আমাদের এই দেশে আসলেই চমৎকার জায়গার অভাব নেই।

কবি বলেছিলেন, “দেখা হয়নাই চক্ষু মেলিয়া/ ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া।” তুমি কি প্রস্তুত এই অদেখাকে দেখে ফেলতে?

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com