শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশেও কেন এত জনপ্রিয় বিটিএস

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩

১০ পেরিয়ে আজ ১১ বছরে পা দিয়েছে বিটিএস। এক দশকের পথচলায় নিজেদের ‘বিটিএসের গানে নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। বিটিএসের গানে জেনেছি, ভালো–মন্দ মিলিয়েই জীবন। নিজের দুঃসহ স্মৃতিকে ঝেড়ে ফেলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, নিজেকে ভালোবাসতে হবে,’ বলছিলেন ঢাকার মেয়ে ফারিহা তাবাসসুম।

২০১৭ সালে প্রথম বিটিএসের নাম শুনেছেন ফারিহা, তখন তিনি ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়তেন। সেই বছর বিলবোর্ড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের টপ সোশ্যাল আর্টিস্ট হিসেবে টানা ছয়বার পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী জাস্টিন বিবারকে হটিয়েছিল বিটিএস; এরপর টানা পাঁচ বছর পুরস্কারটি নিজেদের দখলে রেখেছে তারা।

একই বছর প্রকাশিত বিটিএসের গান ‘স্প্রিং ডে’ বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলে। পরের বছর ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে নিজেকে ভালোবাসার মন্ত্র ছড়িয়েছিলেন বিটিএসের দলনেতা আরএম। এর আগে আগস্টে প্রকাশিত হয় বিটিএসের অ্যালবাম ‘লাভ ইউরসেলফ: আনসার’। সেই সময় আরএমের ভাষণ আর গানের কথা মিলেমিশে কিশোরমনে আলোড়ন তুলেছিল।

বিটিএস
বিটিএসছবি: উইভার্স

মাগুরার মেয়ে লামিয়া সিলভী হাসান বলছিলেন, ‘গানে টিনএজারদের ইতিবাচক বার্তা দেয় বিটিএস। তারা বলে, নিজেকে ভালোবাসো, তারপর পৃথিবীকে ভালোবাসো। এটা কোথাও বোঝানো হয় না, ওরা গানের মাধ্যমে সুন্দর করে তুলে ধরে।’

ইতিবাচক বার্তার পাশাপাশি গানের ভিডিওতে সাবলীল নৃত্য; আরএম, জিমিনদের সাধারণ জীবনধারা ও বিভিন্ন ধরনের দাতব্য কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হওয়ার কথা বলেছেন বিটিএসের গানের শ্রোতারা, যাঁরা বিটিএস আর্মি নামে পরিচিত।

গ্র্যামির মঞ্চে পরিবেশনা নিয়ে আসে বিটিএস
গ্র্যামির মঞ্চে পরিবেশনা নিয়ে আসে বিটিএসছবি: রয়টার্স

২০১৫ সালে ‘বিটিএস আর্মি অব বাংলাদেশ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ চালু করা হয়। বাংলাদেশে নিয়মিত যাঁরা বিটিএসের গান শোনেন, তাঁরা এই গ্রুপে ঢুঁ মারেন। একই নামে একটি পেজও রয়েছে। সেই গ্রুপের অ্যাডমিন সানজিদা নাসরিন বলেন, ‘অনেক ছোট একটি জায়গা থেকে উঠে এসেছে বিটিএস, ওদের কোম্পানিটাও ছিল ছোট।নিজেরা চেষ্টা করে এত দূর এসেছে। যাঁরা স্ট্রাগল করেন, তাঁদের জন্য এটা অনেক ইন্সপায়ারিং। ব্যান্ডের সদস্যরা খুব সাধারণভাবে নিজেদের উপস্থাপন করেন।’

তাঁর জীবনযাপনেও বিটিএস ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বলে জানান সানজিদা। তাঁর ভাষ্য, ‘আমি নিজেকে ভালোবাসি, সব সময় নিজেকে প্রায়োরিটি দিই।’ এখন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন সানজিদা নাসরিন। বিটিএসের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্কুলশিক্ষার্থীদের ব্যাগ দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছে ‘বিটিএস আর্মি অব বাংলাদেশ।’

গানের বাইরে ব্যান্ডের সদস্য আরএম নিয়মিত বই পড়েন, ভি ড্রামা দেখেন। নিজেদের পছন্দের বই ও ড্রামা নিয়ে ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে পোস্ট করেন, এতে বিটিএসের অনুসারীরা পড়াশোনায় উৎসাহিত হন।

জাংকুক রামিয়ান (এক ধরনের নুডুলস) খেতে পছন্দ করেন, তাঁকে অনুসরণ করে বিটিএস আর্মিদের কেউ কেউ রামিয়ান খান। বিটিএস আর্মি ফাতেমা তুজ জোহরা জানান, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে চপস্টিক, রামিয়ান, বিটিএসের মাস্ক আনিয়েছেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ফাতেমা ছয় বছর ধরে বিটিএসের গান শুনছেন।

জাতিসংঘে বিটিএস
জাতিসংঘে বিটিএসছবি: উইভার্স

বিটিএসের বেশির ভাগ গান কোরিয়ান ভাষায়, শুরুর দিকে বিটিএসের গানে কোনো সাবটাইটেল থাকত না বলে জানান ফারিহা তাবাসসুম। ভক্তদের অনেকেই গানের কথা অনুবাদ করে ভিডিও দিতেন, সেখান থেকেই গানের অর্থ উদ্ধার করতেন তিনি। এর ফাঁকে কোরিয়ান ভাষাটাও টুকটাক শিখে ফেলেছেন তিনি। ২০২০ সাল থেকে প্রতিটি গানে সাবটাইটেল দেওয়া শুরু করে বিটিএস।

২০২০ সালের বিটিএসের ইংরেজি গান ‘ডায়নামাইট’ বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, গানটি বিলবোর্ড টপে ছিল টানা ১০ সপ্তাহ। মাঝে করোনাভাইরাসের মধ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মানুষও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় দিতে থাকেন। সেই সময় টিকটকে ভাইরাল হয় বিটিএসের গান ‘বাটার’, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ব্যান্ডটির গান ছড়িয়ে পড়ে।

কাতার বিশ্বকাপে জাংকুক ‘ড্রিমারস’ পরিবেশনের পর বাংলাদেশের শহর ছাড়িয়ে গ্রামগঞ্জেও পৌঁছে যায় বিটিএসের নাম।

বিটিএস সদস্যরা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com