ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেকোনো বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশিরা এত দিন চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়ার সুযোগ পেতেন না। এই প্রথমবারের মতো সেই সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

এ নিয়ে জানতে চাইলে নেদারল্যান্ডসের পাশাপাশি বসনিয়া হার্জেগোভিনায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ‘ইউরোপের একটি মানসম্পন্ন চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে এক বছর ধরে চেষ্টা চলছিল। সম্প্রতি সারায়েভো সফরের সময় ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট সারায়েভোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর তারা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য তৈরি থাকার কথা জানিয়েছেন। আশা করছি, সেপ্টেম্বর থেকে যে সেশন শুরু হবে, তাতে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।’
ইংরেজিতে পড়ানো হয় এবং ওই প্রতিষ্ঠানের সনদ পুরো ইউরোপে স্বীকৃত, এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি খরচ কম এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খোঁজ করা হচ্ছিল। এভাবেই খুঁজতে গিয়ে ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট সারায়েভোর খোঁজ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশে এই প্রতিষ্ঠানটি তো তেমন পরিচিত নয়। এরপরও কেন এটিকে বেছে নেওয়া হলো, জানতে চাইলে রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ‘আমার উদ্দেশ্য ছিল দুটি। প্রথমত, ভালো মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করা, যেখানে ইংরেজিতে পড়ানো হয় এবং যার সার্টিফিকেট গোটা ইউরোপে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই গ্রহণ করা হয়। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনাটা ব্যয়বহুল। এটি যাতে কম খরচে করা যায়, সেটিও দেখা হয়েছে। ইস্ট সারায়েভো বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট গোটা ইউরোপে স্বীকৃত।
একইসঙ্গে এখানকার মেডিকেল শিক্ষার্থীদের এক বা দুই সেমিস্টার ইটালি বা স্পেনের অ্যাফিলিয়েটেড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হয়। এখানে পাঁচ বছরের পড়াশোনা এবং এক বছরের ইন্টার্নসহ ছয় বছরের মোট টিউশন ফি ৩৭ হাজার ইউরো (প্রায় ৩৭ লাখ টাকা), যা বাংলাদেশের মানদণ্ডে অত্যন্ত সুলভ।’
রাষ্ট্রদূত জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টি সরকারি বলে পড়াশোনার খরচ কম। তা ছাড়া বসনিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, সেটিরও বহিঃপ্রকাশ এর মাধ্যমে ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, নব্বইয়ের দশকে বসনিয়ায় যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী সেখানে নিয়োজিত ছিল।