আন্তর্জাতিক পরিব্রাজকরা এশিয়ার যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করে থাকেন সেগুলোর মধ্যে থাইল্যান্ড অন্যতম। শুধু শত বছরের ঐতিহ্য আর ভুবন ভোলানো প্রাকৃতিক নৈসর্গই নয়, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সর্বত্রে ছড়িয়ে আছে এক অফুরন্ত প্রাণের ছোয়া।
আদিম সৈকত থেকে এক প্রশান্তিদায়ক পর্বত চূড়া, অত্যাধুনিক উদ্যান থেকে জনাকীর্ণ বাজার সবটাজুড়ে যেন আতিথেয়তা। এরই মাঝে সারা বিশ্বে এক টুকরো থাইল্যান্ডকে সগৌরবে তুলে ধরে চলেছে পর্যটনকেন্দ্র পাতায়া।
এখন থাইল্যান্ড ঘুরতে যাওয়ার প্রসঙ্গ এলে অকপটেই চলে আসে দর্শনীয় স্থানটির নাম। চলুন, কোরাল দ্বীপটিতে ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক।
পাতায়ার অবস্থান ও বিশেষত্ব
থাইল্যান্ড উপসাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত দেশের অষ্টম বৃহত্তম শহর পাতায়া। রাজধানী ব্যাংককের প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এর অবস্থান। পাতায়া বে এশিয়ার বৃহত্তম সৈকত রিসোর্টগুলোর মধ্যে একটি এবং ব্যাংককের পরে থাইল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বাধিক দর্শনীয় শহর।
পাতায়ার নামকরণের ইতিহাস
১৭৬৭ সালে রাজা ফ্রায়া তাক (পরবর্তীতে যিনি তাক্সিন নামেই বেশি পরিচিতি পেয়েছেন) তার সেনাবাহিনী নিয়ে আয়ুথায়া থেকে চান্থাবুরি পর্যন্ত অগ্রসর হন। এটি বার্মিজ আক্রমণকারীদের কাছে পূর্বের রাজধানী পতনের আগের ঘটনা।
বর্তমানে যেখানে পাতায়া সেই স্থানে ফ্রায়া তাকের সেনারা নাই ক্লোম নামে একজন স্থানীয় নেতা ও তার সৈন্যদের মুখোমুখি হয়। প্রথম দিকে আক্রমণাত্মক হলেও ক্লোম ফ্রায়া তাকের নেতৃত্ব এবং তার সেনাবাহিনীর মধ্যে কঠোর শৃঙ্খলা দেখে মুগ্ধ হন। অতঃপর তিনি বিনা লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করে সদলবলে ফ্রায়া তাক বাহিনীতে যোগ দেন।
এই স্থানটি পরে পরিচিতি পায় থাপ ফ্রায়া নামে, যার অর্থ ফ্রায়ার সেনাবাহিনী। থাপ ফ্রায়াকে পরে পাতায়ায় পরিবর্তন করা হয়, যার অর্থ বর্ষার শুরুতে দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে প্রবাহিত বাতাস।
পাতায়ার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো
নং নুচ বোটানিক্যাল গার্ডেন
থাইল্যান্ডের চনবুরি প্রদেশের ২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই পর্যটনকেন্দ্রটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম বোটানিক্যাল গার্ডেন। পুরো গার্ডেনটি কতগুলো ছোট ছোট গার্ডেনে বিভক্ত।
প্রবেশের মুখেই রয়েছে ক্যাক্টাস গার্ডেন, যেখানে একটি লম্বা কাঁচের ঘরে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাক্টাসের। দ্যা গার্ডেন ইন দ্যা স্কাইয়ে গেলে দেখা যাবে মাটি থেকে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে এবং ছাদ থেকে ঝুলে রয়েছে বিভিন্ন জাতের উদ্ভিদ। ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাগানটি ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে একটি লিফট বা স্কাইওয়াক।
নং নুচে আছে দুটি ফরাসি বাগান, যেগুলো তৈরি হয়েছে ফ্রান্সের ভার্সাই বাগানের আদলে। ফ্রেঞ্চ গার্ডেন-২-এর পাশেই রয়েছে ডাইনোসর ভ্যালী, যেখানে পরিচিত হওয়া যাবে ১৮০ টিরও বেশি ডাইনোসরের প্রতিলিপির সঙ্গে।
ইতালীয় বাগানে পুরোটাই বিভিন্ন ইতালীয় মার্বেল মূর্তিতে পরিপূর্ণ। স্টোনহেঞ্জের প্রতিরূপ দিয়ে বানানো হয়েছে স্টোনহেঞ্জ গার্ডেন। নং নুচের পূর্বদিকে রয়েছে দুটি হ্রদ, যেখানে দেখা যাবে আমাজন নদীর বিশেষ ধরনের মাছ অ্যারাপাইমাস গিগাস। পুরো বাগান ঘুরে দেখার পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য রয়েছে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, মার্শাল আর্ট এবং হাতির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। এমনকি এখানে থাকার জন্য আছে বেশ কিছু রিসোর্ট ও ভিলা এবং খাওয়া-দাওয়ার জন্য আছে রেস্তোরাঁও।
প্রাপ্তবয়স্ক বিদেশি পর্যটকদের জন্য নং নুচে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬০০ থাই বাত বা ২ হাজার ৮১ টাকা (১ থাই বাত = ৩ দশমিক ৪৭ বাংলাদেশি টাকা)।
পাতায়া সমুদ্র সৈকত
শহরের কেন্দ্রের সমান্তরালে অবস্থিত এই সৈকতটি শহরের সব থেকে নান্দনিক স্থান। উপকূলকে একপাশে রেখে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রায় ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকত। দক্ষিণে সৈকতের সীমান্তে রয়েছে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান ওয়াকিং স্ট্রিট।
উত্তর সৈকত দক্ষিণের তুলনায় সাধারণত একটু শান্ত থাকে। সারিবদ্ধ পাম গাছের এই অত্যাশ্চর্য সমুদ্র সৈকতটি সূর্যস্নান ও সাঁতারের জন্য বিখ্যাত।
পাতায়ার সবচেয়ে বিখ্যাত নাইটলাইফ হাব। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সৈকতের লাগোয়া ওয়াকিং স্ট্রীট ভরে ওঠে নিয়ন আলো, জমজমাট বার এবং পথশিল্পীদের কলাকৌশলে।
ফ্রা তাম্নাক পাহাড়
পাতায়া সৈকত এবং পাতায়ার দক্ষিণ দিকে জোমতিয়েন সৈকতের মাঝে অবস্থিত এই পাহাড়টি পর্বতপ্রেমিদের প্রিয় গন্তব্য। পাহাড়ে অবস্থিত চালোম ফ্রাকিয়াত পার্ক থেকে পাখির চোখে আশপাশের বিস্ময়কর দৃশ্যের পর্যবেক্ষণ করা যায়।
এই পাহাড়ের রয়েছে ওয়াত ফ্রা ইয়াই মন্দির, যার কারণে পর্বতটিকে বিগ বুদ্ধ হিলও বলা হয়ে থাকে। এই বৃহদাকার বুদ্ধের স্বর্ণ মূর্তিটি গোটা পাতায়ার ল্যান্ডস্কেপগুলোর একটি। এটি পাতায়া শহরের সর্বোচ্চ স্থান, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যার উচ্চতা ৯৮ মিটার। পাহাড়ের উত্তর প্রান্ত দিয়ে নিচেই রয়েছে শহরের জনপ্রিয় ওয়াকিং স্ট্রীট এবং ফেরি ঘাট বালি হাই পিয়ার।
পাতায়া আন্ডারওয়াটার ওয়ার্ল্ড
সাগরে সাঁতার না কেটেও জলজ জগতকে খুব কাছে থেকে দেখার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে এই দৈত্যাকার অ্যাকোয়ারিয়ামটি। ১৫০ মিটার দীর্ঘ টানেল পরিদর্শনের সময় দেখা মিলবে প্রায় ২০০-এর অধিক প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণীর। বিশাল শঙ্কর মাছ থেকে শুরু করে হাঙ্গর পর্যন্ত প্রাণীগুলো দর্শনার্থীদের ঘিরে তাদের রাজকীয় উপস্থিতি জানান দিতে থাকে।
স্যাঙ্কচুয়ারি অফ ট্রুথ
এই জাদুঘরের অবকাঠামোটি মূলত মন্দির ও দুর্গের একটি সমন্বিত রূপ। স্থাপনাটি সম্পূর্ণভাবে কাঠের তৈরি।এর ভেতরের দর্শনীয় প্রতিটি বস্তুই কাঠের তৈরি। এই কাঠগুলো শত শত বছরের পুরনো। ধারণা করা হয় সবচেয়ে প্রাচীনতম তাকিয়েন কাঠের বয়স প্রায় ৬০০ বছর।
জাদুঘর পরিদর্শনের পাশাপাশি এখানে থাই বোট রাইড, হাতির পিঠে চড়া, ঘোড়ার পিঠে বা ঘোড়া গাড়িতে চড়া, স্পিডবোট রাইড এবং থাই পোশাক ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
পাতায়ার বিখ্যাত যত উৎসব
থাইল্যান্ডের অনন্য প্রথা ও ঐতিহ্যের সিংহভাগই রয়েছে পাতায়াতে। বিশেষ করে এখানকার স্থানীয় উৎসবগুলো শত বছরের পুরনো; সেই সঙ্গে বিশ্ব পরিব্রাজকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
প্রথমেই বলা যেতে পারে জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির শুরু পর্যন্ত হওয়া চাইনিজ নববর্ষ অথবা বসন্ত উৎসবের কথা। এ সময় দেখা যায় পাতায়ার বৃহৎ থাই-চীনা সম্প্রদায়ের ড্রাগন প্যারেড, সিংহ নাচ ও আতশবাজি।
স্থানীয়ভাবে ওয়ান লাই নামে পরিচিত পাতায়া সোংক্রান উৎসব উদযাপন করা হয় প্রতি বছর এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে। এই উৎসবের প্রধান কার্যক্রমগুলো হলো জল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা, বাদ্যযন্ত্র পরিবেশন ও আতশবাজি।
থাই চন্দ্র ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ মাসের পূর্ণিমাতে উদযাপিত আলোকের উৎসবটি লোই ক্রাথং নামে পরিচিত। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবের সময়কাল সাধারণত নভেম্বর মাসে পড়ে। এ সময় ক্রাথং বা ভাঁজ করা কলা পাতার ওপর প্রজ্বলিত মোমবাতি যুক্ত করে সন্ধ্যার দিকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া রাতের আকাশে ফানুশও ওড়াতে দেখা যায়।
পাতায়া ভ্রমণের সেরা সময়
আবহাওয়া, উৎসব, এবং জল খেলার উপযুক্ত পরিবেশ সামগ্রিক বিচারে পাতায়া ঘুরে বেড়ানোর সেরা সময় হচ্ছে শীতকাল। সঙ্গত কারণেই নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারিতে থাকে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। সেই সঙ্গে থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় বিনোদন সেবার দামও থাকে আকাশচুম্বী।
তাই যারা সাশ্রয়ী মূল্যে পাতায়া ঘুরতে যেতে চান তাদের অফ পিক মৌসুমগুলো বেছে নিতে হবে। এ জন্য মে থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়টা উপযুক্ত হতে পারে। অল্প ভিড় এবং বাজেট ভ্রমণ সম্ভব হলেও এ সময় হাল্কা বা ভারী বৃষ্টির বিড়ম্বনা পোহাতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডের পাতায়া যাওয়ার উপায়
পাতায়া ভ্রমণ পরিকল্পনার সর্বপ্রথম পদক্ষেপ হলো থাইল্যান্ডের পর্যটন ভিসার জন্য আবেদন করা। ভ্রমণের ন্যূনতম ২ সপ্তাহ আগে থেকে এই আবেদন কার্যক্রম শুরু করা উচিত। আবেদন প্রক্রিয়াকরণে সময় লাগে সাধারণত ৭ কর্মদিবস এবং ভিসা ফি ৩ হাজার ৫০০ টাকা।
ঢাকা থেকে সরাসরি ব্যাংককের বিমান আছে, যে যাত্রায় সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়।
ঢাকা – ব্যাংকক রাউন্ড ট্রিপ বিমান ভাড়া নির্ভর করবে কিছু বিষয়ের উপর যেমন এয়ারলাইন্স কোম্পানি, বুকিংয়ের সময়, বিভিন্ন অফার, ইত্যাদি।
ব্যাংককের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে পাতায়া সড়কপথে প্রায় ১২০ কিলোমিটার। এ পথে সুখুমভিট রোড এবং মোটরওয়ে-৭ দিয়ে পাতায়ায় প্রবেশ করা যায়।
বাসে যেতে হলে ব্যাংককের উত্তর বাস টার্মিনাল বা মো চিত এবং পূর্বের একমাই থেকে বাস পাওয়া যাবে। এই বাসগুলো সুখুমভিট রোডের কাছে পাতায়া নুইয়ার (উত্তর পাতায়া রোড) প্রধান বাস স্টেশনে নামিয়ে দেয়।
ট্রেনে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংককের হুয়ালুমফং থেকে পাতায়া পর্যন্ত নিয়মিত রেলপথ পরিষেবা পাওয়া যায়। এছাড়া যাত্রার সময় আরও দ্রুততর করতে প্লেনে করেও পাতায়া যাওয়া যেতে পারে।
ভ্রমণকালে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা
পাতায়া ও জোমতিয়েন বীচসহ যেকোনো সৈকতের আশপাশের এলাকা এবং ওয়াকিং স্ট্রীটের আবাসিক হোটেলগুলো যথেষ্ট মান সম্পন্ন। তিন বেলা আহারের জন্য এগুলোর আশপাশে সাশ্রয়ী কিছু রেস্তোরাঁও রয়েছে। ফ্লোটিং মার্কেট খাবারের পাশাপাশি দর্শনীয় জায়গাও বটে।
পাতায়ায় ঘুরতে এলে যে খাবারটি সবাই চেখে দেখে সেটি হচ্ছে টম ইয়াম গোং। গোটা থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনপ্রিয় এই স্যূপটি মূলত চিংড়ি, মাশরুম,টমেটো,লেবু,গালাঙ্গাল ও কাফির চুন পাতার সংমিশ্রণ।
মশলাদার ও ক্রিমযুক্ত নারকেল দুধ,মুরগির মাংস বা তুলসী পাতাসহ নানা ধরনের সবজি দিয়ে বানানো গ্রিন কারি আরও একটি স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার।
নিরামিষ খাবারের মধ্যে সেরা হচ্ছে সোম ট্যাম, যেটি মিষ্টি, টক এবং মশলাদার স্বাদের মিশ্রণে এক ধরনের পেঁপে সালাদ। এটি পরিবেশন করা হয় সাধারণত চিনাবাদাম এবং শুকনো চিংড়ির সঙ্গে।
ভারী মিষ্টান্নের মধ্যে রয়েছে ম্যাঙ্গো স্টিকি রাইস, যেখানে মিষ্টি আমের টুকরো নারকেল দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়।
পরিশেষে সামুদ্রিক খাবারের কথা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না, যেখানে গ্রিল্ড স্কুইড বা শেলফিশে উদরপূর্তি না করলে পুরো ভ্রমণটাই অপূর্ণ থেকে যায়।
পাতায়া ভ্রমণের সম্ভাব্য খরচ
এখানকার আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকার জন্য প্রতিদিনের জন্য খরচ হতে পারে জনপ্রতি ৩৫৯ থেকে ৮৬৮ থাই বাত (১ হাজার ২৪৫ থেকে ৩ হাজার ১১ টাকা)।
শহরের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় যেতে স্থানীয় পরিবহন ভাড়া পড়তে পারে মাথাপিছু ১৮৮ থেকে ৪৪৫ থাই বাত (৬৫২ থেকে ১ হাজার ৫৪৪ টাকা)।
৫৯৭ থেকে ১ হাজার ৪০৩ থাই বাতের (২ হাজার ৭১ থেকে ৪ হাজার ৮৬৬ টাকা) মতো বাজেট রাখতে হবে প্রতিবেলা আহারের জন্য।
আর পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রমগুলোর সম্ভাব্য খরচ ৩০৮ থেকে ৭৫৩ থাই বাত (১ হাজার ৬৮ থেকে ২ হাজার ৬১২ টাকা)।
সব মিলিয়ে একজনের জন্য প্রতিদিন ১ হাজার ৪৪৯ থেকে ৩ হাজার ১২ থাই বাত খরচের পরিকল্পনা রাখতে হবে পাতায়া ঘুরে বেড়ানোর জন্য। বাংলাদেশি টাকায় এই বাজেট প্রায় ৫ হাজার ২৬ থেকে ১০ হাজার ৪৪৭ টাকার সমান।
ভ্রমণকালীন প্রয়োজনীয় সতর্কতা
• বাংলাদেশ থেকে রওনা হওয়ার পূর্বে কিছু থাই বাথ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উত্তম। এতে করে বিমানবন্দরে নেমেই নতুন সিম কেনা, ট্যাক্সি বা অন্যান্য পাবলিক পরিবহন ভাড়া করাতে সুবিধা হবে।
• ইতিপূর্বে একবার পাতায়াতে গিয়েছে এমন কাউকে সফরসঙ্গী করা হলে ভ্রমণ খরচ অনেকটা কম আসবে।
• পাতায়া শহরে দিনের উষ্ণতম সময়টা একটু বেশিই গরম। তাই শীত-গ্রীষ্ম যে মৌসুমেই যাওয়া হোক না কেন, সঙ্গে মানসম্মত সান প্রোটেকশন নেওয়া জরুরি।
• স্কুটি ভাড়া করে দ্বীপের সবগুলো বিচ সহজেই ঘুরে বেড়ানো যায়; সেই সঙ্গে এক ভিন্ন রকম আনন্দময় অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
• বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে প্রবেশের সময় স্থানীয় প্রথা ও ভাবগাম্ভীর্যের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।
থাইল্যান্ডের পাতায়া ভ্রমণে উপসাগরীয় জনপদের জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখার এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। নং নুচ বোট্যানিক্যাল গার্ডেন, পাতায়া বীচ এবং ফ্রা তাম্নাক পাহাড়ের মত বৈচিত্র্যপূর্ণ জায়গাগুলো আলাদাভাবে উপস্থাপন করে দেশের প্রকৃতিকে। অথচ কোথাও সংস্কৃতি ও প্রাণের স্পন্দনে এতটুকু বিরাম থাকে না। চাইনিজ নববর্ষ এবং সোংক্রান উৎসবগুলো থাই সংস্কৃতিকে রাজকীয় ভঙ্গিমায় পরিবেশন করে পর্যটকদের সামনে। কেবল নিছক কোনো অবকাশ যাপন নয়, এ যেন প্রতিটি মুহূর্তে এক ভিন্ন জীবনধারাকে চেতনায় ধারণ করা, যা নিঃসন্দেহে কতক অবিস্মরণীয় স্মৃতির যোগান দেয়।