শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন

বর্ষায় দেশের এই ৭ জায়গায় বেড়াতে যেতে পারেন

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

১. জলময় বরিশাল

বরিশাল, পিরোজপুর ও ঝালকাঠির সীমান্তবর্তী কয়েকটি উপজেলা নদ-নদী-খালে জড়িয়ে আছে। যা ‘বরিশাল ব্যাকওয়াটার’ নামে পরিচিত। এসব এলাকায় মানুষের জীবন জলনির্ভর। নৌকাতেই বসে নিত্যদিনের হাট, জলপথেই আসেন হাটুরেরা। এর মধ্যে ঝালকাঠির ভীমরুলি ভাসমান পেয়ারার হাট তো অনেকের কাছেই পরিচিত। মধ্য আগস্টে পুরোপুরি জমে ওঠে এই হাট। এই বর্ষায় তাই ঘুরে আসতে পারেন বরিশালের জলমগ্ন এলাকা। খাল বেয়ে ট্রলার আর ডিঙিতে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর দারুণ সব স্মৃতি নিয়ে ফিরবেন, হলফ করে বলা যায়।

পেয়ারা নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন একজন কৃষক
পেয়ারা নিয়ে বাজারে যাচ্ছেন একজন কৃষকছবি: সজীব মিয়া

২. রবীন্দ্রনাথের পথে

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি বজরা ছিল। কবি বলতেন বোট। বাংলার প্রমত্ত পদ্মা নদীকে ভালোবাসতেন বলে তিনি এর নাম দিয়েছিলেন ‘পদ্মা’। এই নৌকাঘরে বসে কবির লেখা ছিন্নপত্রগুলো বাংলার বর্ষার অমর দলিল। রবীন্দ্রনাথের সেই বজরা আর নেই। শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে আছে শুধু তাতে ওঠার একটি সিঁড়ি। তাই এই বর্ষায় ঘুরতে যেতে পারেন রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়ি। পাশাপাশি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আর নওগাঁর পতিসরের কুঠিবাড়িতেও ঢুঁ মারতে পারেন। ঘুরতে পারেন রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত গড়াই, পদ্মা, আত্রাই নদ-নদীতে! এসব জায়গায় রাতযাপনের ব্যবস্থাও রয়েছে। এসব কবিতীর্থে বর্ষাযাপন হতে পারে অনন্য এক ভ্রমণ অভিজ্ঞতা!

কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি
কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি

৩. বর্ষার বন

বর্ষার বন বড় অদ্ভুত। অনেকে বলেন, বর্ষার বনে জ্যোৎস্না উপভোগ্য। অমাবস্যাই-বা কম কী! বর্ষার অন্ধকার রাতে ব্যাঙের অবিশ্রান্ত ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ শুনে বনকোলে ঘুমিয়ে পড়াও হতে পারে এক দারুণ অভিজ্ঞতা। হবিগঞ্জের কালেঙ্গা, রেমা বা সাতছড়িতে নিতে পারেন এই অভিজ্ঞতা। আর একটু দূরে যেতে চাইলে বান্দরবানের সাঙ্গু-মাতামুহুরীর বন, চট্টগ্রামের হাজারীখিল অভয়ারণ্য অথবা রাঙামাটির পাবলাখালী অভয়ারণ্য। তবে বর্ষায় বনে সাপসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের আনাগোনা বেড়ে যায়, এই ভ্রমণে সাবধানতার বিকল্প নেই।

রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যে তাঁবুবাস
রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যে তাঁবুবাসছবি: মনিরুল ইসলাম

৪. দক্ষিণের জলতরঙ্গ

বর্ষায় দুকূল ছাপানো নদীর উথাল-পাতাল রূপ দেখতে চাইলে যেতে হবে মেঘনার নিম্নাংশে। ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিনই একাধিক লঞ্চ ভোলার ইলিশা, মনপুরা, চরফ্যাশন, নোয়াখালীর হাতিয়াসহ বিভিন্ন রুটে যায়। ঘনঘোর বর্ষাদিনে এসব লঞ্চে চেপে দক্ষিণের কোনো জনপদের উদ্দেশে দুদিনের জন্য বেরিয়ে পড়তে পারেন। তবে এই ধরনের যাত্রায় লঞ্চভ্রমণে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ঝড় ও বন্যা পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখতে হবে, বাছাই করতে হবে মানসম্পন্ন লঞ্চ।

ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিনই একাধিক লঞ্চ দক্ষিণের বিভিন্ন রুটে যায়
ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতিদিনই একাধিক লঞ্চ দক্ষিণের বিভিন্ন রুটে যায়ফাইল ছবি

৫. বৃষ্টিমুখর সমুদ্র

বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ সাগরসৈকতে যায় গ্রীষ্মে। আমরা কেন যেন শীতকালকেই সৈকতগমনের সেরা সময় ধরে নিয়েছি। ফলে বর্ষার সমুদ্রের রূপটা আর দেখা হয়ে ওঠে না! ভরসা দিতে পারি, বর্ষার সাগর আপনাকে নিরাশ করবে না। ঘোর বর্ষায় সৈকতে উত্তুঙ্গ ঢেউ সামনে রেখে ঝুম বৃষ্টিতে ভিজতে কেমন লাগবে, একবার ভেবে দেখুন! আর এই সময়টাতে পর্যটকের চাপ কম থাকে বলে কক্সবাজার ও কুয়াকাটার হোটেল রিসোর্টেও মিলবে মূল্যছাড়।

বর্ষার সমুদ্রও অনেকের পছন্দের
বর্ষার সমুদ্রও অনেকের পছন্দেরছবি: মুনিয়া ইসলামের সৌজন্যে

৬. হাওরে হইচই

বর্ষায় জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় যেন জেগে ওঠে হাওর। সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ বা মৌলভীবাজার—যেখানকার হাওরেই যান না কেন, এই বিপুল জলরাশি আপনাকে নিরাশ করবে না। আর এখন তো সুনামগঞ্জে আছে আধুনিক সুবিধাসংবলিত বাহারি সব হাউসবোট। আর যাঁরা হাওরের আদি অভিজ্ঞতা আর অ্যাডভেঞ্চার চান, চিরায়ত সব নৌযান বা উপায়গুলো তো থাকছেই!

বর্ষায় জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় যেন জেগে ওঠে হাওর
বর্ষায় জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় যেন জেগে ওঠে হাওরছবি: সংগৃহীত

 ৭. কাপ্তাই লেক

নাব্যতাসংকটে ভোগা কাপ্তাই লেক বর্ষায় ফিরে পায় পূর্ণ রূপ। টইটম্বুর কাপ্তাই লেকে ভাড়া নৌকা বা বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারী লঞ্চ ধরে চলে যেতে পারেন হরিণা, মারিশ্যা, দূরছড়ি, জুড়াছড়ি, বিলাইছড়ি, ফারুয়া, মাইনী, বরকলসহ নানা অদেখা জনপদে। কাপ্তাইয়ের জলে ভাসতে ভাসতে নিতে পারেন নানা জাতের মাছের স্বাদ।

প্রথম আলো

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com