প্রতিনিয়ত ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাড়ছে ফ্লাইটের সংখ্যা, বাড়ছে যাত্রী চাপ। এমন পরিস্থিতিতে চাপ সামলাতে চলছে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজ; যা ২০২৪ সালে যাত্রীদের ব্যবহারের উপযোগী হবে। তবে এতে টার্মিনাল সঙ্কট কাটলেও চাপ বাড়বে রানওয়েতে। এমনিতে উড্ডয়নের সময় উড়োজাহাজগুলোকে অপেক্ষা করতে হয়, তারওপর ফ্লাইট বাড়লে এই জট আরও বাড়বে। প্রয়োজন থাকলেও জায়গা সঙ্কটে নতুন করে পূর্ণাঙ্গ রানওয়ে করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, ফ্লাইটের চাপ সামলাতে ‘ডিপেন্ডেবল রানওয়ে’ করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একটি বিমানবন্দরে একাধিক রানওয়ে থাকলে একটি থেকে অপরটি নির্ধারিত দূরত্বে স্থাপন করতে হয়। পৃথক রানওয়েতে একই সময়ে উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে পৃথক রানওয়ে না করে ডিপেন্ডেবল রানওয়ে করা হয়। মূল রানওয়ে এবং ডিপেন্ডেবল রানওয়েতে একই সময়ে উড়োজাহাজ ওঠা-নামার সুযোগ নেই। মূল রানওয়ে থেকেই ফ্লাইট ওঠা-নামা করে, আর ডিপেন্ডেবল রানওয়েতে ফ্লাইট উড্ডয়নের জন্য অপেক্ষা করে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেশি-বিদেশি ৩৩টি এয়ারলাইন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতিদিন গড়ে এই এয়ারলাইনগুলোর ১৫০টি ফ্লাইট ওঠা-নামা করে। এয়ারলাইনগুলোর অভিযোগ, প্রায়শই একই সময়ে ফ্লাইট থাকলে টেকঅফের জন্য উড়োজাহাজগুলোকে সিরিয়াল ধরে অপেক্ষা করতে হয়। অন্যদিকে ল্যান্ডিংয়ের অনুমতি না পেলে আকাশে ‘গো অ্যারাউন্ড’ করতে হয়। এতে এয়ারলাইনগুলোর যেমন ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখা সম্ভব হয় না, অন্যদিকে জ্বালানি খরচও বেড়ে যায়।
বাংলাদেশি এয়ারলাইন নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটের চাপ বেড়েছে। একটি ফ্লাইট টেকঅফ করার সময় ৩০-৪০ মিনিট ট্যাক্সিতে অপেক্ষা করতে হয়। অবতরণের পর ২০-৩০ মিনিট সময় ট্যাক্সিতে নষ্ট হয়। এ কারণে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হচ্ছে এয়ারলাইনগুলোর। দ্বিতীয় রানওয়ে হলে এ সংকট দূর করা সম্ভব হবে।’
এ প্রসঙ্গে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ হচ্ছে যাত্রী সেবার মান বাড়াতে একই সঙ্গে যাত্রীর যে চাপ আছে, সেটি মোকাবিলা করতে। যাত্রী বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়বে। একটি মাত্র রানওয়ে দিয়ে অনেক বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। সে কারণে পৃথক আরেকটি রানওয়ে করার ইচ্ছে থাকলেও জায়গার সঙ্কটে করা সম্ভব হচ্ছে না।
মো. মফিদুর রহমান বলেন, একারণে একটি ডিপেন্ডেবল রানওয়ে করা জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমীক্ষার কাজ চলমান, তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।