1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
ফ্রান্স
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০১:০৮ অপরাহ্ন
Uncategorized

ফ্রান্স

  • আপডেট সময় বুধবার, ১২ মে, ২০২১
ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। সরকারিভাবে এটি ফ্রান্স প্রজাতন্ত্র নামে পরিচিত। দেশটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফ্রান্স মোটামুটি ষড়ভুজাকৃতির। এর উত্তর-পূর্বে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবুর্গ, পূর্বে জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও ইতালি, দক্ষিণ-পশ্চিমে অ্যান্ডোরা ও স্পেন, উত্তর-পূর্বে ইংলিশ চ্যানেল, পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর, উত্তরে উত্তর সাগর এবং দক্ষিণ-পূর্বে ভূমধ্যসাগর।
ফ্রান্সের আয়তন ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮০১ বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে ফ্রান্স ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ এবং পৃথিবীর মধ্যে ৪৮ তম দেশ। এছাড়া জনসংখ্যার দিক থেকে এটি ইউরোপের চতুর্থ স্থানে রয়েছে। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশটির জনসংখ্যা ৬ কোটি ৬৯ লাখেরও অধিক। মূল ভূখণ্ডের বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্রান্সের উপনিবেশ রয়েছে, যেগুলো বেশির ভাগই প্রাক্তন ফরাসি সাম্রাজ্য থেকে পাওয়া।
ফ্রান্সের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির ভাষা ‘ফ্রেঞ্চ বা ফরাসি’। এখানকার ৯০ শতাংশের অধিক মানুষ ফরাসি ভাষাতে কথা বলে। তাছাড়া বাস্ক, ব্রেটন, কাতালান, কর্সু, আরপিটান, অক্সিটান, আলসাটান ইত্যাদি ভাষাগুলোকে আঞ্চলিক ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ফ্রান্সে বহিরাগত অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে আরবি, আর্মেনীয়, ইতালীয়, কাবিলে, পর্তুগিজ, তুর্কি এবং ওলোফ প্রচলিত। জিপসি বা রোমানিও প্রচলিত রয়েছে দেশটিতে।
ফ্রান্সের ইতিহাস সমৃদ্ধ ও বিচিত্রপূর্ণ। দেশটির সর্বপ্রথম অধিবাসীদের সম্পর্কে তেমন বিশেষ কিছু জানা যায় না। দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের গুহায় পাওয়া ছবিগুলি প্রায় ১৫ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের বলে অনুমান করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতক থেকে কেল্টীয় ও অন্যান্য গোত্রের লোকেরা ফ্রান্সে প্রবেশ ও বসবাস করতে শুরু করে। প্রাচীনকালে ফ্রান্স অঞ্চল কেল্টীয় গল নামে পরিচিত ছিল। প্রাচীন রোমানরা খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতকে ফ্রান্সের দখল নেয় এবং খ্রিস্টীয় ৫ম শতক পর্যন্ত অঞ্চলটি শাসন করে।
রোমের পতনের পর অনেকগুলি রাজবংশ ধারাবাহিকভাবে ফ্রান্স শাসন করে। মধ্যযুগে রাজতন্ত্রের প্রভাব কমে যায়। তখন স্থানীয় শাসকভিত্তিক সামন্তবাদের উত্থান ঘটে। ১৪-১৮ শতক পর্যন্ত আবারও রাজতন্ত্রের ক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবে রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। এরপর বহু দশক ধরে ফ্রান্স রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলায় মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে। এরপর নেপোলিয়ন বোনাপার্টের শাসনামলে ফ্রান্স একটি সুসংহত প্রশাসনিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভ করে।
১৯ শতক ও ২০ শতকের শুরুতে ফ্রান্সের শক্তি ও আর্থিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। এসময় ফ্রান্স বিশ্বজুড়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রায় পুরোটাই ফ্রান্সের মাটিতে সংঘটিত হয় এবং এর ফলে দেশটির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্স তাঁর অর্থনীতিকে আবার গড়ে তোলে এবং বিশ্বের একটি প্রধান শিল্পরাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়। বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ফ্রান্সের উপনিবেশগুলোতে সাম্রাজ্য বিরোধী আন্দোলন জেগে ওঠে এবং এর ফলে ফ্রান্স অচিরেই তার বেশির ভাগ উপনিবেশ হারায়।
শিল্প-সাহিত্যের জন্য বিখ্যাত দেশ ফ্রান্স। রেনেসার যুগ থেকেই ফ্রান্সে শিল্প-সাহিত্যের ব্যাপক বিস্তার শুরু হয়। তখন ফ্লেমিশ ও ইটালিয়ান শিল্প-সাহিত্য থেকে ফ্রান্সের জনগণ শিল্প-সাহিত্য চর্চার ধারণা লাভ করে। এছাড়াও বিজ্ঞান, নৃ-বিজ্ঞান, দর্শন ও সমাজবিজ্ঞানের উন্নয়ন ও প্রসারে ফ্রান্সের সংস্কৃতি ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। মধ্যযুগ থেকেই ফ্রান্সের প্যারিস পাশ্চাত্যের সাংস্কৃতিক জীবনধারায় অভ্যস্ত। তাছাড়া ফরাসি রান্না ও ফ্যাশন বিশ্বের সর্বত্র সুপরিচিত।
সংবিধান অনুযায়ী একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ফ্রান্স। তবে ২০১৬ সালের এক হিসাব অনুযায়ী দেখা গেছে, দেশটির ৫১ শতাংশ মানুষ খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করে। মুলসমান ও অন্যান্য আরও কিছু ধর্ম পালন করে ৯ শতাংশ মানুষ। এছাড়া প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ কোনো প্রকার ধর্ম পালন করে না।
ফ্রান্সের জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে ফুটবল অন্যতম। ১৯৯৮ সালে দেশটি ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের মধ্য দিয়ে ফুটবল বিশ্বে খ্যাতি অর্জন করে।২০১৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়। এছাড়াও দেশটির জনপ্রিয় খেলার মধ্যে রয়েছে বাস্কেটবল, জুডো, টেনিস। ২০১৩ সালে ফ্রান্স ‘ফিবা ইউরোবাস্কেট’ স্বর্ণপদক অর্জন করে। অলিম্পিক গেমসেও দেশটির সুনাম রয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com