পৃথিবীতে বর্তমানে অক্সিজেনের পরিমাণ ২১ ভাগ থাকলেও একটা নির্দিষ্ট সময় পর তার মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাবে। বাড়বে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেনসহ অন্যান্য উপাদানের মাত্রা।
লন্ডনভিত্তিক ব্রিটিশ সাপ্তাহিক বৈজ্ঞানিক জার্নাল ‘ন্যাচার’ গবেষণাপত্রে এ তথ্য প্রকাশিত হয়। তবে গবেষণাপত্রটিতে জানানো হয়েছে, এখনই ভয়ের কারণ নেই। এ পরিস্থিতিতে আসতে এখনও কয়েকশো কোটি বছর বাকি।
এমন তথ্য প্রকাশের পরপরই বিজ্ঞানীরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন পৃথিবীর ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থার কথা। তারা বলছেন, অক্সিজেনের মাত্রা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় রয়েছে বলেই এককোষী থেকে বহুকোষী, এমনকি মানুষের অস্তিত্বও সম্ভবপর হয়েছে। একাধিক প্রজাতির এ গ্রহে বেঁচে থাকার অন্যতম প্রধান কারণ অক্সিজেন। তবে বহুযুগ আগে এর চিত্র এমন ছিল না।
ফিরে দেখা যাক সাড়ে চারশো কোটি বছর আগের পৃথিবীতে। সে সময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন ও জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল মাত্রাতিরিক্ত। গবেষকদের একাংশ ধারণা করছেন, অতীতের সে অবস্থা আবার ফিরে আসবে পৃথিবীতে।
যদি সে পরিস্থিতিতে পৃথিবী পড়ে তবে ঠিক কী হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী ক্রিস রাইনহার্ড বলেন, ‘অক্সিজেনের মাত্রা চরমভাবে কমে যাবে। ধরা যেতে পারে, এখন যা মাত্রা রয়েছে, তার থেকে কয়েক লক্ষ গুণ কমে যাবে।’
স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা যাচ্ছে, জীববৈচিত্র চরমভাবে হুমকির মুখে পড়বে। এমনকি অতীতরূপেও ফিরে যেতে পারে পৃথিবী। ফলত আজ থেকে আড়াইশো কোটি বছর আগে পৃথিবী যে ‘গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট’র মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল, তা আবার আগের রূপে ফিরে আসবে।
ন্যাচার জার্নালের এ গবেষণাপত্রটি বছরদুয়েকের পুরোনো হলেও বিজ্ঞানীদের মাঝে নতুন করে এটি নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। কারণ, জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশ ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বাইরে মানুষের বসবাসের যোগ্য গ্রহের সন্ধান করতে শুরু করেছেন। সেক্ষেত্রে এই গবেষণা গুরুত্ব পাচ্ছেই। কেননা গবেষণা থেকেই জানা গেছে, অক্সিজেন কমে গেলে জীববৈচিত্রই হুমকির মুখে পড়বে। স্বভাবতই বেঁচে থাকার তাগিদে নতুন পৃথিবীর সন্ধান করতেই হবে।