টানা ৪ মাসের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ধীরে ধীরে জমে উঠছে বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। দূর দূরান্ত থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসছে পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে। হোটেল মোটেলগুলোতেও বেড়েছে আগাম বুকিংয়ের সংখ্যা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পর্যটকের ভিড় বাড়ে আরও কয়েকগুণ।
জানা গেছে, টানা ৪ মাস পর বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় চলমান নিষেধাজ্ঞা গত ১৪ জুলাই প্রত্যাহার করেছে প্রশাসন। এরপর থেকে থানচি উপজেলায় পর্যটকের আনা গোনা শুরু হয়েছে। রেমাক্রি বড় পাথর রাজা পাথর তিন্দু তমাতুঙ্গীসহ থানচির দর্শনীয় স্থানগুলোতে ছুটে যাচ্ছে পর্যটকরা।
শুধু তাই নয় জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রেও পর্যটকের আগমন আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবার, পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা নগর জীবনের কর্মব্যস্ততা ভুলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চষে বেড়াচ্ছে দর্শনীয় স্থানগুলো।
হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতেও পর্যটকের ভিড়। বিভিন্ন হোটেল মোটেলে বেড়েছে আগাম বুকিংয়ের পরিমাণও। এর ফলে স্বস্তি ফিরেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মাঝে।
হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালীর পরিচালক ইসমাইল সুমন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর পর্যটকের আগমন বেড়েছে। আগাম বুকিংও পাচ্ছি। আশাকরছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে বন্ধের দিনগুলোতে পর্যটক আরও বাড়বে।’
ফানুস রিসোর্টের পরিচালক ইমরান উদ্দীন বলেন, ‘রুমা থানচির ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ায় দূর দূরান্তের পর্যটকের আগমন বেড়েছে। এ জায়গাগুলো ভ্রমণে যাওয়ার জন্য অনেক দিন ধরে অপেক্ষায় ছিল পর্যটকরা। নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়াতে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে আসছে। অনলাইনেও সাড়া পাচ্ছি। অনেকে আগে থেকে বুকিং দিচ্ছে।’
দীর্ঘ দিন নিষেধাজ্ঞার কারণে থমকে গিয়েছিল জেলার পর্যটন শিল্প। কর্মহীন হয়ে পড়েছিল কয়েক হাজার শ্রমিক। তবে পর্যটক আসার এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে পর্যটন শিল্প আবারো ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে হোটেল মালিক সমিতির অর্থ সম্পাদক রাজীব বড়ুয়া বলেন, ‘পর্যটকের আগমন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে বিভিন্ন হোটেল মোটেলে বুকিংও পাচ্ছে। আশাকরি এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে ব্যবসায়ীদের লোকসান কাটিয়ে পর্যটনের চাকা আবারো সচল হবে।’
উল্লেখ্য, পাহাড়ে জঙ্গি বিরোধী অভিযানের কারণে ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে প্রথম রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। এরপর বিভিন্ন দফায় বাড়িয়ে বিভিন্ন উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সবশেষ টানা ৪ মাসের অনির্দিষ্টকালের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পর গত ১৪ জুলাই রুমা ও থানচি উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে প্রশাসন। তবে এখনো নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে রোয়াংছড়ি উপজেলা।
Like this:
Like Loading...