হেনলি পাসপোর্ট ইনডেক্সের তালিকায় নাইজেরিয়ার পাসপোর্টের অবস্থান ৯০তম। বিশ্বের অন্যতম দুর্বল এই পাসপোর্ট নিয়ে ২৬ বছর বয়সী নারী পর্যটক আলমা আসিনোবি চেয়েছিলেন, সবচেয়ে কম সময়ে সাতটি মহাদেশ সফর করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে। নানা প্রতিবন্ধকতা উতরে বিশ্বভ্রমণের স্বপ্ন পূরণ হলেও পারেননি সবচেয়ে কম সময়ে রেকর্ড গড়তে। ভ্রমণ শেষে এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন ‘পাসপোর্ট-বৈষম্যের’ কথা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাসপোর্টের শক্তি কিংবা মর্যাদার ভিত্তিতে ভ্রমণের সুযোগ কতটা সহজ বা কঠিন হয়, সেটা তিনি বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন।
আলমা আসিনোবির লক্ষ্য
আলমা আসিনোবি চেয়েছিলেন, বিশ্বের সাত মহাদেশ সবচেয়ে কম সময়ে ভ্রমণ করতে। অ্যান্টার্কটিকা থেকে তিনি এই চ্যালেঞ্জ শুরু করেছিলেন চলতি বছরের ১৯ মার্চ। এরপর দক্ষিণ আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া পেরিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাতে চেয়েছিলেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। তখন পর্যন্ত বিশ্ব রেকর্ডটি ছিল এক মার্কিন নাগরিকের দখলে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেই মার্কিন নাগরিক ৬৪ ঘণ্টায় বিশ্বভ্রমণ শেষ করেন। আর আসিনোবির শেষ হয় ৭১ ঘণ্টা ২৬ মিনিটে।
ভ্রমণে প্রতিবন্ধকতা
আসিনোবির ভ্রমণের মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল ভিসা জটিলতা, ফ্লাইট বাতিল ও সীমিত সুযোগ। তিনি যেসব দেশে যেতে চেয়েছিলেন, সেগুলোর মধ্যে একটি দেশ ভিসা না দেওয়ায় পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য হন তিনি। এরপর ডোমিনিকান রিপাবলিক থেকে প্যারিসে যাওয়ার ফ্লাইট বাতিল হয়। কারণ, যুক্তরাজ্যের হিথরো বিমানবন্দরের পাশে আগুন লাগায় সেখানে বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে তাঁকে বিকল্প রুটে স্পেনে যেতে হয়। কিন্তু সেখানেও সংযোগ ফ্লাইট মিস করেন। সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসে দুবাই থেকে অস্ট্রেলিয়ার পার্থ শহরে যাওয়ার সময়। বিমানবন্দরে বলা হয়, তাঁর ভিসা পুনরায় যাচাই করা প্রয়োজন। তাই তাঁকে ফ্লাইটে উঠতে দেওয়া হয়নি। আসিনোবি বলেন, ‘আমি চোখের সামনে দেখতে পেলাম, সবাই ফ্লাইটে উঠছে আর আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি। আমার চোখে পানি চলে এসেছিল। খুবই হৃদয়বিদারক অভিজ্ঞতা ছিল।’
নাইজেরিয়ার পাসপোর্ট নিয়ে মাত্র ৪৬টি দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশ করা যায়। যেখানে বিশ্বের প্রথম সারির অনেক দেশের নাগরিকেরা ১৮০টির বেশি দেশে ভিসামুক্ত ভ্রমণ করতে পারেন। আসিনোবি এখন চান সরকারি পর্যায়ে আলোচনা শুরু করতে, যেন উন্নয়নশীল দেশের নাগরিকদের ভিসা পাওয়ার সুযোগ সহজ হয়।
সূত্র: সিএনএন