উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে ভৌগোলিক সংযোগস্থাপনকারী দেশ মিসর বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে নতুন একটি মাল্টিপল ভিসা ছাড়ছে। প্রস্তাবিত এই ভিসার মেয়াদ হবে ৫ বছর এবং এটি পেতে হলে একজন পর্যটককে ব্যয় করতে হবে ৭০০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭৩ হাজার ৫৭৫ টাকা)।
গতকাল সোমবার রাজধানী কায়রোতে আয়োজিত এক সংবাদসম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির পর্যটন ও পুরাকীর্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আহমেদ ইসা। তিনি আরও বলেন– চীন, তুরস্ক, ইরাক, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ যে কোনো দেশের পর্যটক এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
পলিওলিথিক (প্রাচীন প্রস্তর) এবং নিওলিথিক (নব্যপ্রস্তর) যুগের পর বিশ্বের যেসব অঞ্চলে প্রথম মানবসভ্যতা গড়ে উঠেছিল, সেসবের মধ্যে সবার আগে আছে মিসর। যীশুখ্রিস্টের জন্মের ৮ হাজার বছর পূর্বে, অর্থাৎ আজ থেকে ১০ হাজার বছর আগে মিসরে গড়ে উঠেছিল কৃষিভিত্তিক সভ্যতা।
পিরামিড, স্ফিংস, প্রাচীন মিসরের রাজা ফারাওদের মমিকৃত দেহ ও প্রাচীন সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শন দেখতে প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে লাখ লাখ পর্যটক দেশটিতে যান।
কিন্তু সম্প্রতি এই খাতটিতে বিশেষ জোর দিতে চাইছে মিসরের সরকার; আর তার প্রধান কারণ দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট। গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ। এই মূল্যস্ফীতির সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাপ পড়েছে খাদ্যপণ্যের বাজারে। চলতি বছর দেশটির সব খাদ্যপণ্যের দাম গড়ে বেড়েছে ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ।
তাই এই প্রথমবারের পর্যটন ভিসার মেয়াদ বাড়াল মিসরের সরকার। মঙ্গলবারের সংবাদসম্মেলনে পর্যটনমন্ত্রী বলেছেন, ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধাও বরাদ্দ করা হয়েছে; তবে সেসব সুবিধা কী— সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।
পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২০২৮ সালের মধ্যে মিসরে প্রতি বছর ৩ কোটি পর্যটক আনার লক্ষ্য নিয়েছে দেশটির সরকার। শতকরা হিসেবে বর্তমানে সময়ের তুলনায় এই হার ২৫ শতাংশ বেশি।