পর্তুগালের ইতিহাস প্রাচীন ও সমৃদ্ধ। এটি ইউরোপের অন্যতম প্রাচীন দেশ, যার ইতিহাস রোমানদের শাসন থেকে শুরু করে মধ্যযুগের বিভিন্ন রাজবংশের আধিপত্যের মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়েছে। ১২শ শতকে এটি একটি স্বাধীন রাজ্যে পরিণত হয়, এবং ১৫শ শতকে ভাস্কো দা গামা, মাগেলানদের মত বিখ্যাত নাবিকেরা বিশ্বজুড়ে পর্তুগিজ সাম্রাজ্য বিস্তার করেন। ১৯৭৪ সালের পর থেকে এটি একটি গণতান্ত্রিক দেশ।
এলাকা ও জনসংখ্যা:
পর্তুগালের আয়তন প্রায় ৯২,২১২ বর্গ কিলোমিটার। এর জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটির উপরে, যেখানে বেশিরভাগ মানুষ দেশটির বৃহৎ শহরগুলোতে বসবাস করেন।
ভাষা ও রাজধানী:
পর্তুগালের সরকারিভাষা পর্তুগিজ এবং এর রাজধানী লিসবন। এটি দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর ও প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্র।
গুরুত্বপূর্ণ শহর:
লিসবন ছাড়াও পোর্তো, কোয়িমব্রা, আভেইরো, ব্রাগা, ও ফারো পর্তুগালের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলির মধ্যে অন্যতম। পোর্তো তার বিখ্যাত ওয়াইন ও স্থাপত্যের জন্য প্রসিদ্ধ, কোয়িমব্রা তার ঐতিহাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এবং ফারো পর্যটকদের জন্য সমুদ্রতীরবর্তী সুন্দর শহর।
পর্যটন ও আকর্ষণীয় স্থানসমূহ:
পর্তুগাল ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। লিসবনের বেলেম টাওয়ার, জেরোনিমোস মঠ, পোর্তোর ডোম লুই ব্রিজ, সিন্ত্রার রাজপ্রাসাদ, এবং আলগারভের রোমান্টিক সৈকতগুলো পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এছাড়াও, আভেইরোকে “পর্তুগালের ভেনিস” বলা হয়।
সংস্কৃতি:
পর্তুগালের সংস্কৃতি সঙ্গীত, নৃত্য ও শিল্পকলায় সমৃদ্ধ। ফাডো সঙ্গীত, যা UNESCO এর বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ, পর্তুগিজ সাংস্কৃতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পর্তুগিজরা ঐতিহ্যগত পোশাক ও খাবারের প্রতি খুবই শ্রদ্ধাশীল।
শিক্ষা:
পর্তুগালে উচ্চশিক্ষা মানসম্মত ও সাশ্রয়ী। দেশটির বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বে স্বীকৃত, বিশেষত লিসবন ও কোয়িমব্রার। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এখানে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায়।
খাবার ও পানীয়:
পর্তুগিজ খাবারে সাধারণত সি-ফুড এবং মাংসের বিভিন্ন পদ থাকে। “বাচালাউ” বা শুটকি মাছের পদ, “কালডে ভার্দে” সুপ, “পাস্তেল দে নাটা” মিষ্টি বেশ জনপ্রিয়। পর্তুগাল বিখ্যাত পোর্তো ওয়াইনের জন্যও।
কেন পর্যটকরা আসেন?
পর্তুগালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থান, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, নিরাপদ পরিবেশ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
চাকরির সুযোগ ও দোকানপাট:
পর্তুগালে কর্মসংস্থান, বিশেষত পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। লিসবন ও পোর্তোতে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের আউটলেট ও স্থানীয় দোকানপাট রয়েছে, যা পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য আকর্ষণীয়।
পর্তুগাল ঘুরতে এসে পর্যটকরা ইউরোপীয় ইতিহাসের স্পর্শ পাবেন, আধুনিকতার সাথে ঐতিহ্যের মেলবন্ধন ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।