1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
নেদারল্যান্ডসের অভিবাসন জাদুঘর
শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৪৪ পূর্বাহ্ন

নেদারল্যান্ডসের অভিবাসন জাদুঘর

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, ২০২৫

দারল্যান্ডসের রটারডামে এক অনন্য জাদুঘর আছে যার নাম ‘ফেনিক্স মিউজিয়াম অফ মাইগ্রেশন’৷ সেখানে গিয়ে দর্শনার্থীরা অভিবাসনকে ঘিরে মানুষের অনুভূতি, আবেগ এবং বিভিন্ন কাহিনি সম্পর্কে জানতে পারেন।

সাহস, হতাশা, আশা: অভিবাসনের অনেক রূপ এবং দিক আছে। অভিবাসী এবং তাদের আশেপাশে থাকা মানুষদের জীবনে আশা এবং অনিশ্চয়তা নিয়ে আসে অভিবাসন।

রাজনৈতিকভাবে আলোচিত এই বিষয় নিয়ে নির্মিত জাদুঘরটি শুধু পরিসংখ্যান এবং আইন তুলে ধরছে না। জাদুঘরের পরিচালক অ্যান ক্রেমারস বলেন, ‘মানুষ হিসেবে অভিবাসন আমাদের জীবনের একটি অংশ। যতদিন আমরা মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকি, আমরা স্থানান্তরিত হই এবং সবসময় তা করে যাব। প্রত্যেক পরিবারে বলার মতো একটি অভিবাসনের গল্প আছে এবং আমরা এখানে যা দেখাতে চাই তা হলো, অভিবাসন কালজয়ী এবং সর্বজনীন, তবে সর্বোপরি, অত্যন্ত ব্যক্তিগত।’

জাদুঘরটি নেদারল্যান্ডসের রটারডামে সাবেক এক ডকের গুদামে অবস্থিত। এখান থেকেই লাখ লাখ ইউরোপীয় ১৯ ও ২০ শতকে ভাগ্য অন্বেষণে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। নতুন খোলা জাদুঘরটির স্থাপত্য এরইমধ্যে অনেকের নজর কেড়েছে।

হেলিক্স স্টিল দিয়ে তৈরি দুটি সিঁড়ি ভবনটির মধ্যে দিয়ে এমনভাবে উপরে উঠে গেছে যা দেখতে টর্নেডোর মতো মনে হয়। জাদুঘরের ছাদে একটি চারিদিকে দেখার জন্য প্ল্যাটফর্ম আছে। ভবনটি ডিজাইন করেছেন চীনা স্থপতি মা ইয়ানসং।

তিনি বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট জায়গায় যাওয়ার পর আপনি বিভিন্ন রুট বেছে নিতে পারেন- নিচে নামতে পারেন কিংবা উপরেও যেতে পারেন। এভাবে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে আপনার দেখা হতে পারে, যেমন, অপরিচিত কোনো লোক।এ ছাড়া অন্য দর্শনার্থীদের সঙ্গেও দেখা হতে পারে। সে কারণে আমার মনে হয় এটি অভিবাসনের একটি রূপক হয়ে উঠেছে। আপনি যাত্রা শুরু করেন, আপনার একটি গন্তব্যস্থল থাকে এবং তারপর আপনি সময়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে যান।’

বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের সৃষ্ট প্রায় দেড়শ শিল্পকর্ম জাদুঘরে আছে। সবগুলোই কোনো না কোনোভাবে অভিবাসনের সঙ্গে সম্পর্কিত। অনেকেই তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতা তাদের কাজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

জাদুঘরের পরিচালক ক্রেমারস বলেন, ‘আমাদের অনেক শিল্পীর হয় নিজের অভিবাসনের অভিজ্ঞতা আছে, কিংবা তারা এটি নিয়ে গবেষণা করেছেন। বিষয়টি খুব আবেগের হতে পারে, কারণ, এর সঙ্গে হোমসিকনেস বিষয়টি জড়িয়ে থাকে, কাউকে বিদায় জানানো, স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারা না পারা, নতুন একটি বাড়ি খুঁজে পাওয়ারও বিষয় থাকে।’

মাটির এই মাথাগুলো রটারডামের ১১৬ বাসিন্দার চিত্র তুলে ধরেছে। ইসরায়েলি শিল্পী ইফরাত জেহাভি এগুলো তৈরি করেছেন। ২০০১ সাল থেকে তিনি রটারডামে থাকছেন। একটি বিষয় তিনি খেয়াল করেছেন যে, আপনি যখন মানুষকে জিজ্ঞেস করেন তারা কোথায় যাচ্ছেন, প্রায়ই তারা জানান, তারা কোথা থেকে এসেছেন।

অভিবাসনের খুব কম গল্পই আছে যেখানে ব্যাগের সংশ্লিষ্টতা থাকে না। অনেকের কাছে ব্যাগ শুধু জিনিসপত্র বহনের চেয়েও বেশি কিছু।

লেখক ও ফেনিক্স জাদুঘরের কিউরেটর আবদেলকাদের বেনালি বলেন, ‘দুই হাজার লাগেজ মানে হলো দুই হাজারটি অত্যন্ত ব্যক্তিগত গল্প, যা একটি উন্নত জীবন পাওয়ার জন্য ত্যাগ স্বীকারের কথা বলে। একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়া, আশাবাদী, কিন্তু আপনার প্রিয় মানুষদের পেছনে ফেলে আসা৷ তাই লাগেজগুলো আশায় ভরা, যন্ত্রণায় ভরা, এবং এটাই এই গোলকধাঁধার সার্বজনীন উপাদান।’

ফেনিক্স জাদুঘরে থাকা সবচেয়ে পুরনো স্যুটকেসটি ১৮৯৮ সালে ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলপথে করে নেদারল্যান্ডসে পৌঁছেছিল। দর্শনার্থীরা স্যুটকেসের ল্যাবিরিন্থে গিয়ে প্রতিটি লাগেজের পেছনের গল্প শুনতে পারেন।

‘অভিবাসীদের পরিবার’ শীর্ষক এই ছবি প্রদর্শনীতে ১৩৬ জন আলোকচিত্রী বিদায়, ভ্রমণ এবং আগমনের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। ছবিগুলো একজন মানুষের জন্য অভিবাসন, নতুন বাড়িতে ওঠা এবং সেখানে থাকতে শুরু করার মানে কী, তা তুলে ধরে।

ফেনিক্স জাদুঘরে গিয়ে দর্শনার্থীরা অভিবাসনকে ঘিরে মানুষের অনুভূতি, আবেগ এবং বিভিন্ন কাহিনি সম্পর্কে জানতে পারেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com