1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
নিউইয়র্কে অ্যাসাইলাম অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বন্ধে যে অসুবিধায় পড়বেন অভিবাসীরা
সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

নিউইয়র্কে অ্যাসাইলাম অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বন্ধে যে অসুবিধায় পড়বেন অভিবাসীরা

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯ হাজারেরও বেশি আবেদন পূরণ করতে সহায়তা করেছে অ্যাসাইলাম অ্যাপ্লিকেশন হেল্প সেন্টারটি। ঝাঁকে ঝাঁকে আশ্রয়প্রার্থীরা ২০২৩ সালের দিকে প্রবেশ শুরু করে নিউ ইয়র্ক সিটিতে। কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়ে সিটি কর্তৃপক্ষ। সে সময় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর হাজারো অভিবাসীকে গুরুত্বপূর্ণ আইনি সহায়তা দিতে বেশ কিছু পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করেন মেয়র এরিক অ্যাডামস। এর অন্যতম ছিল অ্যাসাইলাম অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার স্থাপন। সেটি এখন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা অসুবিধায় ফেলবে অভিবাসীদের।

পরিকল্পনা ও উদ্যোগ

টাইমস স্কয়ারের কাছে অ্যামেরিকান রেড ক্রসের সদরদপ্তরটিকে বানানো হয় আবেদন সহায়তা কেন্দ্র। ধীরে ধীরে অভিবাসীদের আশ্রয় এবং অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিটের কাগজপত্র দাখিলের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হতে থাকে এটি। করদাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত কেন্দ্রটি নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে থাকে। সেই সঙ্গে সাহায্য করে তাদের আবেদন ফরম পূরণেও। এতে করে আইনি জটিলতা এড়িয়ে সঠিকভাবে তাদের আশ্রয়ের আবেদন জমা দিতে পারতেন হাজারো অভিবাসী।

নতুন জীবনের স্বপ্নের সারথি

এখান থেকে সহায়তা পাওয়া এক অভিবাসী নারী ফারাহ। কিছুদিন আগে নিজ দেশে সহিংসতার শিকার হয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে পাড়ি জমান নিউ ইয়র্কে। শহরের আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পেলেও এখানকার জটিল নিয়মকানুন তার কাছে দুর্বোধ্য মনে হতে থাকে।

ঠিক তখনই অ্যাসাইলাম অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের খোঁজ পান তিনি। সেখানে গিয়ে একজন কর্মীর সাহায্যে পুরো প্রক্রিয়াটি বুঝে নেন সারাহ। তার আবেদনপত্রটিও নির্ভুলভাবে পূরণ করে দেয় কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবী।

এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯ হাজারেরও বেশি আবেদন পূরণ করতে সহায়তা করেছে অ্যাসাইলাম অ্যাপ্লিকেশন হেল্প সেন্টারটি। ফারাহর মতো আরও অনেক মানুষ এ কেন্দ্র থেকে আইনি সহায়তা পেয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু হঠাৎই সরকারি তহবিলের অভাব ও অন্যান্য আর্থিক সীমাবদ্ধতার কথা বলে আগামী জুন থেকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সহায়তা কেন্দ্রটি। এ ঘোষণার ফলে যারা এরই মধ্যে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বা যারা ভবিষ্যতে নিউ ইয়র্কে আশ্রয় চাইতে আসবেন, তারাও পড়েছেন নানা জটিলতায়।

কেন্দ্রগুলো বন্ধের কারণ

কেন্দ্রগুলো বন্ধের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, নিউ ইয়র্ক সিটিতে আশ্রয়প্রার্থীদের আগমন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। একসময় সিটিতে প্রতিদিন ৪ হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থী এলেও বর্তমানে এটি নেমে এসেছে সপ্তাহে ৩৫০ জনে। অন্যদিকে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এ আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাসকারীর সংখ্যা ছিল ৬৯ হাজারের বেশি। বর্তমানে সেটি নেমে এসেছে ৩৮ হাজারের নিচে।

এ ছাড়া অ্যাডামস প্রশাসন আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যবস্থাপনার জন্য কিছু নীতি গ্রহণ করায় চাহিদা কমেছে আশ্রয়কেন্দ্রের। আশ্রয়প্রার্থীদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য টিকিট প্রদান, বিভিন্ন প্রকার কেইস ম্যানেজমেন্ট এবং আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার জন্য ৩০ ও ৬০ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করার মতো নীতির কারণে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে গেছেন।

তা ছাড়া শহরের প্রায় ৮৪ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক আশ্রয়প্রার্থী কাজের অনুমতির জন্য আবেদন করেছেন বা পেয়েছেন, যা তাদের স্বনির্ভর হতে সাহায্য করেছে।

আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বন্ধের মাধ্যমে শহরের করদাতাদের মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের বিষয়টিও ভাবাচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ থেকে ২০২৬ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি সাশ্রয় হবে।

এদিকে স্টেইট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও পর্যাপ্ত তহবিল না পাওয়ার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এসব অভিবাসী সহায়তা কেন্দ্রগুলো।

যে অসুবিধায় পড়বেন অভিবাসীরা

কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আশ্রয়প্রার্থীদের আইনি সহায়তা পাওয়ার সুযোগ কমে যাবে। অনেকেই হয়তো ভাষা এবং আইনি জ্ঞান না থাকার কারণে তাদের আবেদন সঠিকভাবে জমা দিতে পারবেন না। এর ফলে আইনি জটিলতায় পড়ার ঝুঁকি বাড়বে।

মেয়র অ্যাডামসের দাবি, প্রশাসন দক্ষতার সাথে এই সংকট মোকাবেলার পাশাপাশি সিটির আর্থিক সাশ্রয়ও করছে, কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। আশ্রয় আবেদন সহায়তা কেন্দ্রের বন্ধ হয়ে যাওয়া সত্যিই একটি উদ্বেগের বিষয় এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে, সিটির অভিবাসী নীতির ওপর, যা হয়তো অনেক মানুষের জীবনকে কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com