রাজধানী একটি দেশ, রাজ্য, বা অঞ্চলের কেন্দ্রীয় শহর, যেখান থেকে দেশটির সরকার পরিচালিত হয়। সাধারণত রাজধানী শহরেই সংশ্লিষ্ট সরকারের সব ধরনের সভা ও অধিবেশন ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এবং এটি সাধারণভাবে সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার বা আইন দ্বারা সিদ্ধ থাকে।
রাজধানী শব্দের ইংরেজি ক্যাপিটাল শব্দটি ল্যাটিন ক্যাপিট থেকে এসেছ যার অর্থ হলো ‘প্রধান’। এছাড়াও ইংরেজি ক্যাপিটাল শব্দটি আরো বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে বাংলায় রাজধানী বলতে কোনো দেশ বা রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শহরকেই বোঝানো হয়ে থাকে। রাজধানী হতে হলে কোনো শহরকে রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহর না হলেও চলে, কিন্তু রাষ্ট্রটির সব প্রশাসনিক কার্যক্রম উক্ত শহরকে ঘিরেই আবর্তিত হয়।
আর তাই প্রতিটি দেশের রাজধানী রয়েছে। যা গুরুত্বপূর্ণ শহর। প্রশাসনিক কার্যাবলী রাজধানী কেন্দ্রীক। কিন্তু পৃথিবীতে এমন একটি দেশ আছে যার কোনো রাজধানীই নেই।
দেশটির নাম, ঠিকানা ও পরিচয়
বিশ্বের ক্ষুদ্রতম দ্বীপ রাষ্ট্র নাউরুর কোনো রাজধানী নেই।
নাউরু দেশটি কোথায় অবস্থিত?
এই দেশটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের মাইক্রোনেশিয়ায় অবস্থিত। এটি নোরু নামেও পরিচিত। প্রায় ২১ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত বিশ্বের ক্ষুদ্রতম স্বাধীন প্রজাতন্ত্রিক রাষ্ট্র এটি। এটি বিশ্বের একমাত্র গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রী দেশ যার এখনও কোনো রাজধানী নেই। ১৯০৭ সাল থেকে নাউরুতে ফসফেট খনন করা শুরু হয়। যা এখনও চলছে।
দেশটি অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করে
এত অল্প জনসংখ্যা সত্ত্বেও এখানকার মানুষের মধ্যে দক্ষতার অভাব নেই। কম জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও এই দেশটি কমনওয়েলথ এবং অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করে আসছে। এই দেশের সরকারি মুদ্রা অস্ট্রেলিয়ান ডলার এবং এই অঞ্চলের অধিবাসীদের বলা হয় নাউরুয়ান।
৩০০০ বছর আগে এই দেশে বসতি স্থাপন করেছিল
বলা হয় যে, প্রায় ৩০০০ বছর আগে মাইক্রোনেশিয়ান এবং পলিনেশিয়ানরা এই দেশে দ্বারা বসতি স্থাপন করেছিল। এদেশের জনসংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েছে বটে, কিন্তু সেই সংখ্যাটাও অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
নাইরুর আয়ের প্রধান উৎস ফসফেট খনি
কথিত আছে যে, এই স্থানটি ঐতিহ্যগতভাবে ১২টি উপজাতি দ্বারা শাসিত ছিল। যার প্রভাব দেখা যায় এদেশের পতাকাতেও। ৬০-৭০-এর দশক থেকেই এই দেশের আয়ের উৎস ছিল ফসফেট খনি। কিন্তু অতিরিক্ত শোষণের কারণে এই আয়ের উৎসও শেষ হয়ে যায়। বর্তমানে এখানে প্রচুর পরিমাণে নারিকেল উৎপন্ন হয়।
পর্যটকরা নাউরুতে বিশেষ যান না
নাউরুতে পর্যটকের ভিড় বিশেষ হয় না। আর এই কারণেই এর সৌন্দর্য এবং স্নিগ্ধতা অটুট রয়েছে।
এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১১ সালে এই দ্বীপ রাষ্ট্রে মাত্র ২০০ জন পর্যটক গিয়েছিলেন। বিদেশিদের ভিড় কম বলেই এখানকার মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে এবং সুখে জীবনযাপন করেন। ২০১৮ সালের আদমশুমারি অনুসারে, এখানকার জনসংখ্যা ছিল মাত্র ১১ হাজারের কাছাকাছি। আজও এই দেশ সম্পর্কে খুব কম মানুষই হয়তো খোঁজ খবর রাখেন।
নাউরু বিমানবন্দর
এত কম জনসংখ্যা সত্ত্বেও এখানে একটি বিমানবন্দর রয়েছে। যার নাম ‘নাউরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’। এখানকার অধিকাংশ মানুষই খ্রিস্টান। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা কোনো ধর্ম মানেন না।