আমেরিকানরা সরকারকে কর দিয়ে থাকেন। সে জন্য তারা বেশি বেশি সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। তবে অবৈধ ও নথিপত্রহীনরা আমেরিকান করদাতাদের অর্থে পরিচালিত বিভিন্ন সুবিধা পাবেন না। আগে অনেক নথিপত্রহীন সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও এখন আর এই সুবিধা পাবেন না। নথিপত্রহীনদের এসব সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। ১০ জুলাই হোয়াইট হাউস থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, করদাতাদের অর্থায়নে পরিচালিত সুবিধাগুলো শুধু আমেরিকান নাগরিকদের জন্য, অবৈধদের জন্য নয়।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে প্রশাসন ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা হলো আমেরিকার করের অর্থ দিয়ে সরকার যেসব সুবিধা দেয়, তা শুধু আমেরিকান নাগরিকদের জন্য- অবৈধ অভিবাসীদের জন্য নয়। এই পদক্ষেপ আমেরিকান নাগরিকদের জন্য প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলারের সুবিধা সংরক্ষণ করে।
বার্তায় আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অধীনে পরিশ্রমী আমেরিকানদের আর অবৈধদের জন্য সুবিধার খরচ বহন করতে বাধ্য করা হবে না। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সেবা। যেমন দ্য ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস ১৩টি অতিরিক্ত পাবলিক প্রোগ্রাম থেকে অবৈধ অভিবাসীদের সীমাবদ্ধ করছে। এর মধ্যে রয়েছে হেড স্টার্ট, স্বাস্থ্যকর্মী বৃত্তি ও ঋণ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সাবস্টেন্স অ্যাবিউস সাপোর্ট, পরিবার পরিকল্পনা এবং আরও অনেক কিছু।
দ্য ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশন পোস্ট-সেকেন্ডারি ক্যারিয়ার এবং কারিগরি শিক্ষা প্রোগ্রামে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য বিনা মূল্যে শিক্ষাদান বন্ধ করছে। ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার ফেডারেল অর্থায়নে পরিচালিত খাদ্য সহায়তা প্রোগ্রাম থেকে অবৈধ অভিবাসীদের সীমাবদ্ধ করছে। ডিপার্টমেন্ট অব লেবার অবৈধ অভিবাসীদের ফেডারেল কর্মী উন্নয়ন সংস্থান এবং অনুদান অ্যাক্সেস করতে বাধা দিচ্ছে। এখন থেকে তারা এই সুবিধা নিতে পারবেন না, কারণ অবৈধরা কাজ করতে পারবেন না। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস দীর্ঘদিনের ত্রুটিগুলো বন্ধ করছে, যা অবৈধ অভিবাসীদের করদাতাদের অর্থায়নে সুবিধা অ্যাক্সেস করার অনুমতি দিয়েছে।
এসব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করার কারণে এখন থেকে আর নথিপত্রহীনরা এসব ক্ষেত্রের সুবিধা পাবেন না। ফলে আগামী দিনে নথিপত্রহীনদের এ দেশে সেবা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক সীমিত হয়ে গেল। সেই সঙ্গে তাদের কাজ করার সুযোগও বন্ধ হচ্ছে। নিয়ম হচ্ছে যাদের কাজ করার অনুমতি নেই, তারা এখানে কাজ করতে পারেন না। তাই অনেকেই লুকিয়ে বেআইনি কাজ করেন।
মার্কিন সরকার মনে করছে, এসব সুবিধা না পেলে অবৈধ নথিপত্রহীনরা এ দেশে আর থাকবেন না এবং নতুন করে যারা আসার পরিকল্পনা করছেন, তারাও আসতে নিরুৎসাহিত হবেন। এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ অভিবাসী ও নাগরিকদের অর্থ যাতে কোনো অবৈধ কিংবা নথিপত্রহীন অভিবাসীকে দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেন।