বাংলাদেশকে ইউরোপের সমান বানাতে পাঁচ বছরের বেশি সময় লাগবে না বলে মন্তব্য করেছেন কবি, লেখক ও গবেষক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, অবশ্য তার জন্য প্রয়োজন আমাদের মানব সম্পদসহ সব সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রজন্ম একাডেমির উদ্যোগে ‘আওয়ামী দুর্বৃত্তায়ন ও লুটপাটে বিধ্বস্ত অর্থব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে বর্তমান সরকারের করণীয়’- শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কবি ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসকে কাজে লাগাতে হবে। আওয়ামী সরকার এতদিন আমাদের তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসকে দাবিয়ে রেখেছিল। সেটা এতদিন পর মাটি ফুড়ে বেরিয়ে এসেছে। এই প্রজন্ম আজ দেশের যে কোনো স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যবদ্ধ শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলেই আমাদের দেশ একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। পার্শ্ববর্তী দেশের চাপ আছে। আমাদের মৌলিক প্রাপ্তিগুলো যদি তাদের কাছ থেকে সহজ প্রক্রিয়ায় না পাই সেক্ষেত্রে আমাদের দাবিগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। আমাদের দেশে অনেক রকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে চক্রান্তকারীরা কিছুই করতে পারবে না। দেশে দীর্ঘসময় ধরে লুটপাট হয়েছে, দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে।
অর্থনীতিসহ সব ক্ষেত্রে বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ থেকেও আমরা অল্প সময়ের মধ্যে মুক্তি পেতে পারি যদি আমাদের তরুণ ছাত্রসমাজ সোচ্চার থাকে। তিনি দুঃসময়ে প্রফেসর ইউনূসের পাশে থাকার জন্য প্রজন্ম একাডেমির সদস্যদের ধন্যবাদ জানান এবং তাদের বর্তমান সরকারে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য গণতান্ত্রিক শক্তির উত্থান প্রয়োজন। আমাদের তরুণ প্রজন্ম যে দুঃসাহসী ভূমিকা রেখে রাষ্ট্রীয় পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। একে এগিয়ে নিতে হলে রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধরে রাখতে হবে এবং গণতান্ত্রিক শক্তির বিকশিত হওয়ার প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ফ্যাসিস্ট শক্তি বনাম জনগণ। এখানে জনগণের জয় হয়েছে। আগামীদিনে দেশ পরিচালনায় জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৭ দফা বাস্তবায়ন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও দৈনিক খোলা বাজার পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক জহিরুল ইসলাম কলিম বলেন, বানভাসী মানুষের পাশে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক রাষ্ট্রদ্রোহীতা আইন পাস করে তাদের সব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আওয়ামী লুটেরাদের সব অর্থ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা রাখতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার থাকতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দমনপীড়নে তরুণ সমাজ পিষ্ট ছিল। এখন কাজ করার অবারিত সুযোগ এসেছে। প্রজন্ম একাডেমি থেকে দাবি তোলা হয়, যাতে বর্তমান সরকারে তাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়।
প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি লেখক ও গবেষক কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীনের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মিজানুর রহমান, প্রজন্ম একাডেমির অর্থ সম্পাদক আবু হায়দার, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম হোসেন, যুবনেতা হারুন অর রশীদ, প্রজন্ম একাডেমির সদস্য মো. নবী হোসেন, শারমিন রিনা, খলিল মৃধা প্রমুখ।