শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন

দুটি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে গোটা এক দেশ

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪

নির্মাণাধীন কোনো সেতুর পিলারের মতো একটি স্থাপনার ওপর দাঁড়িয়ে আছে গোটা একটি দেশ। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এ দেশের রয়েছে নিজস্ব পতাকা, পাসপোর্ট ও কারেন্সি। এর অবস্থান সাগরের মাঝখানে হওয়ায় নাম রাখা হযেছে সিল্যান্ড। দাবি করা হয়— এটি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র দেশ।

সিল্যান্ডের অবস্থান ব্রিটিশ সমুদ্র উপকূল থেকে ছয় মাইল দূরে। প্রায় ৫০ বছর ধরে এখানে টিকে আছে এই দেশটি। এটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেন কর্তৃক স্থাপিত একটি সামুদ্রিক দুর্গ। যা একজন ব্যক্তির দখলে রয়েছে, ব্রিটিশ সরকার অনেক চেষ্টা করলেও আইনি মারপ্যাঁচে এটিকে আর দখলে নিতে পারেনি। কিন্তু কেন?

প্রথমদিকে একে ডাকা হতো ‘রাফস টাওয়ার’ নামে। এর কাজ ছিল তিনটি। শত্রু বিমানকে প্রতিহত করা। ইংল্যান্ডের জলসীমায় জার্মানরা মাইন বসাচ্ছে কিনা, তা খেয়াল রাখা এবং শত্রু বাহিনীর সম্পর্কে রিপোর্ট দেওয়া। ১৯৫৬ সালে রয়াল নেভি একে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে।

যুদ্ধশেষে যখন সিল্যান্ডের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়, তখন রয়েল নেভি তাদের সমস্ত সরঞ্জাম নিয়ে এখান থেকে চলে যায়। ফলে এই অবকাঠামোটি পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে থাকে কয়েক বছর।

এরপর ১৯৬৭ সালে বেতার সম্প্রচারকারী রয় বেটস এর দখল নেন। কিন্তু আইনি মারপ্যাঁচে ব্রিটিশ সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। কারণ, এই অবকাঠামোর অবস্থান আন্তর্জাতিক জলসীমায়। আর পৃথিবীর কোনো দেশেরই এই আন্তর্জাতিক জলসীমার মালিকানা নেই।

এর ফলে যে কেউ এখানে ইচ্ছা করলেই ঘাঁটি গেড়ে বসতে পারবে। এ ছাড়া এটি ছিল তৎকালীন ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বাইরে। ফলে চাইলেও রয়েল নেভি এখানে কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারেনি।

এরপর ১৯৭৫ সালে সিল্যান্ড থেকে রাজ্যের সংবিধান প্রকাশ করা হয়। ধীরে ধীরে কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের পতাকা, জাতীয় সংগীত, ডাক টিকিট, মুদ্রা ও পাসপোর্ট চালু করা হয়।

২০১২ সালে রয় বেটস মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে তার দুই ছেলে এর দায়িত্বে রয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর কোনো দেশ সিল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব ও বৈধতার স্বীকৃতি না দিলেও এটি বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। মাত্র ৫৫০ বর্গ মিটারের এই রাষ্ট্রটি বর্তমানে পর্যটন ও বিভিন্ন মিউজিক ভিডিও ধারণের স্থানে পরিণত হয়েছে।

গোটা সিল্যান্ডে রয়েছে একটি মাত্র ভবন ও একটি হেলিপ্যাড। বর্তমান কর্তৃপক্ষের দাবি অনুসারে, ২৭ জন মানুষ এখানে বাস করেন। ইন্টারনেটে সিল্যান্ডের নিজস্ব একটি ওয়েবসাইটও রয়েছে। সেখানে সিল্যান্ডের নানা স্মারক, ডাকটিকিট, মুদ্রা ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যায়।

এ ছাড়াও আপনি চাইলে সিল্যান্ডের লর্ড, ব্যারন, কাউন্ট প্রভৃতি পদবি কিনতে পারবেন। সেই সাথে সিল্যান্ডের পাসপোর্ট করে চাইলে ঘুরেও আসতে পারবেন দেশটি থেকে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com