1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে শীর্ষ পর্যটন গন্তব্য এখন মালয়েশিয়া
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০৭:৫০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে শীর্ষ পর্যটন গন্তব্য এখন মালয়েশিয়া

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পর্যটন মানচিত্রে দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে থাকা থাইল্যান্ড ২০২৫ সালে এসে সেই অবস্থান হারাতে বসেছে। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসের পরিসংখ্যান বলছে, মালয়েশিয়া পর্যটক আগমনের দিক থেকে থাইল্যান্ডকে পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে।

ট্যুর অপারেটর ও পর্যটন বিশ্লেষকরা বলছেন, মালয়েশিয়ার কৌশলগত ও দূরদর্শী পরিকল্পনাই তাদের এই অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি। উদার ভিসানীতির মাধ্যমে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে দেশটিকে। বিশেষ করে চীন ও ভারতের পর্যটকদের জন্য ভিসামুক্ত ভ্রমণ সুবিধা যথাক্রমে ২০৩৬ ও ২০২৬ সাল পর্যন্ত চালু করায়, এসব বৃহৎ উৎস দেশ থেকে পর্যটক সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি অবকাঠামো, বিমানসংযোগ এবং সার্বিক সেবা খাতে উন্নয়নের ফলে মালয়েশিয়া দ্রুতই শীর্ষে উঠে এসেছে।

অন্যদিকে থাইল্যান্ডের প্রধান পর্যটক উৎস ছিল চীন। কিন্তু সাম্প্রতিক নিরাপত্তা উদ্বেগ, বিশেষ করে চীনা অভিনেতা জিং ওয়াংয়ের অপহরণ ঘটনার পরে, চীনা পর্যটকদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বিকল্প গন্তব্য হিসেবে বেছে নিচ্ছেন মালয়েশিয়াকে। পাশাপাশি, থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক অস্থিরতার গুজব ও ভিসা প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করছে।

বাংলাদেশি পর্যটকদের মধ্যেও মালয়েশিয়ার জনপ্রিয়তা দ্রুত বেড়ে চলেছে। চট্টগ্রাম এভিয়েশন ক্লাবের উপদেষ্টা ইখতিয়ার ইসলাম সাবিত বলেন, “২০১৯ সালেও থাইল্যান্ড বাংলাদেশিদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য ছিল। কিন্তু এখন ভিসা পেতে ৪৫ কর্মদিবস লাগছে, অনেক আবেদন রিফিউজ হচ্ছে। এদিকে মালয়েশিয়া মাত্র ৫-৬ দিনের মধ্যে অনলাইনে ভিসা দিচ্ছে। ফলে মালয়েশিয়া এখন বাংলাদেশিদের জন্য সুবিধাজনক ও পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে।”

থাইল্যান্ডের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশটিতে সর্বোচ্চ ৪ কোটি আন্তর্জাতিক পর্যটক এসেছিল। সে বছর থাইল্যান্ড বিশ্বের অষ্টম শীর্ষ পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হয়। এরপর করোনা মহামারিতে ভাটা পড়লেও পুরনো সংখ্যা পুনরুদ্ধার সম্ভব হয়নি। ২০২৫ সালে থাইল্যান্ড ৩ কোটি ৮০ লাখ পর্যটকের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও বাস্তবতায় তা কমিয়ে ৩ কোটি ৭০ লাখে নামিয়ে আনতে হয়েছে। জানুয়ারি থেকে মে ২০২৫ পর্যন্ত পর্যটক আগমন ২.৭% কমেছে, আর শুধু মে মাসেই এই হ্রাসের হার দাঁড়িয়েছে ১৩.৯৩%।

কুয়ালালামপুর বুকিত বিনতাং : রাত জেগে ওঠে আনন্দ-ভোজনে
কুয়ালালামপুর বুকিত বিনতাং : রাত জেগে ওঠে আনন্দ-ভোজনে

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

চীনা পর্যটকদের আগমন ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে আগের বছরের তুলনায় ৩২.৭১% হ্রাস পেয়েছে। বিপরীতে, মালয়েশিয়ায় চীনা পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। জানুয়ারি ১ থেকে জুন ২২, ২০২৫ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় চীনা পর্যটকের সংখ্যা দাঁড়ায় ২.১৯ মিলিয়নে, যা থাইল্যান্ডের (২.১৭ মিলিয়ন) চেয়ে বেশি।

২০১৯ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে থাইল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছিল (৩.৯৮ কোটি), এরপর ছিল মালয়েশিয়া (২.৬১ কোটি), ভিয়েতনাম (১.৮০ কোটি) এবং ইন্দোনেশিয়া (১.৫৫ কোটি)। ২০২৫ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকেই মালয়েশিয়া ১.১০ কোটি বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করে শীর্ষে উঠে এসেছে, যেখানে থাইল্যান্ড ছিল প্রায় ৯৫ লাখ পর্যটক নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে।

বাংলাদেশে উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির কারণে বিদেশ ভ্রমণের হার দ্রুত বাড়ছে। মালয়েশিয়া ইতোমধ্যে ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৩ লাখ পর্যটক টানার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে। ২০২৪ সালে দেশটিতে ১ লাখ ৪৪ হাজার বাংলাদেশি পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। অপরদিকে, থাইল্যান্ডে বাংলাদেশিদের উপস্থিতি দিন দিন কমছে। ২০১৯ সালে যেখানে প্রায় ১.৪০ লাখ বাংলাদেশি থাইল্যান্ডে গিয়েছিল, সেখানে ২০২৪ সালে বাংলাদেশ শীর্ষ ২০ উৎস দেশের তালিকায়ও ছিল না।

ভারতের পর্যটন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থাইল্যান্ড বাংলাদেশের বিশাল বাজার ধরতে পারত। কিন্তু ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে চালু হওয়া অনলাইন ভিসা ব্যবস্থায় দৈনিক গড়ে যেখানে আগে ৮০০ ভিসা দেওয়া হতো, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৫০-৩৬০-এ। এতে করে অনেক বাংলাদেশি পর্যটকই ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com