চিলাহাটি হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি রুটে ট্রেন আগেও চলত, তবে ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর থেকে তা বন্ধ ছিল। দীর্ঘ ৫৬ বছর পর গত বছরের ১ জুন মিতালী এক্সপ্রেস এই রুটে যাত্রা শুরু করেছে। দ্রুতই দার্জিলিং ও সিকিমগামী যাত্রীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ট্রেনটি। জেনে নেওয়া যাক মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেনটির বিস্তারিত।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ছেড়ে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত হয়ে মিতালী এক্সপ্রেস পৌঁছায় ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সোম ও বৃহস্পতিবার যাত্রা করে, নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছেড়ে আসে রোব ও বুধবার। সম্পূর্ণ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ট্রেনটি বিরতিহীন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস সম্পন্ন করতে হয় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও নিউ জলপাইগুড়িতে। তবে মাঝে চিলাহাটিতে ৩০ মিনিটের কারিগরি বিরতি থাকে। এটি একটি আন্তর্জাতিক পরিষেবা বলে মাঝপথে ট্রেন থেকে নামা যায় না। প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে ট্রেনটি সময় নেয় সাড়ে ১১ ঘণ্টা। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৫০ মিনিটে। নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছায় পরদিন ভারতীয় সময় সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ফিরতি যাত্রা করে ভারতীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছায় রাত ১০টা ৩০ মিনিটে।
মিতালী এক্সপ্রেসের আসনসংখ্যা ৪৫৬। ১ জুলাই থেকে বর্ধিত ভ্রমণকর কার্যকর হওয়ায় মিতালী এক্সপ্রেসের ভাড়া বাড়ছে। এসি বার্থে যাতায়াতে এখন থেকে ভাড়া গুণতে হবে ৬ হাজার ৫৭০ টাকা। এসি সিটের নতুন ভাড়া হবে ৪ হাজার ১৭৫ টাকা। এসি চেয়ারের ভাড়া ৩ হাজার ৭৮৫ টাকা করা হয়েছে। পাঁচ বছর পর্যন্ত বয়সী শিশুদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। তবে এই ভাড়া শুধু যাওয়ার, ফিরতি পথে ভ্রমণ কর না থাকায় ভাড়া কমে আসবে।
মিতালী এক্সপ্রেসের টিকেট অনলাইনে পাওয়া যায় না। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে সশরীর টিকিট কিনতে হবে। কেনার সময় অবশ্যই ভারতীয় ভিসাসহ মূল পাসপোর্ট থাকতে হবে। ভিসায় অবশ্যই ‘বাই রেল নিউ জলপাইগুড়ি’ থাকতে হবে। পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে ছয় মাসের বেশি।
একজন সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের পাসপোর্ট নিয়ে একজনই অন্যদের জন্য টিকিট কাটতে পারবেন। ৩০ দিন আগে থেকে এই ট্রেনের টিকেট পাওয়া যায়। কমলাপুর স্টেশন থেকে ফিরতি টিকিটও কাটতে পারবেন। তবে ফিরতি টিকিটের কোটা ঢাকা থেকে কম।
ট্রেনে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে, তবে মেনু সীমিত। যাওয়ার সময় রাতের খাবার পাওয়া যায়, সকালে ভারতীয় অংশে ট্রেন প্রবেশের পর মিলবে নাশতা। ফিরতি পথেও দুপুরের খাবার, চা-কফি পাওয়া যাবে।