মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভার্জিনিয়ার গলফ ক্লাবে একটি ব্যয়বহুল ডিনারের আয়োজন করেছেন, যেখান থেকে মাথাপিছু ১৫ লাখ ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে। এই ডিনারের মূল উদ্দেশ্য ছিল ট্রাম্পের সমর্থনে একটি ‘সুপার প্যাক’, ‘মাগা ইনক.’-এর জন্য টাকা তোলা। ডিনারের সহ-আয়োজক ছিলেন ডেভিড স্যাকস, যিনি হোয়াইট হাউসের ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং এআই বিষয়ক উপদেষ্টা। এই ডিনার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বড় ধরনের বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ইউএসএ টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, উপদেষ্টা ডেভিড স্যাকস ট্রাম্পের সরকারের ক্রিপ্টো নীতি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার নিজেরও ক্রিপ্টো ব্যবসায় প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। যদিও তিনি ২০০ মিলিয়ন ডলারের ক্রিপ্টো সম্পদ বিক্রি করে দিয়েছেন, তবু তার ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং সরকারি দায়িত্বের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মার্কিন সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন ট্রাম্পের এই ডিনারকে ‘অনৈতিক’ বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ডেভিড স্যাকসের ব্যক্তিগত বিনিয়োগ থাকায় তিনি নিরপেক্ষভাবে ক্রিপ্টো নীতি তৈরি করতে পারছেন না। এছাড়া হোয়াইট হাউস তাকে এই বিনিয়োগ রাখার অনুমতি দিয়েছে, যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ট্রাম্পের ক্রিপ্টো ব্যবসা
ট্রাম্পের পরিবার ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসায় বড় ভূমিকা রাখছে। তাদের একটি ক্রিপ্টো টোকেন রয়েছে, যার নাম ‘$TRUMP’। এছাড়া, তারা ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফিনান্সিয়াল ইনক.’ নামে একটি ক্রিপ্টো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত।
আগামী ২২ মে আরেকটি ডিনারের আয়োজন করা হবে, যেখানে ‘$TRUMP’ টোকেনের বড় ক্রেতারা ট্রাম্পের সঙ্গে ডিনার করার সুযোগ পাবেন। এই ঘটনাকে অনেকে ‘টাকার বিনিময়ে প্রভাব কেনা’ হিসেবে দেখছেন।
সন্দেহজনক লেনদেন
এই ডিনারের পর আরও কিছু ঘটনা সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, চীনের ধনী ব্যবসায়ী জাস্টিন সান ৭৫ মিলিয়ন ডলারের ‘$TRUMP’ টোকেন কিনেছেন। এরপর তার বিরুদ্ধে থাকা একটি জালিয়াতির মামলা হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে।
এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ট্রাম্পের পরিবারের ২ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এসব ঘটনা বিদেশি প্রভাব এবং দুর্নীতির আশঙ্কা তৈরি করছে।
ডেমোক্র্যাট দলের নেতারা এসব ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন। সিনেটর অ্যাডাম শিফ এবং অন্যান্যরা এই বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
হাউস ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিটির কিছু সদস্য ক্রিপ্টো নিয়ে আলোচনার সময় প্রতিবাদে সভা ছেড়ে চলে গেছেন। তারা বলেন, ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত লাভের জন্য প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ব্যবহার করছেন।