রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে বাংলাদেশিদের ভবিষ্যৎ

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

উন্নত জীবনের আশায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অভিবাসন প্রত্যাশীদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র। সেই স্বপ্নে এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মার্কিন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি। এতদিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকার স্বপ্ন নিয়ে কঠিন পথ পার করেছিলেন বহু উদ্বাস্তু। কিন্তু তাদের অনেককেই এবার খোয়াতে হচ্ছে মাথা গোঁজার শেষ আশ্রয়স্থল।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প পা রাখার তিনদিনের মধ্যেই অবৈধ অভিবাসীদের খুঁজে বের করতে ধরপাকড় শুরু করেছে। ইতিমধ্যে হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তারও করেছে তার প্রশাসন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের প্রকৃত সংখ্যা কত তা নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। কারও মতে ১ কোটি, আবার কারও মতে দেড় কোটিরও বেশি।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি:
এবারের মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্প বারবারই তুলে এনেছেন অভিবাসন সংকটের নানা দিকের কথা। তার একাধিক বক্তৃতায় স্থান পেয়েছে অভিবাসন নীতি। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন অবৈধ অভিবাসন হলো যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের কারণ। তাইতো তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে যেকোনো মূল্যে ‘অনুপ্রবেশকারী’ মুক্ত করতে অঙ্গীকার করেছেন।

আবার একাধিকবার হুংকার দিয়ে রেখেছেন যে, ‘আমেরিকা শুধু আমেরিকানদের’, অন্য অবৈধ অভিবাসীদের এখানে স্থান নেই। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে সুন্দরভাবে তিনি বোঝাতে সমর্থ হয়েছেন যে, একমাত্র তিনিই অভিবাসন সমস্যার সমাধান করতে পারবেন অন্য কেউ করতে পারবেন না। যা এবারের ভোট বাক্সে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা প্রমাণ করে দিয়েছেন তাকে নির্বাচিত করে। তাইতো এখন অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে এত বড় বড় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।

গুয়ান্তানামো বে কারাগার ও ট্রাম্পের হুমকি:
কিউবার কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারের নাম শুনে ভয়ে কেঁপে ওঠে না এমন লোক হয়তো পাওয়া মুশকিল। এবার সেই জেলের অন্ধকার কুঠুরিতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের পাঠাবেন বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গুয়ান্তানামো কারাগার হলো বিশ্বের সবচেয়ে দুর্ভেদ্য ও নিশ্ছিদ্র বন্দিশালাগুলোর একটি। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের এ কারাগারে রাখা হয়।

এই কারাগারকে নাজিদের ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্প’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়। ভারতে ব্রিটিশ শাসনে আন্দামানের জেলে যেভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওপর অত্যাচার চালানো হতো, গুয়ান্তানামো কারাগারে চালানো অত্যাচার এর চেয়ে কম নয়। ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন অবৈধ অভিবাসীদের গুয়ান্তানামো বে কারাগারে রাখবেন তিনি। তার জন্য ইতিমধ্যে তিনি প্রায় ৩০ হাজার বন্দিদের থাকার ব্যবস্থা করে রেখেছেন।

গুয়ান্তানামো কারাগার কতটা ভয়ংকর?
যুক্তরাষ্ট্রের ৯/১১ হামলার পর দক্ষিণ কিউবায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে কারাগারটি স্থাপন করা হয়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ডব্লিউ বুশ। ওই হামলার পর শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত এই ব্যক্তিদের অনেককেই আবার মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এই গোপন বন্দিশালায়ও রাখা হয়েছিল। সেখানে বুশ প্রশাসনের অনুমোদনে তাদের ওপর জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্বিচারে নির্যাতন চালানো হতো বলে নানা অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাস দমনের নামে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমার্থক হলো কিউবার এই গুয়ান্তানামো বে কারাগারটি।

অভিবাসীদের নিয়ে মার্কিন জনগণের অসন্তোষ:
কয়েক বছর ধরে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। বারবার অভিযোগ উঠেছে এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাড়ছে। প্রভাব পড়ছে চাকরি ক্ষেত্রে। প্রভাব পড়ছে অর্থনীতিতেও। এই ইস্যুতে চাপে পড়তে হয়েছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকারকেও। মার্কিন জনমনে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ। তাদের মনের মধ্যে ঢুকে গেছে অভিবাসী হলো মূল সমস্যা। আসলে কি তাই? এটা সত্য অভিবাসী থাকার ফলেই মার্কিন বাজারে সস্তায় শ্রম মিলছে। যার ফলে বিভিন্ন সেক্টর তারা নগদ সুফল হাতেনাতে পাচ্ছে।.

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com