1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
জিওজাইগো ভ্যালি : পৃথিবীর স্বর্গ
বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

জিওজাইগো ভ্যালি : পৃথিবীর স্বর্গ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১

পৃথিবীর স্বর্গ কোনটি?

এই প্রশ্নে সকলেই হয়তো উত্তর দিবেন-কাশ্মির। মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর কাশ্মিরকে ভূ-স্বর্গ আক্ষা দেয়ার পর থেকে কয়েক শতাব্দী ধরে বিশ্বব্যাপী মানুষ তাই জেনে আসছে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন অনেক স্থান রয়েছে যা সৌন্দর্যের দিক দিয়ে কাশ্মীরের ভূ-স্বর্গের তকমায় ভাগ বসাতেই পারে। তেমনই একটি স্থান হলো চীনের ‘সিচুয়ান’ প্রদেশের ‘জিওজাইগো ভ্যালি’। হিমালয়ের গহীনে লুকিয়ে থাকা এই অঞ্চলটি চীনাদের নিকট ভূ-স্বর্গ হিসেবে বিবেচিত। জিওজাইগো ভ্যালির মাত্র ৫০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে রয়েছে ১৭টি অসাধারণ ঝর্ণা, ১১৪টি বিষ্ময়কর স্বচ্ছ পানির লেক এবং সুন্দর সুন্দর বনাঞ্চল। জিওজাইগো পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মালভূমিতে থাকা বিষ্ময়কর এক জলের রাজ্য।

জিওজাইগো ভ্যালিস্বচ্ছ পানির লেক। ছবি : উইকিপিডিয়া

পৃথিবীর স্বর্গ জিওজাইগো ভ্যালি

চীনাদের মধ্যে একটা কথা প্রচলিত আছে -‘যদি পৃথিবীতে কোনো স্বর্গ থেকে থাকে তবে সেটা হলো জিওজাইগো ভ্যালি’। আর সে কারণেই এখানের নান্দনিক হ্রদগুলো চীনের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। অতীতে এই উপত্যকাটি ছিল সমুদ্রের তলদেশে। হিমালয় পর্বত তৈরির সময় সমুদ্রের তলদেশের মাটি ভাজ হয়ে এই পর্বতের আকার ধারণ করে। তিব্বত মালভূমির এক প্রান্তে থাকা ” মিন” পর্বতমালার একটি বিশেষ অংশ হলো জিওজাইগো ন্যাশনাল পার্ক। এখানের লেকগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত এবং এর চারপাশে বর্ণিল বনভূমি। আর লেকের পানি মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অসম্ভব সুন্দর জলপ্রপাত দিয়ে ৬ হাজার ফুট নিচে নেমে গেছে। জলপ্রপাতের এই প্রবাহিত জলই জিওজাইগোর প্রাণ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো মাত্র ৪০ বছর পূর্বে চীনা সরকারের ধারণাই ছিলো না যে জিওজাইগোতে এমন মায়াময় উপত্যকা রয়েছে।

জিওজাইগো ভ্যালি, চীনজিওজাইগো ভ্যালি, চীন। ছবি : পিন্টারেস্ট

অত্যন্ত দুর্গম পথ

নিকটতম শহর থেকে এখানে বাস দিয়ে আসতে ১০ ঘন্টা সময় লাগে। আর অতীতে তাও ছিল না। অতীতে শুধু ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে আসা যেত। ১৯৬০ এর দশকে কয়েকজন কাঠুরিয়া এখানে কাঠ কাটতে এসে এর দেখা পায় এবং ১৯৭৫ সালে চীনা সরকারের বন বিভাগের কয়েকজন লোক এখানকার কাঠ ও বনজ সম্পদ জরিপ করতে এসে এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়। আর তখনই উপলব্ধি করে এই উপত্যকা শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৃক্ষেই নয়, এটি অনেক প্রাণীর অভয়ারণ্য। এখানে রয়েছে ১৪০ প্রজাতির পাখি আর বহু কাঠবিড়ালি। এছাড়াও বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী অতিকায় পাণ্ডা ও নাক বোচা বানরও রয়েছে এই জিওজাইগোতে। এছাড়াও রয়েছে অতি প্রাচীন বৃক্ষ। তাই এই স্থানটি রক্ষা করতে ১৯৮২ সালে চীনা সরকার এটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। এখানে পূর্বে ৯টি গ্রাম ছিল, যাদের নামানুসারে এই উপত্যকার নাম করা হয় ‘জিওজাইগো ভ্যালি’, যার অর্থ ‘নয় গ্রামের উপত্যকা’। কিন্তু বর্তমানে এখানে ৭টি গ্রাম অবশিষ্ট রয়েছে।

জিওজাইগো ভ্যালি, চীন। ছবি : লোনলি প্লানেট

এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের লেক।একেক লেকের পানি ভিন্ন ভিন্ন রঙের দেখায়। মূলত এটি হয় এর নিচে থাকা শৈবালের কারণে। এছাড়াও এখানে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রসস্থ চুনা পাথরের জলপ্রপাত। পূর্বে এটি জনমানব শূন্য হলেও এখন এখানে প্রচুর পর্যটক আগমনের কারণে বর্তমানে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হুমকির সম্মুখে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com