শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন

জাপানে মেক্সট স্কলারশিপ নিয়ে বিনা খরচে লেখাপড়া

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪

পড়ালেখার মানের কারণে অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পছন্দের অন্যতম দেশ জাপান। দেশটিও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপ দেয়। এর একটি হলো মেক্সট স্কলারশিপ। এ স্কলারশিপের মাধ্যমে টিউশন ফি ছাড়াই টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। স্নাতকোত্তরের সময়সীমা দুই বছর ও পিএইচডির জন্য তিন বছর।

আবেদন বা ভর্তি হতেও কোনো ফি লাগে না। মাসিক উপবৃত্তি, বিমানে যাতায়াত খরচসহ নানা সুযোগ-সুবিধা মেলে এ বৃত্তি পেলে। আইইএলটিএস কিংবা টোয়েফল ছাড়াই করা যায় আবেদন। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি হতে হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

‘মেক্সট’ আসলে কী

জাপানে পড়াশোনার জন্য অন্যতম একটি বৃত্তি হলো ‘মেক্সট’/ MEXT। এটি আসলে MECSST। শব্দটি প্রকৃতপক্ষে Ministry of Education, Culture, Sports, Science and Technology। বড়সড় শব্দটির সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ‘মেক্সট’। ১৯৫৪ সাল থেকে শুরু করে বিশ্বের প্রায় ১৬০টির মতো দেশ থেকে আসা ছাত্রদের জন্য এ বৃত্তি দেয় জাপান সরকার। জাপান সরকার প্রদত্ত বৃত্তিগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে খ্যাতনামা আর সবচেয়ে সম্মানিত। এ বৃত্তির জন্য ভিসা পেলে ভিসাতে লেখা থাকে ‘Govt. Scholar’। জাপানের গবেষণার মাধ্যমে বৃত্তিপ্রাপ্তির দেশ এবং জাপানের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতু হয়ে ওঠা মানবসম্পদকে উৎসাহিত করা এবং উভয় দেশ ও বৃহত্তর বিশ্বের উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যেই দেওয়া হয় এ বৃত্তি।

জাপান সরকারের সেই মেক্সট বৃত্তির জন্য আবেদন গ্রহণ চলছে। ২০২৪ সালে জাপানে গবেষণা (স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি), স্নাতক, কলেজ অব টেকনোলজি এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং প্রোগ্রামে যুক্ত হতে চাইলে আবেদন করতে পারেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গবেষণা পর্যায়ে (মাস্টার্স ও পিএইচডি) ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামের জন্য ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে। নির্বাচিতদের জাপান দূতাবাসে অনুষ্ঠেয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের জন্য কিছু শর্তের কথা উল্লেখ আছে।

বৃত্তিপ্রাপ্তদের নিজ নিজ দেশ থেকে জাপানে আসার জন্য ও ঠিক সময়ে ডিগ্রি শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য বিমানভাড়া মেক্সট বহন করে থাকে। অন্য অনেক বৃত্তিতেই এ সুবিধা সচরাচর থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রকম টিউশন ফি, পরীক্ষার ফি বা অন্যান্য কোনো ফি দিতে হয় না। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর যাবতীয় ফি মওকুফ এবং পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি ও অন্যান্য ব্যয়ভার বহন করে দেশটি।

গবেষণা পর্যায়ে (মাস্টার্স ও পিএইচডি) ৩০ জন, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ২৫ জন, কলেজ অব টেকনোলজি প্রোগ্রামের জন্য ১৫ জন এবং স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজের জন্য ৫ জনকে প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হবে। নির্বাচিতদের জাপান দূতাবাসে অনুষ্ঠেয় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।

*যেসব বিষয় নিয়ে পড়া যাবে—

গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, আর্থ সায়েন্স, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেম অ্যান্ড কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইকোনমিকস, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, গণিত ও কম্পিউটিং সায়েন্স, লাইফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি।

সুযোগ-সুবিধা—

*বৃত্তিপ্রাপ্তদের কোনো টিউশন ফি বা ভর্তি ফি দেওয়া লাগবে না।

*আবেদন করতেও লাগবে না কোনো ফি।

*আসা-যাওয়ার বিমান খরচও মিলবে।

*শিক্ষার্থীদের আইইএলটিএস বা টোয়েফল স্কোর দেখাতে হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা ও পরীক্ষা হয়েছে, সেটির প্রমাণ লাগবে

যোগ্যতার মানদণ্ড—

*জাপানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে—এমন যেকোনো দেশের আন্তর্জাতিক ছাত্র হতে হবে।

*মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই ১৯৯০ সালের ২ এপ্রিলের পরে জন্মগ্রহণ করতে হবে।

*আন্ডারগ্র্যাজুয়ে প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই ২০০০ সালের ২ এপ্রিলের পরে জন্মগ্রহণ করতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

*ট্রেনিং কলেজ প্রোগ্রামের জন্য আবেদনকারীদের অবশ্যই ২০০০ সালের ২ এপ্রিলের পরে জন্মগ্রহণ করতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

*একজন কতটি আবেদন করতে পারবেন

কোনো প্রার্থী একাধিক প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন না। যেকোনো একটি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র যেমন সনদ, মার্কশিট, ইত্যাদি মন্ত্রণালয়ে যথাসময়ে জমা দিতে ব্যর্থ হলেও আবেদন বাতিল হতে পারে।

*শিক্ষার্থীদের আইইএলটিএস বা টোয়েফল স্কোর দেখাতে হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা ও পরীক্ষা হয়েছে, সেটির প্রমাণ লাগবে

প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এরপর অনুষ্ঠিত হবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় মূলত ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতা যাচাই করা হবে। মাস্টার্স বা পিএইচডিতে আবেদনের জন্য মেক্সটের নিজস্ব সিজিপিএর একটি মানদণ্ড থাকতে হয়। জাপানের সেশনগুলো দুটো সেমিস্টারে শুরু হয়। জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মেক্সটের ওয়েবসাইটেও ‘মেক্সট’ বৃত্তির যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়।

*আবেদনের শেষ কবে

অনলাইনে আবেদন চলছে। আবেদনকারীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের http://202.72.235.210/scholarship/mext লিংকে আবেদন করতে হবে। আগামী ৫ মে ২০২৪ বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। এই লিংক এরপর আর কার্যকর থাকবে না। আবেদনকারীকে লিংকে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট সার্টিফিকেট, মার্কসিট, পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, আইএলটিএস/টোয়েফেল এর সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য সব ডকুমেন্টের সত্যায়িত কপিসহ আবেদনের হার্ড কপি সচিবালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন অভ্যর্থনা কক্ষে নির্ধারিত বক্সে সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত জমা দিতে হবে। হার্ড কপি জমা দেওয়া যাবে ৬ মে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত।

*জাপানের বৃত্তির আবেদনসহ বিস্তারিত দেখতে এখানে ক্লিক করুন

https://www.bd.emb-japan.go.jp/itpr_ja/00_000706.html

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com