পার্বত্য চট্টগ্রামের বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র সাজেক ভ্যালিতে ভ্রমণ উন্মুক্ত করার প্রথম দিনেই সহস্রাধিক পর্যটক ভ্রমণ করেছেন। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণের অনুমতি দেওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার থেকে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সাজেকের হোটেল, রিসোর্ট, কটেজ এবং রেস্তোরাঁগুলো পর্যটকদের উপস্থিতিতে আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।
ব্যবসায়ীদের তথ্যানুযায়ী, শুরুর দিনেই প্রায় এক হাজারের বেশি পর্যটক সাজেক পরিদর্শনে আসেন। হোটেল ও রিসোর্ট মালিকরা আশা করছেন, আগামীতে পর্যটকের সংখ্যা আরও বাড়বে। সাজেকে বর্তমানে ১১৬ হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে, পাশাপাশি ১৪টিরও বেশি রেস্তোরাঁ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, দীর্ঘদিন সাজেকে পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ থাকায় আমাদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সরকারি সহায়তা ছাড়া এ ক্ষতি পূরণ সম্ভব নয়। আমরা সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি। আমরা পর্যটনের ব্যবসার সঙ্গে দীর্ঘসময় জড়িত থাকলেও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন আমাদের কোনো সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়নি। হোটেল-রেস্টুরেন্টের কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে, যা বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সহযোগিতা পেলে সহজে করা সম্ভব।
হিলভিউ রিসোর্টের মালিক ইন্দ্রজিৎ চাকমা জানান, পর্যটকদের জন্য তারা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সহসভাপতি চাই থোয়াই অং চৌধুরী জয় বলেন, পর্যটকরা আসায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। আমরা আশা করছি, পর্যটকের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে এবং বিগত দেড় মাসের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। সাজেকের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও কোনো উদ্বেগ নেই।
উল্লেখ্য, গত ১৮, ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে সাজেকসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কয়েক দফায় পর্যটক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনগুলো। রাঙামাটি জেলায় গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করে নোটিশ দেওয়া হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসন গত ১ নভেম্বর এবং খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন ৫ নভেম্বর থেকে পর্যটক ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।