সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩০ অপরাহ্ন

চলো যাই আন্দামান ঘুরে আসি

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৪

দিগন্ত বিস্তৃত বঙ্গপোসাগরের মাঝে ৫৭২ টি দ্বীপ নিয়ে আন্দামান ভারতের সেরা পর্যটন কেন্দ্র।আন্দামানের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে এখানে একদিকে রয়েছে দিগন্ত বিস্তৃত নীল সমুদ্র, তেমনি রয়েছে গভীর অরন্য। আবার যারা পাহাড় পছন্দ করেন তাদের ও নিরাস করবে না আন্দামান। এককথায় বলতে পারেন আন্দামান হচ্ছে জঙ্গল, পাহাড় আর সমুদ্রের সংমিশ্রনে গটিত একটি দ্বীপপুঞ্জ।

সমুদ্র পরিবেষ্টিত এই দ্বীপে প্রকৃতি যেন উজার করে দিয়েছেন তার সৌন্দর্য।প্রকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে উপভোগ করুন আপনার হলিডে ট্রিপ। ভালোভাবে পুরো আন্দামান ঘুরে দেখতে চাইলে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় হাতে নিয়ে যাওয়া ভাল। কন্ডাকটেড ট্যুরে আন্দামান ঘুরে দেখতে পারেন। তাতে গাইড আপনাকে সব জায়গায় ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝায়ে বলতে পারবে।

আন্দামান ভ্রমন শুরু করুন পোর্ট দিয়ে। কোলকাতা থেকে ফ্লাইট আন্দামানের বারসাভারকার এয়ারপোর্টে পৌছাতে সময় লাগে পাক্কা দু’ঘন্টা। এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি গাড়িতে চলে যান হোটেলে। যাওয়ার পথে দেখতে পাবেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তার পাশে সুন্দর সুন্দর বাড়ীঘর। দোকানপাটগুলো সুন্দর করে সাজানো।

হোটেলে পৌছে একটু ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়–ন সাইট সিইং এর উদ্দেশ্যে। প্রথমেই যেতে পারেন ভারতীয় নৌবাহিনীর মিউজিয়াম সমুদ্রিকার উদ্দেশ্যে। মিউজিয়ামের ভেতরে রয়েছে তিমির কঙ্কাল, প্রবাল, ঝিনুক নানারকম সামুদ্রিক প্রানীর নিদর্শন। এরপর আদীবাসি মানুষের বাসস্থান, পোশাক, জীবনযাত্রার নানা নিদর্শন রয়েছে এই মিউজিয়ামে।

বন্দী বিপ্লবীদের জীবনযাপন এবং সেলুলার জেল ঘুরে দেখতে পারেন। দীগন্ত বিস্তৃত নীল সমুদ্র দূরে ঘেরা সবুজ পাহাড় সে এক অসাধারন দৃশ্য। সেলুলার জেল থেকে বারভাইন্স কোভ বিচে যেতে পারেন। বিচে যাওয়ার রাস্তাটা দারুন। এখানে রয়েছে নানা ধরনের ওয়াটার স্পোর্টস। ইচ্ছে হলে ওয়াটার স্কুটারে চড়ে একপাক ঘুরে আসতে পারেন। পুরো বিচ জুড়ে রয়েছে নারিকেল গাছ।

সমুদ্র পাড়ে নারিকেল গাছের নিচে বেঞ্চে বসে সূর্যস্ত দেখতে পারেন। এখানে যাবেন বিকালের দিকে। সমুদ্র পাড়ে নারিকেল গাছের নিচে বেঞ্চে বসে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারেন। এরপর সন্ধ্যার পর সেলুলার জেলে লাইট এ্যান্ড সাউন্ড শো উপভোগ করুন। এই শোর মাধ্যমে সেলুলার জেলের ইতিহাস, বিপ্লবীদের কাহিনী এমন সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা আপনার মনে দাগ কেটে থাকবে।

এরপর লঞ্চে বে কোরাল আইল্যান্ড ঘুরে পৌছে যাবেন রস আইল্যান্ড। সি বিচে অবশ্যই জামাকাপড় সাথে নিবেন। রং বেরং এর মাছ আর কোরাল দেখতে চলে যান নর্থ বেতে। এখানে নানারকম একটিভিটিস এনজয় করতে পারেন। স্কুবা ডাইভিং করতে পারেন এখানে। পানির নিচে রঙিন, প্রবাল ও মাছ দেখতে পাবেন। ওয়াটার স্পোর্টস সেরে গোসলটাও সেরে নিন।

এ দ্বীপে রয়েছে ছোট ছোট অনেক দোকান। সঠিক দামে নানা ধরনের গিফট আইটেম পাবেন এখানে। লাঞ্চ সেরে পুরো দ্বীপটি একটু ঘুরে দেখতে পারেন। এখানের অন্যতম আকর্ষন হরিন। চলার পথে হরিনের পাল চোখে পড়বে। পরের দিন যেতে পারেন মাউন্ট হ্যারিয়েট দেখতে। এটি দক্ষিন আন্দামানের সর্বোচ্চ পর্বত চূড়া। পাহাড়ের গা বেয়ে একেবেকে পথ চলেছে। পরিবেশটা বেশ মায়াবি।

ভিউ পয়েন্ট থেকে যতদূর চোখ যায় শুধুই গভীর অরন্য। দূরে নীল সমুদ্র। পরের দিন যেতে পারেন জরোয়া ফরেস্ট। ভোরের আলো ফোটার আগেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পথ চলার সময় চোখে পড়বে পাহাড়ের মাথায় পাতায় ছাওয়া জরোয়াদের ছোট ছোট বাড়ী।

এরপর লাইফ জ্যাকেট পরে স্পিড বোটে চলে যান লাইমস্টোন কেভ দেখতে। গুহা দেখে চলে আসুন কারমাটাং বিচে। বিচের শান্ত পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ করবে। খালি পায়ে সি বিচে হাটতে খুব ভালো লাগবে। এই বিচে সুর্যোদ্বয় এবং সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। রাতটা মায়া বন্দর থেকে পরদিন চলে যান বস এ্যান্ড স্মিথ আইল্যান্ড। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে একান্তে সময় কাটানোর জন্য একটি আদর্শ জায়গা।

চারিদিকে শুধু সমুদ্রের নীল জল। ঢেউয়ের শব্দ আর প্রবালের সমারোহ। এছাড়া হ্যাবলক আর রাধানগর বিচে যেতে ভূলবেন না।

অক্টোবর আন্দামান ভ্রমনের সবচেয়ে ভাল সময়। আন্দামানের সিফুডের তুলনা হয় না। প্রানভরে ডাব খেতে পারেন। খুব সস্তা, এছাড়া নারিকেলের তৈরি কুকিজ ও কোক খেতে পারেন। ভারি ভাল লাগবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com