চারদিকে উঁচু পাহাড় আর সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে নেমে আসা ঝরনা, পাশাপাশি মেঘেদের অবিরাম ছোটাছুটি। কখনো মেঘের শীতল স্পর্শ আপনার মনে জাগিয়ে তুলতে পারে অন্য রকম আনন্দ। বলছি বাংলাদেশের সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতের ২১তম রাজ্য মেঘালয়ের কথা।
পাহাড়, ঝরনা, বৃষ্টিস্নাত সবুজ প্রকৃতি ইত্যাদি মিলে প্রকৃতি যেন আরেক স্বর্গ রচনা করেছে এখানে। বছরে ছয় থেকে সাত মাস মেঘালয় মেঘে ঢাকা থাকে। মেঘেদের খেলাঘর এই রাজ্যটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে এখানে ছুটে আসে। আমরা যারা পাহাড় ও ঝরনা দেখতে খুব ভালোবাসি তাদের জন্য এই রাজ্যটি হতে পারে একটি পরিতৃপ্তির জায়গা।
মেঘালয় রাজ্যটি একটি পাহাড়ি রাজ্য এবং এখানে রয়েছে মন হরণকারী অনেক দর্শনীয় স্থান। নিজের ভ্রমণপিপাসু মনের তৃষ্ণা মেটাতে বেশ কয়েকদিনের জন্য আপনিও ঘুরে আসতে পারেন এই মেঘের রাজ্য থেকে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে মেঘালয় যাওয়ার সহজ উপায় হলো ঢাকা থেকে সিলেট। তারপর সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়ে মেঘালয় রাজ্যে প্রবেশ করা। মেঘালয় যেতে হলে প্রথমে বাসে বা ট্রেনে করে আপনাকে যেতে হবে সিলেট শহরে। সিলেট শহর থেকে বাসে বা সিএনজি করে যেতে হবে তামাবিল সীমান্ত চেকপোস্ট। সেখানে আপনার পাসপোর্ট ভিসা ট্রাভেল টেক্সের রসিদ চেক করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে সীমান্ত পার হয়ে আপনি ভারতের মেঘালয় রাজ্যে প্রবেশ করবেন।
কোথায় থাকবেন
শিলংয়ের বড়বাজার ও পুলিশবাজার পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় দুটি এলাকা। কারণ পর্যটকদের থাকার হোটেলগুলোর অধিকাংশই বড়বাজার ও পুলিশবাজার কিংবা তার আশপাশে অবস্থিত। তবে পুলিশবাজার তাদের কাছে বেশি জনপ্রিয়, কারণ এখান থেকে থেকে সহজেই বিভিন্ন টুরিস্ট স্পটগুলোতে যাওয়ার গাড়িগুলো ছেড়ে যায়। শিলংয়ের হোটেলগুলোতে আপনি দিনপ্রতি ৮০০ রুপি থেকে ১০ হাজার রুপির মধ্যে রুম পাবেন।
যেসব খাবার খাবেন
শিলংয়ে বেশ ভালো কিছু খাবারের হোটেল রয়েছে। এ হোটেলগুলোতে মাছ, মাংস, লুচিসহ নানা দেশীয় এবং চায়নিজ খাবার পাওয়া যায়। তবে যাঁরা হালাল-হারাম চিন্তা করে খাবার খেয়ে থাকেন, তাঁরা একটু যাচাই বাছাই করে খাবেন। কারণ খাসিয়াদের অন্যতম প্রিয় খাবার হচ্ছে শূকরের মাংস। তবে শিলংয়ের কিছু খাবার খুব জনপ্রিয়, যার স্বাদ আপনিও গ্রহণ করতে পারেন যেমন পুলিশ বাজারের দিল্লি মিষ্টান্নভাণ্ডারের জিলাপি, ইসি রেস্তোরাঁর কিমা সমুচা। এ ছাড়া এখানকার রেস্তোরাঁগুলোর চাউমিন বেশ প্রশংসিত। এখানে ঘুরতে এসে টুরিস্টরা আরো সেসব খাবারের প্রশংসা করেন তা হলো খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী কিছু খাবার, আনারস এবং নানা পসরায় সাজানো পান।
দর্শনীয় স্থানগুলোতে যেভাবে যাবেন
পুলিশবাজার মোড় থেকে আপনি এই স্থানগুলোতে যাওয়ার বিভিন্ন গাড়ি পাবেন। এ ছাড়া এখানকার ট্যুরিজম সম্পর্কিত সকল তথ্যের জন্য আপনি মেঘালয় ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে যোগাযোগ করতে পারেন। এখান থেকে প্রতিদিন বাসে করে কম খরচে পর্যটকদের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরিয়ে দেখানো হয়। তবে এর জন্য আপনাকে আগে থেকে টিকেট কেটে রাখতে হবে। এ ছাড়া আপনার সুবিধার জন্য সঙ্গে একজন টুরিস্ট গাইড রাখতে পারেন।