বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৫৭ অপরাহ্ন

গ্রিসের পর্যটন স্বর্গ সান্তোরিনি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
Santorini tourist girl on cruise holiday taking selfie photo with phone at famous three domes church, European tourism attraction in Greece. Asian woman on vacation.

গ্রিসের সবচেয়ে সুপরিচিত দ্বীপ সান্তোরিনি। সেটির নীল গম্বুজ গির্জাগুলো ইন্সটাগ্রামে ভেসে বেড়ায়। এক স্বপ্নের গন্তব্য। আগ্নেয়গিরির দ্বীপটি বছরে ৩০ লাখের মতো পর্যটককে আকৃষ্ট করে। তবে দ্বীপটির বাসিন্দা মাত্র ২০ হাজার।

তাদের একজন আনা ডেলামানি। বয়স ১৮, গত গ্রীষ্মে স্কুল শেষ করেছেন। ভবিষ্যতে নার্স হতে চান। কিন্তু পর্যটকদের ভিড়ে বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা কেমন?

আনা ডেলামানি বলেন,‘আমার ঘরটি পুরনো৷ মালিক আমার দাদা-দাদী, সংস্কার করে আমরা থাকছি। গ্রিসে রাস্তার বেড়াল দত্তক নেয়া যায়৷ আমি এক বেড়ালের প্রেমে পড়ে ঘরে এনেছি।’

আনার বড় ভাই এথেন্সে পড়াশোনা করেন। তারও শিক্ষা চালিয়ে যেতে দ্বীপটি ছাড়তে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি শীঘ্রই পড়াশোনার জন্য এথেন্স চলে যাবো। সান্তোরিনিতে আমাদের সেই কাঠামো নেই। এখানে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই। ফলে আমাকে নতুন এক লাইফস্টাইল রপ্ত করতে হবে যা সান্তোরিনি থেকে একেবারেই ভিন্ন৷।’

তিনি এখানে যতটা সম্ভব ঘনঘন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন। তার দ্বীপের সব কোনায় কোনায় পর্যটকদের প্রতি আকর্ষণের নমুনা মেলে।

আনা ডেলামানি নির্মাণ কাজ চলছে এমন এক এলাকা দেখিয়ে বলেন, ‘এটা একসময় বিপণনকেন্দ্র ছিল, কিন্তু এখন এটিকে হোটেলে রুপান্তর করা হচ্ছে৷ আরো অনেক ভবনের একই পরিণতি হয়েছে। সামগ্রিকভাবে পর্যটনের ক্ষেত্রে সান্তোরিনির স্থানীয় বাসিন্দাদের গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না যা এক লজ্জার ব্যাপার।’

বাসিন্দাদের চোখে পর্যটন স্বর্গ সান্তোরিনি

ব্যস্ত দ্বীপটি শীতকালে প্রায় জনশূন্য হয়ে যায়। স্থানীয় তরুণদের জন্য এর অর্থ হচ্ছে, অধিকাংশ দোকানপাটই বন্ধ৷ ফলে তেমন কিছু করার থাকে না৷ তখন তাদের পর্যটন মৌসুমের অপেক্ষা করতে হয়।

আনা ডেলামানির এক প্রিয় স্থান ক্যালডেরা। তিনি বলেন, ‘ভিউয়ের জন্য এটি পর্যটকদের কাছে সেরা গন্তব্য৷ ওখানে আগ্নেয়গিরি রয়েছে এবং প্রায় পুরো দ্বীপটিই এখান থেকে দেখা যায়। আমরা স্থানীয়রা পাহাড়ের উপরের ক্যাফেগুলোতে যাই না কারণ দাম অনেক চড়া। আমরা পাহাড়ের পাদদেশে অপেক্ষাকৃত সস্তা ক্যাফেতে যাই। অথবা বেঞ্চে বসে কিয়স্ক থেকে কেনা কিছু পান করি।’

আনা প্রায়ই তার বন্ধুদের সঙ্গে সমতা নিয়ে আলাপ করেন৷ লিঙ্গ সমতা সূচকে গ্রিসের অবস্থান ইইউভুক্ত ২৭ দেশের মধ্যে ২৪তম। চাকরি, অর্থ এবং শিক্ষার মতো জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোতে সমতার বিষয়টি তুলে ধরা হয় এই সূচকে। গ্রিস এক্ষেত্রে উন্নতি করলেও অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে।

গ্রিসে তরুণদের বেকারত্বে হার ২২ দশমিক পাঁচ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে নারীরা পিছিয়ে আছেন বেশি। আনা অবশ্য উদ্বিগ্ন নন। তিনি বলেন, ‘সান্তোরিনিতে সামগ্রিকভাবে অনেক পর্যটন রয়েছে, ফলে সংকট কখনোই বড় প্রভাব ফেলেনি। এথেন্স এবং অন্যান্য স্থানে যখন কঠিন সময় চলছিল আমরা তার প্রভাব কখনোই আসলে টের পাইনি।’

সপ্তাহে কয়েকবার বাস্কেটবল অনুশীলন করেন আনা। অনুশীলনের পর বন্ধুদের নিয়ে সমুদ্রতটে আড্ডা দিতে যান তিনি। আনার মতো তার অধিকাংশ বন্ধুকেই ক্যারিয়ার গড়তে দ্বীপটি ছেড়ে যেতে হবে। বিষয়টি তাকে বিষন্ন করে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com