1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
কোচিং সেন্টার ব্যবসাঃ অস্ট্রেলিয়া বনাম বাংলাদেশ প্রেক্ষিত
শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৫৮ অপরাহ্ন
Uncategorized

কোচিং সেন্টার ব্যবসাঃ অস্ট্রেলিয়া বনাম বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ মে, ২০২১

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কোচিং সেন্টারগুলোর ব্যাবস্থাপনা নিয়ে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ সবার নজরে এসেছে। অবস্থাদৃষ্টে কদাচিত এমনও মনে হচ্ছে যেন কোচিং সেন্টারগুলোর বিপক্ষে সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। শিক্ষাবিদ, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মাঝেও কোচিং সেন্টারের পক্ষে বিপক্ষে নানা মতামত দেখা যায়।

এসব বিতর্কের মাঝে বাংলাদেশের বিভিন্ন টকশো, প্রবন্ধ এবং নানা আলোচনায় কোচিং সেন্টারের পক্ষের যুক্তি হিসেবে সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া এসব উন্নত দেশের উদাহরণ টানতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বিপক্ষের যুক্তির তো অভাব নেই। বিশেষ করে যখন বিভিন্ন প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় কোচিং সেন্টারের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ভূমিকা তদন্তে উঠে আসে, তখন সত্যিই শিক্ষাব্যবস্থার এ দিকটি নিয়ে ভয়াবহ শঙ্কার তৈরী হয়।

অস্ট্রেলিয়াতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি এবং নিয়ন্ত্রণের কারণে যদিও প্রশ্ন ফাঁস বা এ ধরণের অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ সাধারণত ওঠার সুযোগ নেই, তবে টিউশন সেন্টারগুলোর উপর পড়ালেখার জন্য ছাত্রছাত্রীদের অতিনির্ভরতার বিষয়টি এদেশেও একটি আলোচিত প্রসঙ্গ। অনেক অভিভাবক মনে করেন তাদের সন্তানদেরকে টিউশন সেন্টারে পড়াতেই হবে। টিউশন সেন্টারগুলোর উপর শিক্ষার্থীদের এ অতিনির্ভরতার কারণে অন্যদিকে অনেক সচেতন অভিভাবক এই ব্যবস্থাকে একটি শ্যাডো এডুকেশন সিস্টেম বা নেপথ্য শিক্ষাব্যবস্থা নামেও সমালোচনা করে থাকেন।

কোচিং সেন্টার ব্যবসাকে নীতিমালার আওতায় এনে মান বজায় রাখার নানা সরকারী ও বেসরকারী প্রচেষ্টার পরও এমনকি অস্ট্রেলিয়াতেও শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে কোচিং পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানা অভিমত দেখা যায়।

বাংলাদেশের কোচিং শিক্ষার সবচেয়ে বড় অংশ আবর্তিত হয় নানা ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ছাত্রছাত্রীরা কোচিং এর দ্বারস্থ হয়। এরপরেই রয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় পরীক্ষা যেমন জেএসসি, এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোচিং এর স্থান। পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীদেরকে কিছু বিশেষ বিষয় যেমন গণিত বা ইংলিশের জন্য কোচিং করতে দেখা যায়। সর্বোপরি যে কোন শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরাই প্রয়োজন এবং পরিবারের আর্থিক সক্ষমতা সাপেক্ষে কোচিং বা টিউশনি শিক্ষকের কাছ থেকে পড়ালেখার সহায়তা নিয়ে থাকে।

ভর্তি পরীক্ষার সাথে জড়িত থাকার কারণে বাংলাদেশের কোচিং সেন্টারগুলোর মাঝে বড় একটি অংশ অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্ন ফাঁসের মহামারি চলাকালে এই অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অনেক কোচিং সেন্টারের নামও উঠে আসে। যার ফলশ্রুতিতে দেখা যায় সাম্প্রতিক সময়ে সরকার এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশে কোচিং সেন্টারগুলোর আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং যথেচ্ছাচার। যে কেউ ইচ্ছা করলেই যে কোন খানে কোচিং সেন্টারের ব্যাবসা খুলে বসতে পারে। কোচিং সেন্টারের ব্যাবসা করে চোখ ঝলসানো বিজ্ঞাপন ও মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে অনেকে কোটিপতি হয়ে গেলেও এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলোতেই প্রকৃত মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের চেষ্টা সম্পর্কে প্রশ্ন থেকে যায়।

এর বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার চিত্র কিছুটা ভিন্নতর। অস্ট্রেলিয়ার কোচিং সেন্টারগুলো সাধারণ টিউশন সেন্টার হিসেবে পরিচিত। স্কুলের বিভিন্ন ক্লাশের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে দেখা যায় তারা সন্তানদেরকে এসব টিউশন সেন্টারে পড়ালেখার জন্য পাঠাচ্ছেন। বিশেষ করে ইয়াস থ্রি, ফাইভ, সেভেন এবং নাইনের কেন্দ্রীয় পরীক্ষা, যার নাম নাপলান (ন্যাশনাল এসেসমেন্ট প্রোগ্রাম লিটারাসি এন্ড নিউমেরাসি) টেস্ট, এসব পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তারা সন্তানদেরকে টিউশন সেন্টারে ভর্তি করছেন। এছাড়াও ইয়ার সিক্সে অধ্যয়নরত অনেক শিক্ষার্থীরাও সিলেকটিভ স্কুল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য টিউশন সেন্টারে যায়।

তবে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির বিষয়টি যেহেতু বাংলাদেশের মতো কেবলমাত্র একটি ভর্তি পরীক্ষার উপরেই পুরোপুরি নির্ভর করেনা, সে কারণে এসব এডমিশন টেস্ট এর জন্য বিশেষায়িত কোচিং এর দৌরাত্ম্য এদেশে দেখা যায় না। কিছু কিছু বিশেষায়িত ক্ষেত্রে যদিও বিশেষায়িত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি রয়েছে, যেমন ডাক্তারী পড়ার জন্য নতুন পদ্ধতির ইউক্যাট (ইউনিভর্সিটি ক্লিনিকাল এপটিচিউড টেস্ট), পুরনো পদ্ধতির ইউম্যাট (আন্ডারগ্রাজুয়েট মেডিক্যাল এন্ড হেলথ সায়েন্সেস এডমিশন টেস্ট) কিংবা গামস্যাট (গ্রাজুয়েট অস্ট্রেলিয়ান মেডিক্যাল স্কুলস এডমিশন টেস্ট), কিন্তু এ সব পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিক্যাল শিক্ষায় ভর্তির পুরো প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশের চেয়ে অনেক ভিন্নতর।

অন্যদিকে এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং পছন্দের বিষয়ে পড়ালেখা করার সুযোগ সাধারণত আটার (অস্ট্রেলিয়ান টারশিয়ারি এডমিশন র‍্যাংক) নামের একটি হিসাবপদ্ধতির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, এবং এ র‍্যাংকিং এ উপরের দিকে থাকা নির্ভর করে এইচএসসি পরীক্ষা সহ বিভিন্ন সময়ে নির্ধারিত কিছু কোর্সের ফলাফলের উপর, সুতরাং ভালো বিষয়ে পড়ালেখা করার সুযোগ পেতে ছাত্রছাত্রীদেরকে ইয়ার টেন, ইলেভেন ও টুয়েলভের বছরগুলোতে পড়ালেখায় অধিক মনযোগী হতে হয়।

সুতরাং এ সময়ে ভালো ফলাফলের আশায় অনেকেই টিউশন সেন্টারগুলোতে পড়ালেখার সহায়তা নেয়, আবার অনেকে স্কুলের পড়ালেখাকেই যথেষ্ট মনে করে। এটি সম্পূর্ণ ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের উপর নির্ভর করে। এমন উদাহরণ প্রচুর দেখা যায় যেখানে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা কোন টিউশন সহায়তা ছাড়াই কেবলমাত্র স্কুলের পড়ালেখার উপর নির্ভর করে প্রচন্ড ভালো ফলাফল করেছে, আবার অন্যদিকে এমন উদাহরণও দেখা যায় যেখানে একজন মধ্যমমানের ছাত্রছাত্রী টিউশন সেন্টারের বাড়তি যত্ন এবং নির্দেশনার ফলে ভালো প্রস্তুতি নিতে সক্ষম হয়েছে এবং পরীক্ষায় আশাতীত ভালো ফলাফল করেছে।

অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন সুপরিচিত টিউশন সেন্টারগুলো সাধারণত বেশ বড় কোম্পানী হয়ে থাকে, যাদের ব্র্যান্ড নাম শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পায়। এসব টিউশন সেন্টার বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক ফ্র্যাঞ্চাইজ দিয়ে থাকে এবং এসব ফ্র্যাঞ্চাইজের মাধ্যমে স্কুল শিক্ষক এবং শিক্ষকতার যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষেরা টিউটর হিসেবে কাজ করে থাকেন।

অতীতে একসময় সন্তানের জন্য টিউশন দেয়ার বিষয়টি সাধারণত উচ্চাকাঙ্খী অভিবাসী পরিবার এবং সম্পদশালী পরিবারগুলোতেই বেশি দেখা যেতো, কিন্তু গত চার-পাঁচ বছরের সামাজিক পরিস্থিতিতে এক্ষেত্রে বেশ বড় ধরণের পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে সব ধরণের আর্থিক অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের অভিভাবকরাই সন্তানদের জন্য টিউশন প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করে থাকেন। এদেশের অন্যতম একটি বড় টিউশন ফ্র্যাঞ্চাইজ প্রতিষ্ঠান বিগিন ব্রাইটের প্রতিষ্ঠাতা টিনা টাওয়ার এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, তাদের সবচেয়ে বেশি ছাত্রছাত্রী সম্বলিত শাখাটি এমন এক এলাকায় অবস্থিত যেখানে সাধারণত নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোই বসবাস করে। বিষয়টি এক সময় অভাবনীয় হলেও সাম্প্রতিক সময়ে অভিভাবকদের মানসিকতায় পরিবর্তনের ফলেই এমনিট ঘটছে বলে তিনি মনে করেন।

তবে ক্রমবর্ধমান এ চাহিদার ফলে শিক্ষার্থীদের উপর অপ্রয়োজনীয় এবং অনায্য চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলেও অনেক শিক্ষাবিদরা মনে করেন। এবিসিনিউজের সাথে কথোপকথনে এমনই এক ইয়ার ইলেভেন ছাত্র জানায়, তাকে সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠতে হয় সময়মতো স্কুলে উপস্থিত থাকার জন্য। অন্যদিকে স্কুল শেষে টিউটরিং কলেজের পড়ালেখা শেষ করে বাসায় যেতে যেতে দেখা যায় রাত হয়ে গেছে। সে জানায়, একসময় গুরুত্বপূর্ণ ছিলো ‘কতটা বেশি আপনি পড়ালেখা করছেন’, কিন্তু এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘কোন টিউশন সেন্টারে আপনি বেশি পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছেন’।

টিউশন সেন্টারের শিক্ষা যেহেতু প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা নয়, বরং তা একটি সহায়ক পদ্ধতি তাই এই ক্ষেত্রটি এখনো অস্ট্রেলিয়ার সরকার কর্তৃক পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত নয়। বরং অস্ট্রেলিয়ান টিউটরিং এসোসিয়েশন বা এটিএ নামের একটি সংস্থার নীতিমালার অধীনে স্বীকৃতপ্রাপ্ত টিউশন সেন্টারগুলো, ঐ সংস্থার কোড অফ কনডাক্ট মেনে চলার মাধ্যমে, নিজেদের মান সংরক্ষণের চেষ্টা করে। তবে এই সংস্থার স্বীকৃতি ছাড়াও অনেক ছোটখাটো স্থানীয় পর্যায়ের টিউশন সেন্টারকে ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা সাহায্য করতে দেখা যায়।

বাংলাদেশী অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদেরকে স্কুলে দেয়ার সাথে সাথেই বুঝতে পারেন এদেশের শিক্ষা পদ্ধতি প্রাথমিক পর্যায় থেকেই বাংলাদেশের চেয়ে ভিন্ন। সুতরাং অনেকেই সন্তানের পড়ালেখার জন্য টিউশন পদ্ধতির শরণাপন্ন হন। আবার অনেকের মাঝে দেখা যায় ভিন্নমত।

অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় পঁচিশ যাবত বসবাস করছেন প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম। তার দুই মেয়েই পড়ালেখা করছে এদেশের নামকরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগে, অর্থ্যাৎ বাংলাদেশে যাকে মেডিক্যাল কলেজ নামে অভিহিত করা হয়। তিনি মনে করেন টিউশন সেন্টারগুলো হলো শিক্ষার নামে ব্যাবসা, যার শরণাপন্ন হওয়ার কোন প্রয়োজন একজন সচেতন অভিভাবেকর নেই। তার মতে, টিউশন সেন্টারে না দিয়ে বরং একজন অভিভাবক যদি সন্তানকে পড়ালেখার জন্য মানসিকভাবে সক্রিয় প্রণোদনা দেয়ার চেষ্টা করেন তাহলেই বাকী পড়ালেখার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়ক উপাদান এদেশের স্কুল এবং লাইব্রেরীগুলোতে বিদ্যমান। উদাহরণ হিসেবে তিনি তার সন্তানদের কথা বলেন। যারা কখনো কোন টিউশন সেন্টারে যায়নি। তবে তিনি এক্ষেত্রে তার স্ত্রীর অবদানের কথাও স্বীকার করেন। তার প্রকৌশলী স্ত্রী কখনো কাজ করেননি, বরং সবসময় বাসায় সন্তানদের পড়ালেখার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করেছেন। যার ফলে দু’সন্তানই এদেশের সর্বোচ্চ মানের সিলেকটিভ স্কুল এবং পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন স্কুলে পড়ার সুযোগ করে নিয়েছে।

অন্যদিকে শামীম ও শারমিন দম্পতি এ বিষয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন। এ দম্পতিও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন দুই দশক যাবত। তাদের বড় সন্তান রিদওয়ান পড়ালেখা করে এমন একটি সিলেকটিভ স্কুলে যা অস্ট্রেলিয়ার এক নাম্বার স্কুল হিসেবে বিবেচিত হয়। সিলেকটিভ স্কুলে সন্তানের পড়ালেখা করার সুযোগ পাওয়ার জন্য অভিভাবকদের মাঝে এমন প্রতিযোগিতা ও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয় যে ক্ষেত্রবিশেষে তা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যায়। এমন অভিভাবকদের মাঝে হতাশা ও কষ্ট দেখে নিজ উদ্যোগেই অনেকের সাথে কথা বলেছেন এবং কাউন্সেলিং করেছেন বলে জানান শারমিন।

এই ধরণের প্রত্যাশা যেখানে জড়িত, সেই সর্বোচ্চ মানের স্কুলে তাদের সন্তানের পড়ালেখার ক্ষেত্রে টিউশন সেন্টারের ভূমিকা কতটুকু? এ প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, রিদওয়ান খুব ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত সচেতন ও পরিশ্রমী ছাত্র। তারা কখনোই সন্তানের উপর কোন ধরণের চাপ সৃষ্টি করতে চাননি, বরং সে নিজ থেকেই খুঁজে খুঁজে বের করেছে ভালো পড়ালেখার জন্য তার কি করা দরকার। শিশু সন্তানের এই স্বপ্রণোদিত প্রচেষ্টা দেখেই শামীম এবং শারমিন দম্পতি তার পড়ালেখার জন্য সহায়ক হবে ভেবে ভালো একটি টিউশন সেন্টারে তার যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তারা মনে করেন এ পর্যন্ত তাদের সন্তানের শিক্ষাগত কৃতিত্বের জন্য টিউশন সেন্টারই মূল ভূমিকা রেখেছে বিষয়টি এমন নয়, তবে এক্ষেত্রে টিউশন সেন্টারের দেয়া তথ্য ও পড়ালেখা সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।

মোদ্দাকথা, টিউশন সেন্টার বা কোচিং সেন্টার অথবা টিউশনি যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন, প্রাতিষ্ঠানিক পড়ালেখার সহায়ক হিসেবে বাড়তি পড়ালেখার সুযোগ পৃথিবীর সব দেশেই বিভিন্ন মাত্রায় আছে। এর গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীতা পুরোপুরি অস্বীকার করা বাস্তবসম্মত নয়, ঠিক যেমনিভাবে সব শিক্ষার্থীর সামর্থ্য এবং যোগ্যতা সবক্ষেত্রেই সমান হয় না। কিন্তু কোচিং সেন্টারগুলোর প্রয়োজনীয়তা এবং আধিপত্য যদি তাদের উপযুক্ত সীমার চেয়ে বেশি পর্যায়ে চলে যায় এবং তা শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষেত্রে উপকারী সহায়তার পরিবর্তে যদি উল্টো মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রবের সৃষ্টি করে তাহলে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং মান বজায় রাখার দায়িত্ব শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সরকারী কর্তৃপক্ষের উপরেই বর্তায়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com