চীনে অজ্ঞাত কারণে অস্ট্রেলীয় এক নারী সাংবাদিককে এক হাজার দিন আটকে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। তবে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়নি। তাকে কোনো সাজাও দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। বুধবার (১০ মে) বিবিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অস্ট্রেলীয় ওই সাংবাদিকের সঙ্গী এসব তথ্য জানান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলীয় ওই সাংবাদিকের নাম চেং লি। তিনি চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত ইংরেজি ভাষার টেলিভিশন সিজিটিএন-এ বিজনেস রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আকস্মিকভাবে তাকে আটক করে। পরে তার বিরুদ্ধে ‘বিদেশে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচারের’ অভিযোগ আনা হয়। বর্তমানে চেং লিকে চীনের একটি কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।
চেং লির সঙ্গী নিক কোয়েল বিবিসিকে জানান, কী কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তার সঙ্গে কেন এ ধরনের আচরণ করা হচ্ছে-এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।
চায়না-অস্ট্রেলিয়া চেম্বার অব কর্মাসের সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা নিক কোয়েল বিবিসিকে বলেন, ‘কাউকে আটক রাক্ষার ক্ষেত্রে এক হাজার দিন যথেষ্ট দীর্ঘ সময়। আমি চীনের সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষকে ভয়াবহ এ পরিস্থিতির যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করার আহ্বান জানাব।’
বিবিসি জানায়, আটকের প্রথম ছয় মাস লি’র নির্জন কারাগারে কেটেছে। তাকে চাপের মুখে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনো আইনজীবীর সহায়তা নিতে দেওয়া হয়নি। এরপর থেকে তাকে অন্য বন্দীদের সঙ্গে রাখা হয়। ২০২২ সালের মার্চে রুদ্ধদ্বার আদালতে সাংবাদিক চেং লির বিচার শুরু হলেও বার বার তার সাজা স্থগিত করা হয়।
এমন কি এ মামলার শুনানীতে চীনে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত গ্রাহাম ফ্লেচারকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বর্তমানে লির বিচারটি বেইজিংয়ের সেকেন্ড ইন্টারমিডিয়েট পিপলস আদালতে আটকে আছে। তবে লির সঙ্গী নিক বর্তমানে বেইজিংয়ের বাইরে থেকেই তার মুক্তির বিষয়ে কাজ করছেন।
চীনে চেং লি ছাড়াও ইয়াং হেনজুং নামের চীনা বংশোদ্ভূত আরও এক অস্ট্রেলীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগ আনা হয়। পরে তারও সাজা বার বার স্থগিত করা হয়েছিল।
বেশ কয়েক বছর ধরে চীন ও অস্ট্রেলিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। বেইজিং অস্ট্রেলিয়ার ওয়াইন, বার্লি ও লবস্টারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এমন বিরোধের মধ্যেই চেং লি’র এই মামলা বেশ নজর কেড়েছে।