কানাডার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিশ্বের সবাইকে মুগ্ধ করে। সেখানে নায়াগ্রা ফলস থেকে শুরু করে বাহারি সব উদ্যান, লেক এমনকি সামুদ্রিক বিস্ময় আছে যা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। আর এসবের টানেই বিশ্বের লাখ লাখ পর্যটক সেখানে ভিড় করেন।
কানাডায় একবার ভ্রমণ করলে আর সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নিজ চোখে উপভোগ করলে, পরবর্তী সময়ে বারবার সেসব স্থানে যেতে ইচ্ছে করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রথমবার কানাডা ভ্রমণে কোন কোন স্থানগুলো অবশ্যই ঘুরে দেখবেন-
কানাডিয়ান রকিজের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ব্যানফ ন্যাশনাল পার্ক প্রকৃতি উৎসাহীদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল। এই পার্কের মধ্যে আছে আইকনিক লেক লুইস ও মোরাইন লেক।
এই ফিরোজা হ্রদগুলোর চারপাশে তুষার-ঢাকা পাহাড় এমন মুগ্ধতা ছড়াকে যে, বারবার সেখা যেতে ইচ্ছে হবে আপনার।
নায়াগ্রা জলপ্রপাত, অন্টারিও
বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাকৃতিক বিস্ময়গুলোর মধ্যে একটি হলো নায়াগ্রা ফলস। যা কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সীমানা জুড়ে আছে।
হর্সশু ফলস, আমেরিকান ফলস ও ব্রাইডাল ভেইল ফলসের জলধারা এমনই মুগ্ধকর দৃশ্য তৈরি করে যে প্রতিবছর লাখ লাখ দর্শনার্থী সে দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন।
ব্যানফের সংলগ্ন, জ্যাসপার ন্যাশনাল পার্ক একটি ইউনেস্কো দ্বারা স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। এর বিশাল প্রান্তর বন্যপ্রাণীর জন্য সংরক্ষিত।
এই পার্কের আশপাশেই আছে কলম্বিয়া আইসফিল্ড, আথাবাস্কা জলপ্রপাত ও বিস্ময়কর ম্যালিগন ক্যানিয়নসহ বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক বিস্ময়।
মোরাইন লেক, আলবার্টা
ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কের অংশ হলেও, মোরাইন লেক তার নিজস্ব স্পটলাইটের দাবিদার। সুউচ্চ চূড়া ও ১০টি চূড়ার উপত্যকায় ঘেরা, এই হিমবাহী হ্রদের ফিরোজা রঙের পানি সবাইকে মুগ্ধ করে।
নাহান্নি জাতীয় উদ্যান, উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল
ইউনেস্কোর একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হলো নাহান্নি জাতীয় উদ্যান। নাহান্নি ন্যাশনাল পার্কে সুউচ্চ শিখর, গভীর গিরিখাত ও আইকনিক ভার্জিনিয়া জলপ্রপাত আছে।
নর্দান লাইটস (অরোরা বোরিয়ালিস), ইউকন
নর্দার্ন লাইটের সাক্ষী হতে ইউকনের দিকে রওনা হতে পারে। অরোরা বোরিয়ালিসের নাচের রংগুলো রাতের আকাশকে আলোকিত করে ও একটি জাদুকরী দৃশ্য তৈরি করে যা বিজ্ঞানী ও স্বপ্নদর্শী উভয়কেই শতাব্দী ধরে মুগ্ধ করেছে।
মিঙ্গান দ্বীপপুঞ্জ
মিনগান আর্কিপেলাগো ন্যাশনাল পার্কে গেলে আপনি দেখতে পাবেন কানাডার সবচেয়ে বিস্তৃত মনোলিথ হিমবাহ, তরঙ্গ, বাতাস ও বিভিন্ন ক্ষয়কারী উপাদানগুলোর ভাস্কর্য।
উপকূলরেখা বরাবর, আপনি প্রায় এক হাজার দ্বীপ দেখতে পাবেন, যা সুশোভিত ক্লিফ, গুহা, খিলান ও স্থিতিস্থাপক পাথুরে সেন্টিনেলে তৈরি।
আপনি চাইলে সেখানে কায়াকিং অভিযানে লিপ্ত হতে পারেন, অথবা সেন্ট লরেন্সের উত্তর তীর বরাবর একটি শহর থেকে একটি নৌকা ভ্রমণের জন্য বেছে নিতে পারেন।
হোপওয়েল রকস, নিউ ব্রান্সউইক
ফান্ডি উপসাগরে শিলাগুলোর অসাধারণ ক্ষয় বিশ্বের বৃহত্তম জোয়ারের ফলস্বরূপ। প্রতিদিন দুবার, জোয়ার উপসাগরে ১৬ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছায় ও হোপওয়েল রকসের ভিত্তিকে নিমজ্জিত করে।
ভাটার সময়, এই ভূতাত্ত্বিক গঠনগুলোর উপর দিয়ে হাঁটতে পারবেন। নিজ চোখে সমুদ্রের এই বিস্ময়কর জোয়ার ভাটার সাক্ষী হতে পুরো জোয়ার চক্র জুড়ে থাকুন।
আঁকাবাঁকা গাছ, সাসকাচোয়ান
বিস্ময়কর আঁকাবাঁকা গাছের উদ্যান দেখতে আপনাকে অবশ্যই যেতে হবে সাসকাচোয়ানে। সেখানকার গাছগুলো একটি বোটানিক্যাল বিস্ময় ও রহস্য বটে।
স্থানীয়রা এই ঘটনার জন্য এলিয়েনকে দায়ী করেন। তবে কিছু বিজ্ঞানী জেনেটিক মিউটেশন বা উল্কাপাতের প্রভাবের কারণে এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যিই যে, কানাডার আর কোথাও নেই এমন গাছ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া