ইতালিতে দীর্ঘ সাত মাস কাজ না পেয়ে সুমন মিয়া নামে এক বাংলাদেশি যুবক আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার রাজধানী রোমের তুসকোলানা জুলিও আগ্রিকোলা পার্কে একটি গির্জার পেছন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
কয়েক মাসে আগে সুমন এগ্রিকালচার ভিসায় ইতালিতে আসেন। তার দেশের বাড়ি কুমিল্লার হোমনার চম্পক নগরে। বাবার নাম এ বারিক।
সুমনের আত্মহত্যার ঘটনায় মুরাদ মহিবুর নামে আরেক ইতালি প্রবাসী ফেসবুকে আবেগঘন একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তার বাড়িও কুমিল্লায়।
মুরাদ জানান, এক বুক স্বপ্ন নিয়ে সুমন মিয়া সাত মাস আগে ইতালির রোম শহরে এসেছিলেন সোনার হরিণ ধরতে! কিন্তু স্বপ্ন আর বাস্তবতা বড়ই কঠিন। দীর্ঘ সাত মাস বেকার থেকে কোনো কাজ না পেয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে জীবনটাকে শেষ দিয়েছেন। এমন নির্মম মৃত্যু কারোরই কাম্য নয়।
যারা ইতালি আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অবশ্যই লিগ্যাল ওয়েতে স্পন্সর ভিসায় আসবেন। এগ্রিকালচার ভিসায় এসে এখানে তেমন কোনো কাজ নেই। আপনজন না থাকলে ইতালি না আসাই ভালো। কারণ এগ্রিকালচার ভিসায় এসে কোনো কাজ পাওয়া যায় না। অনেক কষ্ট করতে হয়। এর মাঝে বাসা ভাড়া ও নিজের ব্যক্তিগত খরচ বাবদ প্রতিমাসে ন্যূনতম ৪০০ ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা) মতো খরচ বহন করতে হয়। নতুন এসে এই টাকা আয় করা অনেক কষ্ট।
এগ্রিকালচার ভিসায় কেন কাজ পাওয়া যায় না তার কারণ উল্লেখ করে প্রবাসী মুরাদ বলেন, প্রথমত ভাষাজনিত সমস্যা, দ্বিতীয়ত ডকুমেন্ট সমস্যা। এজন্য এগ্রিকালচার ভিসায় না এসে চেষ্টা করবেন লিগ্যাল ওয়েতে স্পন্সর ভিসায় আসতে। লিগ্যাল ওয়েতে আসলে অন্ততপক্ষে একটা কাজ ও একটা ডকুমেন্টের আশা করা যায়; যা থাকলে অনেকটা হতাশামুক্ত থাকা যায় এবং একটা কাজ পাওয়ার আশা করা যায়।
বিদেশ গমনেচ্ছুদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, টাকা আপনার, তবে অবশ্যই ভেবেচিন্তে কাজ করবেন। ইউরোপ আসা মানেই আপনি প্রথম মাস লাখ লাখ টাকা ইনকাম করবেন- এটা একদম মিথ্যা। তাই দেশ থেকে ব্যাংক লোন বা কিস্তি নিয়ে দয়া করে কেউ আসবেন না; যা আপনার মানসিক পীড়ার কারণ হয়। দূর থেকে স্বপ্নে দেখে অনুমান করা, আর বাস্তবে অনেক কঠিন ইউরোপের জীবন!