গত সপ্তাহে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটলগ্রাউন্ড অঙ্গরাজ্য জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনায় আঘাত হানে হারিকেন হ্যালেন। এরই মধ্যে সেখানে ১৩০ জনেরও বেশি মারা গেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে উভয় রাজ্যের প্রতি তীব্র মনোযোগের কারণে সেখানকার মানবিক বিপর্যয় একটি রাজনৈতিক সমস্যা হয়ে উঠতে পারে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জর্জিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ঝড়ে নর্থ ক্যারোলাইনার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এদিকে হোয়াইট হাউসে আসীন থেকে এ দুটি রাজ্যে ট্রাম্পকে অবশ্যই জিততে হবে।
যখন দুর্যোগ আঘাত হানে, তখন সবাইকে খুশি রাখা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। যদি এ বিষয়ে ভোটাররা অসন্তুষ্ট হন, তাহলে এই দুই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফল প্রভাবিত হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা
মধ্যপ্রাচ্যে যে মানবসৃষ্ট সংকট চলছে, তা ক্রমাগত আমেরিকার রাজনীতিতে প্রবেশ করছে। দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই এবং ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে গাজা যুদ্ধ একটি আঞ্চলিক সংঘাতে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। কমলা নিজেকে পরিবর্তনের প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করলেও যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল নীতির ক্ষেত্রে তিনি নিজের ও বাইডেনের প্রশাসনের মধ্যে কোনো দূরত্ব বজায় রাখতে পারেননি। এটি কমলার জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে। মার্কিন নির্বাচনের আগে গাজায় যুদ্ধবিরতির আশা কার্যত শেষ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে যাতে সর্বাত্মক যুদ্ধ ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিতের চেষ্টা করছে হোয়াইট হাউস। এই যুদ্ধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও ডেমোক্র্যাটদের জন্য খারাপ পরিণতি অপেক্ষা করছে। যদিও মার্কিন ভোটাররা ভোট দেওয়ার আগে পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে খুব একটা ভাবেন না।
ইসরায়েলকে কমলার অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি ডেমোক্র্যাটদের দুটি শিবিরে সমস্যা বয়ে আনবে—মিশিগানের আরব-আমেরিকান ভোটার এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ ভোটার। এর মধ্যে মিশিগানে ডেমোক্র্যাটদের জেতাই লাগবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবারও যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন শুরু হতে পারে। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের কারণে গত বৃহস্পতিবার তেলের দাম ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ আমেরিকনরা বিশেষভাবে সংবেদনশীল।
অর্থনীতি ও অভিবাসন
আমেরিকান ভোটারদের কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অর্থনীতি। আর এ বিষয়ে গত শুক্রবার কমলার শিবির ভালো একটি খবর পেয়েছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত কয়েক মাসে বেকারত্বের হার কমেছে। তবে ইতিহাসবিদ ডেভিড গ্রিনবার্গ বলেন, ‘অর্থনীতি নিয়ে ভোটারদের উদ্বেগ সর্বশেষ চাকরির পরিসংখ্যানের চেয়ে বেশি।’
জনমত জরিপে দেখা গেছে, অর্থনীতির ক্ষেত্রে কমলার চেয়ে ট্রাম্পকে এগিয়ে রেখেছেন ভোটাররা। তবে কুক পলিটিক্যাল রিপোর্টের জরিপ বলছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে সমতায় রয়েছেন দুই প্রার্থী। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে অনুপ্রবেশের সংখ্যা কভিড মহামারি-পূর্ববর্তী সময়ের পর্যায়ে চলে এসেছে।
সূত্র : বিবিসি