বিদেশে পড়ার সুযোগ মানেই বিশ্বমানের ডিগ্রি পাওয়ার হাতছানি, পেশাগত লক্ষ্য পূরণের অপার সম্ভাবনা। প্রতি পদক্ষেপে নানা দেশের শিক্ষার্থীর সঙ্গে নিজের যোগ্যতা যাচাই করার এ যেন অনন্য সুযোগ। এসব চিন্তা-ভাবনার বাস্তব প্রতিফলন ঘটে প্রস্তুতির সময় সঠিক দেশ বাছাই করতে পারলে।
বহু-সংস্কৃতির সঙ্গে মেলবন্ধনের সুযোগ
যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশের সুবাদে সারাবিশ্ব থেকে শিক্ষার্থীর আগমন ঘটে। ফলে একই স্থানে নানা জাতি, গোত্র, সংস্কৃতির দেখা পাবেন এখানে। বৈচিত্র্যময় এমন সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা অন্যান্য দেশে খুব একটা পাওয়া যায় না। এখানকার জাদুঘর, আর্ট গ্যালারি, বাজার, পাব আপনাকে মুগ্ধ করবে অনায়াসে। ক্যাফে ও রেস্তোরাঁর ঘরোয়া খাবারের স্বাদে নিজস্ব সংস্কৃতির ছোঁয়াও পেতে পারেন। এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যে পড়তে আসলে বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ তো আছেই।
নানা বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সের সম্ভার
বিখ্যাত কিংবা স্বল্প-পরিচিত, আপনার আগ্রহের যেকোনো কোর্সে পড়ালেখা করতে পারবেন যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে। যুক্তরাজ্য শুধু সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, অনন্য স্থাপত্য ও চমৎকার পরিবেশে অধ্যয়নের স্থান হিসেবে নয়, অভিজ্ঞতা সংগ্রহের জায়গা হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছে বিশ্বজুড়ে। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজির সঙ্গে ওয়েলস ভাষাতেও কোর্স অফার করে। যুক্তরাজ্যে মেরিন বায়োলজি, ফ্লোরাল সায়েন্স, সার্ফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে ভাষা দক্ষতার অনুশীলন সবধরনের কোর্স করার সুযোগ থাকায় শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে দেশটি।
নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা
যুক্তরাজ্য প্রত্যেক ব্যক্তির ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সম্মান জানায়। বিস্তৃত, বৈচিত্র্যময় রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত এ দেশটির সংবিধান আধুনিক ব্রিটেন তৈরিতে বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের পরিসরকে গুরুত্ব দেওয়ায় সব ধর্ম পালনের সুযোগ রয়েছে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের মতো দেশের আইন, মানুষের বিশ্বাসের ভিত্তিতে বৈষম্য ও হয়রানি থেকে সুরক্ষা দেয়। যার কারণে চাকরি, শিক্ষা, বাসস্থানের ওপর ধর্মীয় বিশ্বাস প্রভাব ফেলতে পারে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট সোসাইটির সম্পৃক্ততা
ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট সোসাইটি। বিদেশি শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ বা সংরক্ষণশালায় সোসাইটি ও গ্রুপের সদস্যরা সবসময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। একাডেমিক কোর্সের শিক্ষক, স্টুডেন্ট সাপোর্ট গ্রুপ, ওয়েলফেয়ার টিম ও শিক্ষার্থীদের সংগঠনও এ ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসাইটি ও ক্লাবে স্পোর্টস টিম থেকে শুরু করে শখের কাজ, রাজনৈতিক ও মুক্তির আন্দোলন সবধরনের কাজে শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রদান ও দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করে।
সহজ ভর্তি প্রক্রিয়া
যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। একবার আবেদন গ্রহণ হয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ ও আবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রাম বাছাইয়ের আগে সেই বিষয়ে আপনার আগ্রহের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত উত্তর জেনে নিতে হবে এবং আবেদনে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। নিজেকে যোগ্য হিসেবে তুলে ধরতে ভাষা দক্ষতা, একাডেমিক কৃতিত্বের মতো বিষয়াদি অর্জন করতে হবে।
স্বল্প মেয়াদে ডিগ্রি অর্জন
বিদেশ মানেই জীবনযাত্রার খরচ, চাকরির শর্ত-পূরণের কঠোর বাস্তবতা। এসব মেটাতে গিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায় অনেকের। এজন্য যুক্তরাজ্যের অল্প সময়ে ডিগ্রি অর্জনের সুবিধা শিক্ষার্থীদের জন্য এক আশীর্বাদ। বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদী প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা কয়েক মাসের ব্যবধানে একাডেমিক ক্রেডিট অর্জনের পাশাপাশি ভিন্নধারার অধ্যয়নের অভিজ্ঞতা নিতে পারে সহজে।
একাধিক স্কলারশিপের সুযোগ
বিদেশে পড়ালেখা নিজ দেশের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল। যুক্তরাজ্যে ইন্টারন্যাশনাল শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে প্রচুর স্কলারশিপ ও গ্র্যান্ট পাওয়ার সুযোগ। যা দিয়ে টিউশন ফি, আবাসন খরচসহ জীবনযাত্রার ব্যয় মেটানো যাবে সহজে। উচ্চশিক্ষা অর্জনের এসব আর্থিক সহায়তার ফান্ড অনেক সময় অব্যবহৃত থেকে যায় যোগ্য শিক্ষার্থীর অভাবে। আপনি অনায়াসে সেই সুযোগ লুফে নিতে পারেন।
চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা
অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাজ্যে জীবনযাত্রা ও চিকিৎসা ব্যয় কিছুটা কম। জীবনযাত্রার খরচ কম হওয়ায় পড়ালেখার খরচও সামলে নেওয়া যায়। এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে পাওয়ার সুবিধার জন্য অনেক শিক্ষার্থী সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চায়।
সহজে ভিসা প্রাপ্তি
অন্যান্য দেশের তুলনায় যুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া সহজ। ভিসা পেতে যুক্তরাজ্যের দূতাবাসে গিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন কিংবা ওয়েবপেজে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। ভিসা জটিলতা এড়াতে যাবতীয় তথ্যাদি সম্পর্কে ধারণা নিন। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে রাখুন। ভিসা ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুতি নিন।