1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
উচ্চ শিক্ষার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সুযোগ
বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:২৯ অপরাহ্ন
Uncategorized

উচ্চ শিক্ষার জন্য দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার সুযোগ

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ মে, ২০২১

দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ যা কোরীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ অংশটি নিয়ে গঠিত। এর সরকারি নাম কোরীয় প্রজাতন্ত্র। দক্ষিণ কোরিয়ার উত্তরে উত্তর কোরিয়া, পূর্বে জাপান সাগর, দক্ষিণে ও দক্ষিণ-পূর্বে কোরিয়া প্রণালী, যা জাপান থেকে দেশটিকে পৃথক করেছে, এবং পশ্চিমে পীত সাগর। সিউল হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। কোরীয় ভাষা দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি ভাষা। এখানকার প্রায় সব লোক কোরীয় ভাষাতে কথা বলেন।

আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বে যুদ্ধের পর দক্ষিণ কোরিয়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে খুব বেশি উন্নতি সাধন করতে না পারলেও নব্বই দশকের পর থেকে দেশটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বেশ এগিয়ে গেছে। স্থাপত্য শিল্পেও দেশটির বিশেষ অগ্রগতি চোখে পড়ে। এখানকার সব ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ছোঁয়া। প্রত্যেকটি কাজ হয় অনলাইনে। মহাসড়ক থেকে শুরু করে ট্রেন, বিমান সবকিছু একটি নির্দিষ্ট নিয়মে পরিচালিত হয়।

দেশটির ট্রাফিক ব্যবস্থা অসাধারণ। যানবাহনের কোনো বিকট শব্দ নেই। মানুষগুলোও কথা বলেন আস্তে, যাতে আশেপাশের কেউ বিরক্ত না হয়। কারো কোনো কিছু হারানোর বা চুরি হওয়ার ভয় নেই কোরিয়ায়। কারণ প্রত্যেকটি জায়গায় লাগানো রয়েছে উন্নতমানের সিসি ক্যামেরা। কোনো কিছু চুরি হলে বা হারিয়ে গেলে, কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার ফিরে পাবেন আপনার হারানো জিনিস।

কোনো অপরাধ কর্ম সংঘটিত হওয়ার ২-৩ মিনিটের মধ্যে পুলিশ এসে পড়ে ঘটনাস্থলে। জনগণের নিরাপত্তা প্রদানে, দেশটির সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বর্তমানে কোরিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা পৃথিবীখ্যাত। সেরা শিক্ষাব্যবস্থার র‍্যাংকিং সেরা পাঁচে দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান এখন স্বাভাবিক ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব র‍্যাংকিং কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান শীর্ষ সারিতে।

কোরিয়ায় প্রায় ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মান প্রায় সমান। কোরিয়ান শিক্ষা ব্যবস্থা তত্ত্বের উপর নির্ভরশীল নয়, গবেষণাভিত্তিক। গবেষণার মাধ্যমে জ্ঞান সৃষ্টি, উদ্ভাবন এবং সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রধান উদ্দেশ্য। শিক্ষার মান আর গবেষণার বহুমুখিতাই কোরিয়াকে পৃথিবীব্যাপী শিক্ষার্থীদের কাছে উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যতম পছন্দ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো, সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, কোরিয়া অ্যাডভান্সড ইন্সটিটিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (কাইস্ট), কোরিয়া ইউনিভার্সিটি, ইয়নসে ইউনিভার্সিটি, খিয়ংহি ইউনিভার্সিটি, ইনহা ইউনিভার্সিটি এর মধ্যে সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিশ্ব র‍্যাংকিং ৩০ এর ভেতর। এটি কোরিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশিয়ার চতুর্থ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।

১. শিক্ষা ব্যবস্থা: এখানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি ও কোরিয়ান উভয় ভাষার কোর্স রয়েছে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই ভাষা দক্ষতার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে। ব্যাচেলর, মাস্টার ও পিএইচডি করার জন্য শিক্ষার্থীরা কোরিয়ায় যেতে পারেন। ব্যাচেলর ডিগ্রির মেয়াদ সাধারণত তিন থেকে চার বছর, মাস্টার ডিগ্রির মেয়াদ এক থেকে দুই বছর এবং ডক্টরাল/ পিএইচডি ডিগ্রির মেয়াদ তিন থেকে পাঁচ বছর হয়ে থাকে।

কোরিয়ান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফল ও স্প্রিং এই দুই সেমিস্টারে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন। সাউথ কোরিয়ায় ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি বেশ প্রতিযোগিতামূলক। এসএসসি, এইচএসসি অথবা ও-লেভেল, এ-লেভেলে খুব ভালো ফলাফলের পাশাপাশি ‘সহশিক্ষামূলক’ কাজের সাথে যুক্ত থাকলে সুবিধা পাওয়া যায়। ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির জন্য এসবের বিকল্প নেই।

২. আবাসন ব্যবস্থা: দক্ষিণ কোরিয়ায় পড়াশোনা জন্য যেতে চাইলে, আপনাকে আবাসন নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামাতে হবে না। কারণ প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি স্বল্প খরচে এসব হোস্টেলে থাকতে পারবেন।

৩. শিক্ষাবৃত্তি: কোরিয়াতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ২০০টির বেশি শিক্ষাবৃত্তির সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো কোরিয়ান গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম যা কেজিএসপি নামে পরিচিত, এ স্কলারশিপটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের প্রদান করা হয়ে থাকে। এটি একটি বিশেষ সরকারি স্কলারশিপ, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে টিউশন ফি মওকুফ, থাকা-খাওয়ার খরচ, এমনকি আসা যাওয়া বিমান ভাড়া পর্যন্ত। এছাড়াও বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিজস্ব কিছু বৃত্তির ব্যবস্থা আছে।

৪. জীবনযাত্রা ও পড়াশোনার খরচ কম: দক্ষিণ কোরিয়ায় টিউশন ফি ও থাকা খাওয়ার খরচ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অষ্ট্রেলিয়া বা কানাডার চেয়ে কম। তবে এদেশের ডিগ্রির মান ইউরোপের দেশগুলো থেকে কোনো অংশে কম নয়। সিউলের মতো বড় শহরগুলোতে টিউশন ফি ও থাকা খাওয়ার খরচ একটু বেশি তবে অন্যান্য শহরগুলোতে খরচ কম।

৫. কাজের সুযোগ: উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা খন্ডকালীন কাজ করতে পারেন সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা এবং ছুটির সময় ফুলটাইম কাজের সুযোগ পাবেন।

৬. শক্তিশালী অর্থনীতি; দক্ষিণ কোরিয়াকে টাইগার অর্থনীতির দেশ বলা হয়। এদেশের অর্থনীতি মূলত মিশ্র অর্থনীতি এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে
শক্তিধর দেশের তালিকায় দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থান ১১তম। তাছাড়া জিডিপির দিক থেকে দেশটি বিশ্বে ১৩তম স্থানে রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পণ্য রয়েছে, এর মধ্যে এলজি ইলেকট্রনিক্স এবং স্যামসাং অন্যতম।

এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার দিক থেকে দক্ষিণ কোরিয়া অনেক উন্নত। এখানে উচ্চগতি সম্পন্ন রেল, বাস, বিমান ও নৌ ব্যবস্থা রয়েছে। ২০১৬ সালে হিসাব অনুযায়ী, সে বছর ১৭ মিলিয়ন পর্যটক দেশটিতে ভ্রমণ করেছেন। এছাড়া নাটক, চলিচ্চত্র এবং সঙ্গীত শিল্প দেশটির জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৭. আকর্ষণীয় স্থান: দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলের কাছে বেশ কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে৷ দ্বীপগুলোর মধ্যে জেজু অন্যতম৷ ইউনেস্কোর ঐতিহ্যের তালিকায় রয়েছে এই আগ্নেয় দ্বীপের নাম৷ সেখানে গেলে ‘হেনিয়ো’দের দেখা পাওয়া যায়, যারা কোনো যন্ত্রপাতির সাহায্য ছাড়াই সাগরের তলদেশ থেকে শামুক, সাগরের শজারু, শেলফিশ সংগ্রহ করেন৷

তাছাড়া সেওরাকসান ন্যাশনাল পার্ক দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অন্যতম সুন্দর স্থান বলে গণ্য করা হয়৷ ছোট ছোট পাহাড়ের মাঝে লাল আর হলুদ বনের সৌন্দর্য পর্যটকদের বিস্মিত করে৷ এছাড়াও এদেশে রয়েছে অসংখ্য ক্লাব, বার ও রেস্টুরেন্ট, যেগুলো দিন রাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে, পড়াশোনার ফাঁকে অবসর সময়ে নিজের ইচ্ছা মতো যেকোনো জায়গায় ঘুরে আসতে পারেন।

৮. খাদ্য বৈচিত্র্য: আপনি যদি কম দামে মজাদার ও সুস্বাদু খাবার খেতে চান, তাহলে দক্ষিণ কোরিয়া আপনার জন্য একদম সঠিক জায়গা। খাদ্য বৈচিত্র্য এদেশের সংস্কৃতির অংশ। কোরিয়ার মানুষের খাবারের মধ্যে সাধারণত ভাত, মাছ, মাংস, স্যুপ, সবজি এবং কিছু বিশেষ ধরনের খাবার টোফু, সোজু, মাকজোলি ও বকবুনজা জু ইত্যাদি জনপ্রিয়।

এছাড়াও এখানের স্ট্রিট ফুড খুবই জনপ্রিয়। এদেশে রাস্তার পাশে সারি সারি স্ট্রিট ফুডের দোকান রয়েছে, যেগুলো স্বল্পমূল্যে মানসম্মত খাবার সরবরাহ করে থাকে। বেশিরভাগ রেস্তোরা গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। এমনকি কিছু কিছু রেস্তোরা ২৪ ঘণ্টা খাবার ডেলিভারি সেবা প্রদান করে থাকে। তথ্যসূত্র:ইন্টারনেট।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com