ইরাক এয়ারওয়েজ, যা মূলত “ইরাকের জাতীয় বিমান সংস্থা” নামে পরিচিত, ইরাকের সরকারি মালিকানাধীন বিমান পরিবহন সংস্থা। এই সংস্থাটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে যাত্রী পরিবহন এবং কার্গো পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইরাক এয়ারওয়েজ ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি বর্তমানে ইরাকের অন্যতম প্রধান বিমান পরিবহন সংস্থা হিসেবে পরিচিত।
ইরাক এয়ারওয়েজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৫ সালে। এর শুরুর সময়ে, সংস্থাটি কেবলমাত্র কিছু ঘরোয়া রুটের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন করত। তবে, সময়ের সাথে সাথে এর পরিচালনা বৃদ্ধি পায় এবং আন্তর্জাতিক রুটে বিস্তৃত হয়। ১৯৫০ এর দশকে ইরাক এয়ারওয়েজ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক রুট চালু করে, বিশেষত আরব দেশগুলোর মধ্যে।
১৯৬০-৭০ দশক পর্যন্ত, ইরাক এয়ারওয়েজ তার আধুনিক বিমান বহর সংগ্রহে মনোযোগ দেয় এবং তখন থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন শহরে তাদের ফ্লাইট চালু হয়। ১৯৯০ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় এই বিমান সংস্থা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়, কিন্তু পরবর্তীতে পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ইরাক এয়ারওয়েজের বিমানের বহর বেশ বৈচিত্র্যময় এবং আধুনিক। বর্তমানে, সংস্থাটি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বোয়িং এবং এয়ারবাস উড়োজাহাজ সংগ্রহ করেছে। এই বহরটি উপযোগী বিভিন্ন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য ব্যবহৃত হয়।
বিমানবাহিনীটির কিছু জনপ্রিয় মডেলগুলোর মধ্যে রয়েছে বোয়িং ৭৩৭, ৭৪৭ এবং এয়ারবাস A310 ও A321।
ইরাক এয়ারওয়েজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করে। এটির রুট নেটওয়ার্ক এশিয়া, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি শহরে বিস্তৃত। এর মধ্যে বাগদাদ থেকে লন্ডন, আমস্টারডাম, জেদ্দা, কুয়ালালামপুর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক শহরে সরাসরি ফ্লাইট চালু রয়েছে।
ইরাকের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলিও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই ফ্লাইটগুলো দেশটির বিভিন্ন শহরের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করে তোলে। বাগদাদ, মসুল, বাসরা, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে বিমানের ফ্লাইট প্রচলিত।
ইরাক এয়ারওয়েজ তার যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সেবা প্রদান করে। এর মধ্যে রয়েছে:
বিশ্বের অন্যান্য বিমান সংস্থার মতো, ইরাক এয়ারওয়েজও নিরাপত্তা বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। তবে, দেশটির রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি মাঝে মাঝে এই সংস্থাটির কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, যুদ্ধকালীন সময় এবং সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে, বিমান পরিষেবা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু, দীর্ঘ সময় ধরে ইরাক এয়ারওয়েজ তার নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলিকে শক্তিশালী করতে সক্ষম হয়েছে।
ইরাক এয়ারওয়েজ আগামী কয়েক বছরে তার বিমান বহর সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক রুট নেটওয়ার্কের বিস্তার করার পরিকল্পনা নিয়েছে। পাশাপাশি, বিমান সংস্থাটি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এবং আধুনিক সেবা সুবিধা সম্প্রসারণের দিকে মনোনিবেশ করেছে, যাতে আরও বেশি যাত্রী আকৃষ্ট করা সম্ভব হয়।
ইরাক এয়ারওয়েজ একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা যা সময়ের সাথে সাথে তার সেবা এবং কার্যক্রমে উন্নতি সাধন করেছে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, সংস্থাটি তার বিমান চলাচল এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে কাজ করছে। ভবিষ্যতে এটি বিশ্বের অন্যতম প্রধান বিমান সংস্থার তালিকায় নিজেদের স্থান পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।