যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকা হচ্ছে উত্তর আমেরিকার একটি বৃহৎ এবং উন্নত দেশ। প্রায় ৫০ টি অংগরাজ্য নিয়ে আমেরিকা গঠিত। বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত আমেরিকা তার অর্থনৈতিক, সামরিক এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য বিখ্যাত। এটি ৫০টি রাজ্য নিয়ে গঠিত এবং প্রত্যেকটি রাজ্যেই রয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আধুনিক শহর ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ এখানে ভ্রমণ ও স্থায়ীভাবে বসবাস করতে আগ্রহী।
আমেরিকার জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পটসমূহ
১. স্ট্যাচু অব লিবার্টি (Statue of Liberty), নিউ ইয়র্ক
বিশ্বের স্বাধীনতার প্রতীক এই স্থাপনাটি নিউ ইয়র্ক শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান।
২. গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন (Grand Canyon), অ্যারিজোনা
বিশ্বের অন্যতম বিস্ময় এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য জায়গাটি পাহাড় ও উপত্যকার অপূর্ব সমন্বয়।
৩. টাইমস স্কয়ার (Times Square), নিউ ইয়র্ক
নিউ ইয়র্ক শহরের প্রাণকেন্দ্র টাইমস স্কয়ার তার আলো ঝলমলে পরিবেশ ও জীবন্ত রাতের জন্য বিখ্যাত।
4. ডিজনিল্যান্ড (Disneyland), ক্যালিফোর্নিয়া
বিশ্বের সেরা বিনোদন পার্কগুলোর মধ্যে একটি, যেখানে ছোট-বড় সবাই মজা করতে পারে।
৫. নিয়াগ্রা জলপ্রপাত (Niagara Falls), নিউ ইয়র্ক
বিশ্ববিখ্যাত এই জলপ্রপাতটি দেখলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
কেন আমেরিকা বিশ্বের একমাত্র সুপার পাওয়ার?
• অর্থনৈতিক সামর্থ্য: আমেরিকার অর্থনীতি বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী। প্রযুক্তি, শিল্প ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এদের আধিপত্য রয়েছে।
• সামরিক শক্তি: বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও উন্নত সামরিক বাহিনী আমেরিকার।
• বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: সিলিকন ভ্যালির মতো জায়গা থেকে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির অগ্রগতি হচ্ছে।
• রাজনৈতিক প্রভাব: বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আমেরিকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট।
• সাংস্কৃতিক প্রভাব: হলিউড সিনেমা, ফ্যাশন, মিউজিক ও ফাস্টফুড কালচারের কারণে বিশ্বব্যাপী আমেরিকান সংস্কৃতি জনপ্রিয়।
আমেরিকার সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছু কথা
আমেরিকান সংস্কৃতি বহুজাতিক ও বৈচিত্র্যপূর্ণ। এখানে বিশ্বের প্রায় সব দেশের মানুষ বসবাস করে।
• ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল: আমেরিকানরা সাধারণত আধুনিক এবং উদার চিন্তাধারার।
• খাদ্যাভ্যাস: বার্গার, পিজ্জা, হটডগের মতো ফাস্টফুড বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়।
• বিনোদন: আমেরিকান মুভি ইন্ডাস্ট্রি ‘হলিউড’ বিশ্বব্যাপী বিনোদনের সবচেয়ে বড় উৎস।
• উৎসব: থ্যাংকসগিভিং, হ্যালোইন, ক্রিসমাস আমেরিকানদের প্রধান উৎসব।
বাংলাদেশ থেকে আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা আবেদন প্রসেস
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আমেরিকার B1/B2 (Tourist/Business) ভিসা নিতে হলে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপ হলো DS-160 ফর্ম পূরণ করা। এরপর ব্যাংকে নির্দিস্ট পরিমান ভিসা প্রদান করে নির্দিস্ট ওয়েবসাইট থেকে ইন্টারভিউ ডেট নিতে হয় এবং নির্দিস্ট ডেট এবং সময় অনুযায়ী আপনার সমস্ত ডকুমেন্ট নিয়ে উপস্থিত থাকতে হয় এ্যাম্বাসিতে।
DS-160 ফর্ম পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ:
১. ব্যক্তিগত তথ্য: নাম, জন্মতারিখ, পাসপোর্ট নম্বর, জন্মস্থান।
২. পাসপোর্ট: বৈধ পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্য।
৩. ভ্রমণের পরিকল্পনা: আপনি কোথায় যাবেন, কতদিন থাকবেন, কোথায় থাকবেন।
৪. পূর্ববর্তী ভ্রমণের তথ্য: যদি আগে আমেরিকা বা অন্য কোনো দেশে ভ্রমণ করে থাকেন।
৫. পারিবারিক তথ্য: বাবা-মা, স্ত্রী/স্বামী, সন্তানদের তথ্য।
৬. কর্মসংস্থান ও শিক্ষা: আপনার চাকরি বা ব্যবসা সংক্রান্ত তথ্য এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা।
৭. আর্থিক অবস্থা: ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ইনকাম সোর্স।
৮. সাপোর্টিং ডকুমেন্ট: ইনভাইটেশন লেটার (যদি থাকে), হোটেল বুকিং, রিটার্ন টিকিট ইত্যাদি।
৯. আপনার ছবি: নির্ধারিত ফরম্যাট অনুযায়ী ছবি আপলোড করতে হবে।
ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুতির টিপস
১. সত্য এবং সঠিক তথ্য দিন: কোনো তথ্য গোপন বা মিথ্যা দিবেন না।
২. আত্মবিশ্বাসী থাকুন: ইন্টারভিউয়ের সময় শান্ত এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে কথা বলুন।
৩. দলিলপত্র ঠিক রাখুন: প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টস সঠিকভাবে গুছিয়ে নিয়ে যান।
৪. পরিচ্ছন্ন পোশাক পরুন: আপনার পোশাক হোক প্রফেশনাল এবং পরিচ্ছন্ন।
৫. ভ্রমণের উদ্দেশ্য পরিষ্কার করুন: কনস্যুলার অফিসারকে বুঝিয়ে বলুন কেন আপনি আমেরিকায় ভ্রমণ করতে চান এবং কেন আপনি ফিরে আসবেন।
৬. সময়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন: নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণ আগে পৌঁছে যান।
৭. উত্তর সংক্ষেপে দিন: প্রশ্নের উত্তর সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট দিন, অপ্রাসঙ্গিক কিছু বলবেন না।
Like this:
Like Loading...