1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
আন্দামান ও নিকোবর
বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সস্তায় বিদেশ ভ্রমণ: স্বপ্নকে সত্যি করার বিজ্ঞানসম্মত গাইড ব্রিটেনে ভিসা বদল, বাংলাদেশিদের জন্য কী পরিবর্তন ক্রিপটিক গর্ভাবস্থা – যখন নিজেই জানেন না আপনি গর্ভবতী পর্যটন ভিসায় বিদেশ গিয়ে কাজ করলে কী কী শাস্তি হতে পারে স্পা থেকে সিনেপ্লেক্স , যা যা আছে বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বিমানবন্দরে তিন বছরে পাঁচ লাখ কর্মী নেবে ইটালি, সুযোগ পেতে পারেন বাংলাদেশিরাও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ইইউতে অভিবাসী কমেছে ২০ ভাগ, শীর্ষে বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ প্রবেশে শীর্ষে বাংলাদেশ ভারতের এই গ্রামে মেয়েদেরকে কাপড় ছাড়াই থাকতে হয়

আন্দামান ও নিকোবর

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০২৩

আন্দামান ও নিকোবর-এর দ্বীপপুঞ্জ, তার অনুপম সৌন্দর্য, উত্তেজক উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের সমৃদ্ধতায় সস্নেহে উপাধি প্রাপ্ত “পান্না দ্বীপপুঞ্জ”-হিসাবে। এইভাবে, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে রাজ্য পর্যটন তার সংযোগকে সুশোভিত ও বিস্তৃত করে তুলেছে। প্রকৃতপক্ষে সুন্দর লোকালয়, সূর্য-চুম্বিত সমুদ্র সৈকত, লোভনীয় পিকনিক স্থল এবং অন্যান্য বিভিন্ন চমকপ্রদ সৌন্দর্য – এই রাজ্যের পর্যটন ব্যবস্থায় আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে।

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ-এর দ্বীপগুলি, রাজ্যিক পর্যটনে উৎকর্ষতা সাধন করেছে; মহিমান্বিত দ্বীপপুঞ্জগুলির মধ্যে রয়েছে জলি বয়্, হ্যাভলক, সিনকিউ, ছাতাম, ভাইপার, রস, ব্যারেন এবং রেড স্কিন- যেগুলি অসাধারণ বৈশিষ্ট্যযুক্ত যেমন প্রাক্কালীন অন্ধকূপ, জীবন্ত আগ্নেয়গিরি, মধ্যযুগীয় কাঠচেরাই কারখানা (শ্য মিল), বিচিত্র বর্ণের প্রবাল ও আরোও অনেক কিছু।

তার উপর সুবিশাল প্রাচীন প্রসারণ ও স্বর্ণালী বালুকার সঙ্গে সমুদ্র সৈকতগুলি আকর্ষণের ভার অর্পণ করে নিয়েছে, যেগুলি আপনার আত্মাকে পুনুরুজ্জীবিত করার এবং সব ধরনের বিরক্তি থেকে আপনাকে মুক্ত করার ক্ষমতা রাখে। সবচেয়ে বিশিষ্ট হল রাধানগর, কারমাটাং, রামনগর, হরমিন্দর উপসাগর, কোরবাইন’স কোভ টু্রিজম্ কমপ্লেক্স।

তারপর হচ্ছে পিকনিক স্থল; যেমন চিড়িয়া তাপু, মাউন্ট হ্যারিয়েট ও কোরবাইন’স কোভ টু্রিজম্ কমপ্লেক্স – যা নিজস্ব বিনোদনের জন্য আনন্দদায়ক স্থলের চাহিদা পূরণ এবং জীবনের মজাদার ও প্রফুল্লময় মুহুর্তগুলির অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

এছাড়াও মিউজিয়াম ও স্মৃতিস্তম্ভগুলি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজ্য পর্যটনে এক মহান অবদান রাখে। সুপ্রসিদ্ধ মিউজিয়ামগুলির মধ্যে রয়েছে ফরেস্ট মিউজিয়াম, সমুদ্রিকা অফ নাভাল মেরিন্ মিউজিয়াম, ন্যাশনাল মিউজিয়াম ও আ্যনথ্রোপলোজিক্যাল মিউজিয়াম। অন্যদিকে স্মৃতিস্তম্ভের মধ্যে রয়েছে সেলুলার জেল, ভাইপার আইল্যান্ডের ফাঁসিকাঠ – যা বহু পর্যটকদের আকর্ষিত করে।

পোর্ট ব্লেয়ারের মধুবন ও মহাত্মা গান্ধী মেরিন্ ন্যাশনাল পার্ক এবং নিকোবরের কার নিকোবর ও কচল প্রভৃতি স্হান আন্দামান ও নিকোবর রাজ্য পর্যটনে এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।

এই যমজ দ্বীপপুঞ্জে বাসস্থানের সুযোগ-সুবিধাও বেশ অসাধারণ, প্রচুর তারকা ও বিলাস-বহুল শোভনীয় হোটেল লক্ষ্য করা যায়। এখানে অনেক সরকারি লজ্ ও রিসর্ট রয়েছে যেগুলি আপনার অবস্থানকে অতি স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই নির্মিত হয়েছে।

বিভিন্ন ধরনের জলক্রীড়া (ওয়্যাটার স্পোর্টস)-গুলি হল প্রকৃতপক্ষে খুবই চিত্তাকর্ষক এবং সেগুলিতে অংশগ্রহণ আপনার খুবই পছন্দ হবে।

আন্দামান ও নিকোবরে পৌঁছানোর উপায়

আন্দামান ও নিকোবরে কিভাবে পৌঁছাবেন, এটি যেকোনও পর্যটকের কাছে উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিৎ নয়। আন্দামান ও নিকোবরের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি বঙ্গোপাগরের মধ্যে, ভারতের মূল ভূ-খন্ডের দক্ষিণ-পূর্বদিকে অবস্থিত। ভারতের এই নির্জন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি সমুদ্র এবং বায়ু এই উভয় মাধ্যমেই ভারতের বাকিদের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে, এইভাবেই আন্দামান ও নিকোবরের পর্যটন সুবিধালব্ধ হয়ে উঠেছে।

বিমান মাধ্যমে

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে ভ্রমণের জন্য, সবচেয়ে সুবিধাজনক হল বিমানবন্দরের উপলব্ধতা, যেটি এখনকার রাজধানী শহর পোর্ট ব্লেয়ারে অবস্থিত। এখান থেকে, যে কেউ খুব সহজেই ভারতের মূল ভূ-খন্ডের – চেন্নাই ও কলকাতার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে যাতায়াত করতে পারেন। বিমানগুলি নিয়মিতরূপে চেন্নাই, কলকাতা ও পোর্ট ব্লেয়ারের মধ্যে পরিচালিত রয়েছে। বেশ কিছু প্রধান বিমানসংস্থা যেমন জেট্ এয়্যারওয়েজ, ইন্ডিয়্যান্ এয়্যারলাইনস এবং এয়্যার ডেক্যান বিমান পরিচালনা করে।

জাহাজ মাধ্যমে

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, বঙ্গোপাগরের কেন্দ্রে অবস্থিত। সুতরাং, যে কেউ জাহাজ মাধ্যম দ্বারা আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর মনোরম অভিজ্ঞতা হাতছাড়া করতে চাইবেন না। যাত্রীবাহী জাহাজগুলি পোর্ট ব্লেয়ারের সঙ্গে ভারতের মূল ভূ-খন্ডের প্রধান প্রধান শহর যেমন – কলকাতা, চেন্নাই ও বিশাখাপত্তনমের সঙ্গে সু-সুংযুক্ত রয়েছে। এই জাহাজগুলি নিয়মিত ভিত্তিতে উপলব্ধ রয়েছে এবং সকলকে এগুলি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সফরে সহায়তা করে।

প্রতি মাসে, গড় অনুপাতে, চেন্নাই ও কলকাতা থেকে পোর্ট ব্লেয়ারে ভ্রমণের জন্য ৩-টি বা ৪-টি জাহাজ উপলব্ধ রয়েছে। বিশাখাপত্তনম থেকে প্রতি মাসে পোর্ট ব্লেয়ারে ভ্রমণের জন্য ১-টি করে জাহাজ উপলব্ধ রয়েছে।

সমুদ্র পথে পোর্ট ব্লেয়ারে পৌঁছতে প্রায় তিনদিন সময় লাগে। একটি জাহাজ আসার পর পুনরায় অর্থাৎ পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কলকাতা, চেন্নাই ও বিশাখাপত্তনম যাত্রা শুরু করার পূর্বে সাধারণত প্রায় ২-দিনের জন্য সমুদ্র-বন্দরে নিবৃত্ত থাকে।

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পরিদর্শনমূলক স্থান

প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ হল এক স্বর্গোদ্যান এবং এইভাবেই প্রতি বছর বিপূল সংখ্যক পর্যটকদের আকর্ষিত করে। এটি এক অতীব সৌন্দর্যময় স্থান যা এক আদর্শ অবকাশ যাপনের প্রফুল্লতা প্রদান করে। নিকোবর একটি ক্ষুদ্র স্থান দখল করে রয়েছে, তবে এটি এক পূর্ণরূপে সুসজ্জিত দুনিয়া।

নিকোবরে পারিপার্শ্বিক দৃশ্য মানেই সুন্দর সুন্দর সমুদ্রসৈকত ও ম্যানগ্রোভ অরণ্যগুলিতে উত্তেজক আনন্দের উপলব্ধি। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সেই সমস্ত ব্যাক্তিদের জন্য আদর্শ যারা প্রকৃতির সর্বাঙ্গীন নির্জনতাকে ভালোবাসেন। সমুদ্র তীরবর্তী চারপাশের অঞ্চলগুলি ঐশ্বরিক সম। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের, নিকোবর দ্বীপটি সামুদ্রিক জীবন সমৃদ্ধ।

আন্দামানে পরিদর্শনযোগ্য স্থান

  • লং আইল্যান্ড।
  • সেলুলার জেল।
  • আ্যনথ্রোপলোজিক্যাল মিউজিয়াম।
  • মহাত্মা গান্ধী মেরিন্ ন্যাশনাল পার্ক।

নিকোবরে পরিদর্শনযোগ্য স্থান

  • ইন্দিরা পয়েন্ট।
  • কার নিকোবর।
  • কটচল।
  • গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ড।

আন্দামানে দর্শনীয় স্থান

লং আইল্যান্ড


বিভাগ : প্রকৃতি

লং আইল্যান্ড হল আন্দামানের পরিপার্শ্বিক দৃশ্যবৎ স্থানগুলির মধ্যে সবচেয়ে এক অন্যতম প্রিয়। ভ্রমণার্থীরা ডলফিনদের রক্ষণাবেক্ষণ দেখার জন্য এই জায়গায় ভিড় করে। লালাজী উপসাগরে অবস্থিত বালুকাময় সমুদ্রসৈকতও লং আইল্যান্ড-এর এক মূখ্য স্থান বলে বিবেচনা করা হয়।

সেলুলার জেল


বিভাগ : ইতিহাস ও সংস্কৃতি

আন্দামান হচ্ছে এমন একটি স্থান, যেখানে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধাচরণকারী অভিযুক্ত অপরাধীদের নির্বাসনে পাঠনো হত এবং গরাদের পিছনে বন্দী করে রাখা হত। অতএব, সেলুলার জেল তার রাজত্বের অধীনে একটি মহান অতীতকে জড়িয়ে ধরে আছে। এর ফল হিসাবে, স্বাধীতা সংগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা যে কি অসহ দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে তাঁদের জীবন কাটিয়েছিলেন তার সাক্ষী হতে, পর্যটক ও কৌতূহলী ব্যাক্তিরা এই সেলুলার জেল পরিদর্শনে আসেন।

মহাত্মা গান্ধী মেরিন্ ন্যাশনাল পার্ক


বিভাগ : বন্য প্রাণী

আন্দামানের পারিপার্শ্বিক দৃশ্যবৎ স্থানগুলির মধ্যে অন্তর্ভূক্ত রয়েছে মহাত্মা গান্ধী মেরিন্ ন্যাশনাল পার্ক। জাতীয় উদ্যানটি ওয়ান্ডুর-এ অবস্থিত, ১৫-টি দ্বীপপুঞ্জ সহ উন্মুক্ত সমুদ্র ও খাঁড়ি নিয়ে গঠিত। পর্যটকরা আন্দামানের সামু্দ্রিক জীবজন্তুদের অদ্ভূত জীবন ও বিরল বৈচিত্র্যময় প্রবাল (কোরাল)-এর সৌন্দর্য্য দেখতে এখানে আসেন। স্ক্যুবা ডাইভিং ও স্নোর্কেলিং-এর সংস্থান সহ, জাতীয় উদ্যানটি আন্দামানের পরিপার্শ্বিক দৃশ্যবৎ ঘুরে বেড়ানোর স্থানগুলির মধ্যে অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।

আ্যনথ্রোপলোজিক্যাল মিউজিয়াম


বিভাগ : ইতিহাস ও সংস্কৃতি

আ্যনথ্রোপলোজিক্যাল মিউজিয়াম, আন্দামানের জাতিগত ঐতিহ্যের ছাপ সংরক্ষণের এক আবাসস্থল। সুতরাং, এখানে আমরা আন্দামানের বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের হাতের তৈরি বিভিন্ন জিনিষপত্র, তৈজসপত্র, পোশাক, ভাস্কর্য ইত্যাদি দেখতে পাই।

নিকোবরে দর্শনীয় স্থান

পাখি ও ফুল এই দ্বীপপুঞ্জের অন্য আরেক আকর্ষণ, যা বহু সংখ্যক পর্যটকদের প্রলুব্ধ করে। নিকোবরের পরিপার্শ্বিক দৃশ্যবৎ স্থানগুলির মধ্যে নিকোবর দ্বীপের সমপ্রকৃতির বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় সমুদ্র সৈকতগুলি অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। যে কেউ এই দ্বীপের প্রকৃতির নিদারুণ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন।

এই দ্বীপেই অবস্থিত প্রসিদ্ধ ইন্দিরা পয়েন্ট হল একটি লাইট্ হাউস বা বাতিঘর যেটি দ্বীপটির দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। এই লাইট্ হাউসটির দানবীয় গঠন পর্যটকদের সম্মোহিত করার জন্য যথেষ্ট।

নিকোবরের পারিপার্শ্বিক দৃশ্যের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় কচল দ্বীপ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে, যেটি চমৎকার সৈকতের জন্য জনপ্রিয়। অন্যান্য পর্যটন আকর্ষণের মধ্যে কার নিকোবর ও গ্রেট নিকোবর তাদের অপরিমেয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সুপ্রসিদ্ধ।

বিস্ময়কর ও চিত্তাকর্ষক অরণ্য, শ্বেত বালুকাময় সমুদ্র সৈকত ও সমুদ্রের কাঁচের ন্যায় স্বচ্ছ জলধারা হল নিকোবর দ্বীপের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।

ইন্দিরা পয়েন্ট


বিভাগ : প্রকৃতি

নিকোবর আইল্যান্ড হল ভারতের সবচেয়ে এক অন্যতম উচ্চাকাঙ্খী পর্যটন গন্তব্যস্থল। এই স্থানটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কবিসুলভ চারুত্বে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখানে বেশ কিছু জনপ্রিয় পর্যটন স্থল রয়েছে, যেগুলিতে প্রতি বছর বিপূল সংখ্যক পর্যটক ভ্রমণে আসেন। এই গন্তব্যস্থগুলির মধ্যে, ইন্দিরা পয়েন্ট হল পরিদর্শনের জন্য এক অন্যতম স্থান।

ইন্দিরা পয়েন্ট হল সবচেয়ে এক অন্যতম সুন্দর স্থান, যেটি তার গগনচুম্বী লাইট্ হাউস বা বাতিঘরের জন্য সুপরিচিত। পারিপার্শ্বিক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে সুন্দর সমুদ্রসৈকত হল প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য আরেকটি আকর্ষণ। উপকূলীয় অঞ্চলটি দূষণমুক্ত প্রকৃতির আবরণমোচন করেছে।

ইন্দিরা পয়েন্ট লাইট্ হাউস বা বাতিঘরটি ১৯৭২ সালে নির্মিত হয়েছিল এবং তারপর থেকে এটি একটি স্তম্ভিক বৈশিষ্ট্য হিসাবে কাজ করে চলেছে এবং সেইসঙ্গে মালাক্কা থেকে আগত জাহাজগুলির জন্য এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ল্যান্ডমার্ক হিসাবেও কাজ করছে। এই আলোক কেন্দ্রটি পূর্বে পিয়ারসন্ পয়েন্ট নামে পরিচিত ছিল এবং পরবর্তীকালে এটির পিগম্যালিওন পয়েন্ট নামকরণ হয়, কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্তী ইন্দিরা গান্ধী এই স্থানটি পরিভ্রমণ করে যাওয়ার পর থেকে এটি চূড়ান্তভাবে ইন্দিরা পয়েন্ট নামে পরিচিতি পায়।

নিকোবরের ইন্দিরা পয়েন্ট, পূর্বীয় ভারত মহাসাগরের বৃহৎ নিকোবর দ্বীপ-এ অবস্থিত। এটি নিকোবর দ্বীপের সবচেয়ে এক অন্যতম মূখ্য আকর্ষণ। জলের মাঝখানে অবস্থিত, লাইট্ হাউসটি পৃথিবীর সবচেয়ে এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিদর্শিত ও সুন্দরভাবে সুপরিচর্যিত লাইট্ হাউস।

ইন্দিরা পয়েন্টের লাইট্ হাউসটির দানবীয় গঠন, দর্শকদের পূর্ণ বিস্ময়ের মধ্যে সম্মোহিত করে তোলে। লাইট্ হাউসের চারপাশে বহির্গত সর্পিলাকার সিঁড়িগুলিতে সাদা ও লাল বেড়ী আঁকা রয়েছে। ২০০৪ সালের ২৪-শে ডিসেম্বরের বিধ্বংসী সুনামির ফলে সমগ্র ভারতীয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এটি সমগ্র শক্তি কেন্দ্রগুলিকে বিনষ্ট করে দিয়েছিল কিন্তু লাইট্ হাউসে তার কোনও প্রভাব পড়েনি।

নিকোবর লাইট্ হাউস ইন্দিরা পয়েন্ট, এই দ্বীপটির এক প্রধান পর্যটন গন্তব্যস্থল।

কার নিকোবর


বিভাগ : প্রকৃতি

বঙ্গোপসাগরের কেন্দ্রে অবস্হিত এক গুচ্ছ দ্বীপের সমন্বয়ে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ গঠিত। অতি সাম্প্রতিককালে, এই স্থানটি পর্যটনের প্রধান প্রাসঙ্গিক বিষয় হয়ে উঠেছে এবং সারা বছর ধরে বিশ্বের সমস্ত প্রান্ত থেকে এক বিপূল সংখ্যক পর্যটকদের এখানে আসতে দেখা যায়। এই দ্বীপের প্রধান পর্যটন আকর্ষণগুলির মধ্যে, কার নিকোবর হল এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিদর্শনমূলক স্থান। কার নিকোবর মূলত নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সদর-দপ্তর।

যে কেউ কার নিকোবর দ্বীপের মাঝখানে প্রকৃতির কোলে মনোরম ছুটি কাটাতে পরেন। এই উর্বর সমভূমীয় দ্বীপটি নারিকেল গাছ দ্বারা আবৃত রয়েছে। এমনকি সমুদ্রের অনবরত হুঙ্কারের নিনাদ পর্যটকদের মনকে পুলকিত করে তুলবে। নিকোবর জেলার, কার নিকোবরের প্রকৃতির হেঁয়ালিপূ্র্ণ সৌন্দর্য একটি শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা হতে পারে।

নিকোবরের কার নিকোবর দ্বীপে বিচিত্র প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল রয়েছে। এছাড়াও পাশাপাশি, এটি অরণ্য ও সমু্দ্র তীরভূমির এক আকর্ষণীয় দৃশ্য প্রদান করে। বিস্ময়কর সাদা বালুকাময় সমুদ্রসৈকত এই দ্বীপটিকে এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিভ্রমণীয় পর্যটন স্থলে পরিণত করেছে।

পোর্ট ব্লেয়ার থেকে জল মাধ্যমে এই দ্বীপের মাঝখানে পৌঁছতে প্রায় ১৬ ঘন্টা সময় লাগে। আরেকটি অনন্য বিষয় হল যে অসাধারণ নিকোবরী কুঁড়েঘরগুলি গাছের উপর নির্মিত রয়েছে যেগুলিতে কাঠের তৈরি মেঝের দ্বারাই ভিতরে প্রবেশ করতে হয়; নিঃসন্দেহে এগুলি কিছু সম্পূরকের দাবি রাখে। এখানকার অধিবাসীদের জন্য নারিকেল হল বাণিজ্যের এবং খাবারের এক প্রধান সামগ্রী।

আপনি যদি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সফরে যেতে ইচ্ছুক হন, তবে আপনি সুপরিচিত কার নিকোবরে একবার ভ্রমণে যেতে পারেন।

কচল


বিভাগ : প্রকৃতি

নিকোবরে এমন অসংখ্য স্থান রয়েছে যেগুলি সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ণ। যদিও অধিকাংশ পর্যটন স্থলগুলিই উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের এক সমৃ্দ্ধ ভান্ডার সহ সুন্দর সমুদ্র তীরভূমি যুক্ত প্রকৃতি সম, তবে কচল দ্বীপের সৌন্দর্য অতুলনীয়।

পূর্বে কচল, তিহন্যূ নামে পরিচিত ছিল। এটি প্রায় ১৭৪.৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির ৫৭২-টি ক্ষুদ্র দ্বীপের মধ্যে নিকোবরের কচল দ্বীপ হল অন্যতম। এই দ্বীপের অপরিশোষিত নির্মল প্রকৃতির দরুণ এটি বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের জন্য এক জনপ্রিয় পর্যটন স্থল।

কচল দ্বীপ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ যা এটিকে এক জনপ্রিয় পর্যটন স্থলে পরিণত করেছে। এখানকার সমুদ্রের জল কাঁচের ন্যায় স্বচ্ছ। সমু্দ্রতটের উপর সূ্র্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য আপনার মনের মধ্যে এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি রেখে যাবে।

নিকোবরের কচল দ্বীপ, সমৃদ্ধ উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের এক সুবিশাল ভান্ডারে গর্বিত। উপকূলীয় অঞ্চলের মরশুমি পূষ্প অতীব সুন্দর। কচল দ্বীপের বন্যপ্রাণী, পর্যটকদের মধ্যে আরেকটি আগ্রহের সঞ্চার করেছে। এখানে বেশ কিছু অনন্য প্রজাতির জীবজন্তু ও পাখি দেখা যেতে পারে। যে কেউ এই গুচ্ছবদ্ধ সমুদ্র সৈকতগুলি পরিদর্শন করে ভুলে যাবেন না। কচল-এর সমুদ্র সৈকতে এক চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। কচল দ্বীপের সমুদ্র- মাছ ও প্রবালে পরিপূর্ণ। সমুদ্রের জল সূর্যস্নান (সান্ বাথ) ও সাঁতার কাটার জন্য সেরা।

গ্রীষ্ম ও শীত এই উভয় ঋতুতেই এই স্থান পরিভ্রমণের জন্য শ্রেষ্ঠ সময়।

গ্রেট নিকোবর দ্বীপ


বিভাগ : প্রকৃতি

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে প্রচুর সুন্দর সুন্দর সমুদ্র সৈকত রয়েছে এবং এগুলি প্রধানত বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জের নামে সুপরিচিত। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অসংখ্য দ্বীপপুঞ্জগুলির মধ্যে গ্রেট নিকোবর দ্বীপ এমন একটি স্থান যেখানে প্রচুর পর্যটক ঘুরতে আসেন। প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ গ্রেট নিকোবর দ্বীপের অপরিমিত সৌন্দর্যের উদ্ঘাটনে এখানে আসেন।

গ্রেট নিকোবর দ্বীপ বা বৃহৎ নিকোবর আইল্যান্ডের উষ্ণ ও ক্রান্তীয় জলবায়ু এখানে বিপূল প্রজাতির বৃক্ষসমূহকে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেয়। এমনকি এখানে অর্কিডের এক ব্যাপক বৈচিত্র্যও লক্ষণীয়। এই দ্বীপের প্রকৃতিজাত উদ্ভিদ ও প্রাণীকূল, উদ্ভিদবিজ্ঞানী ও প্রাণীবিজ্ঞানীদের কাছে এক মহান আলোড়নের বিষয় এবং এইভাবেই এই দ্বীপটি, বিপূল সংখ্যক বিজ্ঞানীদের আকর্ষিত করে। এই দ্বীপের প্রকৃতি খুবই পরিবেশ-বান্ধব।

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের গ্রেট নিকোবরে সমুদ্র সৈকতগুলির সৌন্দর্যতা, সমস্ত বর্ণনাকে অতিক্রম করে গেছে। গ্রেট নিকোবর দ্বীপটি, এক বিপূল সংখ্যক পর্যটকদের এই দ্বীপের মনোমু্গ্ধতা প্রদানে সফল হয়ে উঠেছে। দানবাকার লাইট্ হাউস ইন্দিরা পয়েন্ট এখানেই অবস্থিত।

গালাথিয়ার সান্নিধ্যে অবস্থিত দ্বীপটি কচ্ছপের জন্য একটি সুখকর বসবাসের স্থান, এই কচ্ছপগুলি জায়ান্ট লেদার্ ব্যাক টার্টলস (দৈত্যাকার চর্ম পৃষ্ঠযুক্ত কচ্ছপ) নামে জনপ্রিয় রূপে পরিচিত।

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের সেরা সময়

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণের সেরা সময় হল ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়।

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে কোথায় থাকবেন?

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে প্রচুর তারকা ও অ-তারকা শ্রেণীর হোটেল রয়েছে যেগুলি দ্বীপপুঞ্জে ভ্রমণকারী পর্যটকদের চাহিদা পূরণ করে। এছাড়াও এখানে প্রচুর রিসর্ট, রেস্তোঁরা ও ক্যাফে রয়েছে, যা ভ্রমণার্থীদের সমস্ত প্রকারের চাহিদা পূরণ করে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত বেশ কিছু জনপ্রিয় হোটেলের মধ্যে রয়েছে আন্দামান টিল হাউস, হাওয়াবিল নেস্ট, টার্টেল রিসর্ট ইত্যাদি।

আন্দামান ও নিকোবরের দ্বীপপুঞ্জগুলি, বিশিষ্ট পর্যটন গন্তব্যস্থল হয়ে ওঠায়, বিলাস-বহুল শোভনীয় থেকে বাজেট, বিভিন্ন ধরনের প্রচুর হোটেল গড়ে উঠেছে। অধিকাংশই পোর্ট ব্লেয়ারে অবস্থিত, এই হোটেলগুলি আপনার এক আরামপ্রদ অবস্হানকে সুনিশ্চিত করে তুলবে।

খাবারের প্রসিদ্ধ স্থান

আন্দামান ও নিকোবর, এক দ্বীপ অঞ্চল হওয়ায়, বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক খাবার এখানে প্রধানত বিখ্যাত; যেমন – কাঁকড়া, মাছ, গলদা চিংড়ি ও চিংড়ি। এর পাশাপাশি ভারতীয় ও চীনাজাতীয় বিভিন্ন নিরামিষ ও আমিষ খাবারও এখানে উপলব্ধ রয়েছে। পাশাপাশি এই দ্বীপপুঞ্জের সুখ্যাত রেস্তোঁরাগুলি বিভিন্ন প্রকারের জিভে জল আনা লোভনীয় মহাদেশীয় খাবারও নিবেদন করে। একজন ভোজন রসিকের আন্দামান ও নিকোবরের স্বাদ আস্বাদনের অন্বেষণে এখানকার বেশ কিছু জনপ্রিয় রেস্তোঁরাগুলিতে ঘুরে আসা প্রয়োজন, সেগুলির নিম্নলিখিত রূপে বর্ণনা করা হয়েছে :

  • মান্দালয় রেস্তোঁরা ও নিকো বার : ভারতীয়, চীনা ও মহাদেশীয় রান্নার খাবার।
  • ওয়্যাইল্ড গ্রাস্ রেস্তোঁরা ও বার : সামুদ্রিক খাবার।
  • বিশ্রান্তি : ভারতীয়, চীনা ও মহাদেশীয় রান্নার খাবার।
  • কোরবাইনস ডিল্যাইট রেস্তোঁরা ও বার : উত্তর ভারতীয়, চীনা ও মহাদেশীয় রান্নার খাবার।

আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ-এ কেনাকাটা

আন্দামান ও নিকোবর যদিও কেনাকাটা করার চেয়ে সাঁতার কাটা, মুক্ত বাতাসের স্বাদ নেওয়ার শ্রেয় স্থান তবে, আন্দামান ও নিকোবরে কেনাকাটা করাও এক অসাধারন অভিজ্ঞতা।

আন্দামান ও নিকোবরে কেনাকাটার জন্য প্রধান বাজার বা মার্কেট রয়েছে পোর্ট ব্লেয়ারে। বিভিন্ন আকৃতির বৈচিত্র্যময় বর্ণবিশিষ্ট প্রবাল ও ঝিনুকের জিনিষপত্র দোকানগুলিতে উপচে পড়ছে। আন্দামান ও নিকোবরে কেনাকাটা করার সময়, নিম্নলিখিত জনপ্রিয় হস্তনির্মিত দ্রব্যগুলির সন্ধান করতে পারেন; যেমন –

  • ঝিনুকের অলংকার যেমন কানের দুল, ব্রেসলেট (কাঁকন), শৈল্পিক বস্তু।
  • পার্ল বা মুক্তো এবং হস্তনির্মিত উৎপাদিকা দ্রব্য।
  • নারিকেল পাতার তৈরি মাদূর (পাম্ ম্যাট)।
  • নারিকেল খোলা দিয়ে তৈরি ল্যাম্প-সেড।
  • কাঠের কারুকার্যময় পণ্য যেমন ওয়াকিং স্টিক (হাঁটাচলার অবলম্বিত লাঠি), পাত্র এবং ট্রে, ছাইদানি ও আসবাবপত্র, যেগুলির অধিকাংশই স্থানীয় পদৌক কাঠ দিয়ে নির্মিত।
  • বাঁশের বেতের নৈপূণ্য।
  • নিকোবরি মাদূর, ইত্যাদি।

পোর্ট ব্লেয়ারের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হল আবের্দিন বাজার। এখানে খাদ্য সংযোগস্থল ও পাব্ সহ বেশ কয়েকটি সরকারি এম্পোরিয়া ও অসংখ্য বেসরকারি দোকান রয়েছে, যেগুলি আন্দামান ও নিকোবরে কেনাকাটা করতে গেলে আপনাকে এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা প্রদান করবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com