স্নাতক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের ভিসা সুবিধা বাতিল করায় দেউলিয়া হবার পথে ব্রিটেনের প্রায় ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রিটেনের অর্থনীতিতে প্রতি বছর ৪২ বিলিয়ন পাউন্ড যুক্ত করা এই শিল্পকে বাঁচাতে হলে, বিতর্কিত এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে ব্রিটেনে ১৪০ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা ইউনিভার্সিটিস ইউকে।
তাদের দাবি, ভিসা নীতির কারণে ব্রিটেনে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের প্রবণতা ও আগ্রহ কমছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের।
অফিস ফর স্টুডেন্টসের প্রতিবেদন বলছে, পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী না পাওয়ায় ব্রিটেনের ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে। ব্রিটেনের অভিবাসন কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ব্রিটেন শিক্ষার্থীদের পরিবারের ভিসা আবেদনের হার কমেছে প্রায় ৯০ শতাংশ।
ইতিপূর্বে গ্র্যাজুয়েট লেভেলের শিক্ষার্থীরা স্পাউস বা পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসার সুযোগ পেতেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী শুধুমাত্র পোস্ট গ্র্যাজুয়েট লেভেল ও রিসার্চ ডিগ্রির শিক্ষার্থীরা পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনার সুযোগ পাচ্ছে।
ব্রিটেনের ১৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা ইউনিভার্সিটিস ইউকে বলছে, হোম অফিসের ভিসা নীতি যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তি হুমকির মুখে পড়েছে।
ব্রিটেনে অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের তথ্য বলছে, ২০২২ সালে ব্রিটেনে প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও মার্চ ২০২৪ এ এই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৪৭ হাজারে।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার সঞ্জয় রায় বলেন, আমি মনে করি হোম অফিসের এই সিদ্ধান্ত অমানবিক, এক জন শিক্ষার্থীকে এই দেশে পড়াশোনার জন্য চার থেকে পাঁচ বছর থাকতে হয়, পৃথিবীর কোন দেশ শিক্ষাগ্রহণের সময় তাদের পরিবারকে দূরে রাখে না, আমি মনে করি হোম অফিসের মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজারি কমিটি এই সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবে।
এ এইচ জেড এসোসিয়েটস ইউকের প্রধান নির্বাহী বেঞ্জামিন বিলভারস্টোন এ বিষয়ে বলেন, আমার ছোট দুটো বাচ্চা আছে, আমি যদি স্টুডেন্ট হিসেবে যুক্তরাজ্যে পড়তে আসি তখন আমি আমার সন্তানদের বাড়িতে বন্দী করে আসবো না, আমি তাদের সাথে নিয়েই যুক্তরাজ্যে পড়তে আসতে চাইবো। আমি মনে করি যুক্তরাজ্য সরকারের এই ভিসা নীতি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
যুক্তরাজ্যের লিডস বেকেড ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর পিটার স্লি ও অনেকটাই একই ধরনের মত দেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। যে সকল শিক্ষার্থীরা ব্রিটেনের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে তাদেরকে বৈধ অভিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া উচিত।