রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন

আকাশপথে প্রায় বিচ্ছিন্ন ইসরায়েল–লেবানন, ফ্লাইট বন্ধ করেছে যে ২৭ কোম্পানি

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্যে একটি সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বেড়েছে। ইসরায়েল একই সঙ্গে লেবানন, সিরিয়া ও গাজায় হামলা চালাচ্ছে। সুবিধামতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হচ্ছে ইসরায়েলের ওপরও। বেশ বিশাল এক অঞ্চলের আকাশসীমা সে কারণে অনিরাপদ হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির কারণে বিশ্বের অনেক বিমান কোম্পানি এই অঞ্চল কিংবা উপদ্রুত এলাকার আকাশসীমা এড়িয়ে চলার লক্ষ্যে বিমান চলাচল আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে।

যেসব বিমান কোম্পানি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করেছে বা সীমিত করেছে, সেগুলো হলো:

এজিয়ান এয়ালাইনস: গ্রিক এই বিমান কোম্পানি লেবাননের রাজধানী বৈরুত হয়ে বিমান চলাচল ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া ২১ অক্টোবর পর্যন্ত ইসরায়েলের তেল আবিবে কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করবে না এই বিমান সংস্থা।

এয়ার আলজেরি: আলজেরিয়ান এই এয়ারলাইনস লেবাননমুখী ও লেবানন থেকে কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করছেন না। অনির্দিষ্টকালের জন্য তাদের এই সেবা বন্ধ থাকবে।

এয়ারবাল্টিক: লাটভিয়ার এই বিমান সংস্থা তেল আবিবে কোনো ফ্লাইট পাঠাচ্ছে না। আপাতত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

এয়ার ইউরোপা: এটি স্পেনের বিমান সংস্থা। তেল আবিবে তাদের ফ্লাইট বন্ধ থাকবে অক্টোবরের ২০ তারিখ পর্যন্ত।

এয়ার ফ্রান্স–কেএলএম: এয়ার ফ্রান্স আগেই তেল আবিবে তাদের ফ্লাইট বন্ধ করেছিল। তারা ফ্লাইট বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্ত ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। আর প্যারিস–বৈরুত ফ্লাইট বন্ধ থাকবে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত। কেএলএম অন্তত চলতি বছরের শেষ দিন পর্যন্ত তেল আবিবমুখী কোনো উড়োজাহাজ চালাবে না।

ফরাসি ও ডাচ মালিকানাধীন এই কোম্পানির স্বল্প খরচের বিমান সংস্থা ট্রান্সাভিয়া। তারা তেল আবিব, জর্ডানের রাজধানী আম্মান ও বৈরুতে আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এয়ার ইন্ডিয়া: ভারতীয় এই বিমান কোম্পানি পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তেল আবিবমুখী কোনো ফ্লাইট চালাবে না।

বুলগেরিয়া এয়ার: বুলগেরিয়ান এই বিমান সংস্থা অক্টোবরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত ইসরায়েল থেকে কিংবা ইসরায়েলমুখী কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করবে না।

ক্যাথি প্যাসিফিক: হংকং–ভিত্তিক এই বিমান কোম্পানি আগামী বছরের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত তেল আবিবে কোনো বিমান চালাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ডেল্টা এয়ারলাইনস: যুক্তরাষ্ট্রের এই বিমান কোম্পানি নিউইয়র্ক ও তেল আবিবের মধ্যে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রাখবে।

ইজিজেট: যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বল্প খরচের এই বিমান কোম্পানি গত এপ্রিল মাসে তেল আবিবে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ করে দেয়। আগামী বছরের ৩০ মার্চ তারা আবার ফ্লাইট চালু করার পরিকল্পনা করছে।

এমিরেটস: সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রমালিকানাধীন এই বড় বিমান কোম্পানি বৈরুতে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদ ও ইরানের রাজধানী তেহরানে তারা ফ্লাইট বন্ধ রাখবে অক্টোবরের ২৩ তারিখ পর্যন্ত। অন্যদিকে ইরাকি শহর বসরায় এমিরেটসের ফ্লাইট পুনরায় চালু হবে অক্টোবরের ১৭ তারিখে।

ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস: পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইথিওপিয়ার এই বিমান সংস্থা বৈরুতে ফ্লাইট বন্ধ রাখবে। অক্টোবরের ৪ তারিখে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বিমান কোম্পানিটি এই তথ্য জানিয়েছে।

ফ্লাইদুবাই: আমিরাতের এই বিমান প্রতিষ্ঠান দুবাই–বৈরুত পথে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত নিজেদের বিমান চলাচল বন্ধ রাখবে।

আইএজি: ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের মালিক কোম্পানি আইএজি। ব্রিটেনের এই বিমান পরিবহন কোম্পানি তেল আবিবে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করবে না। আইএজির স্বল্প খরচের বিমান সংস্থা আইবেরিয়া এক্সপ্রেস ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তেল আবিবে ফ্লাইট চালাবে না। আরেক প্রতিষ্ঠান ভুয়েলিং জানুয়ারির ১২ তারিখ পর্যন্ত তেল আবিবে এবং পুনরায় নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত আম্মানে ফ্লাইট চালাবে না।

ইরান এয়ার: ইরানের এই বিমান কোম্পানি পুনরায় নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত বৈরুত ফ্লাইট বন্ধ রাখবে।

ইরাক এয়ারওয়েজ: ইরাকের জাতীয় পতাকাবাহী পুনরায় নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত বৈরুত ফ্লাইট বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে।

ইটা এয়ারওয়েজ: ইতালির ইটা এয়ারওয়েজ তেল আবিবমুখী ফ্লাইট ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ রাখবে।

এলওটি: পোল্যান্ডের জাতীয় পতাকাবাহী এই বিমান সংস্থা অক্টোবরের ২৬ তারিখ পর্যন্ত তেল আবিবে ফ্লাইট বন্ধ রাখবে। অন্যদিকে এপ্রিলে মাসের ১ তারিখে তারা বৈরুতে পরবর্তী ফ্লাইট পাঠাবে বলে পরিকল্পনা করছে।

লুফৎহানসা গ্রুপ: জার্মানির এই বিমান চলাচল তেল আবিবে তাদের ফ্লাইট ৩১ অক্টোবর, তেহরানে ২৬ অক্টোবর ও বৈরুতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখবে। এ ছাড়া তারা ইরান ও ইরাকের আকাশসীমা ব্যবহার করবে না। তবে ইরাকি কুর্দিস্তানের এরবিল ফ্লাইটের জন্য একটি করিডর ব্যবহার করবে। ইসরায়েলি আকাশসীমা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই কোম্পানি।

টার্কিশ এয়ারলাইনস ও লুফৎহানসার যৌথ বিনিয়োগে গড়ে তোলা বিমান সংস্থা সানএক্সপ্রেস আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈরুত ফ্লাইট বন্ধ রাখবে।

পেগাসাস: তুরস্কের এই বিমান কোম্পানি আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বৈরুত ফ্লাইট বন্ধ রাখবে।

কাতার এয়ারওয়েজ: ইরাক, ইরান ও লেবাননে ফ্লাইট চালানো আপাতত বন্ধ রেখেছে কাতারের এই বিমান সংস্থা। অন্যদিকে আম্মানে কেবল দিনের বেলায় উড়োজাহাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতার এয়ারওয়েজ।

রাইনেয়ার: এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় স্বল্প খরচের বিমান চলাচল প্রতিষ্ঠান। আগামী ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত তেল আবিবে ফ্লাইট না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ও’লিয়েরি বলেছেন, ফ্লাইট চালানো বন্ধ রাখার এই সিদ্ধান্ত আগামী মার্চ পর্যন্ত বহাল রাখা হতে পারে।

সান্ডএয়ার: জার্মানির এই এয়ারলাইনস বার্লিন, ব্রেমেন ও মুয়েনস্টার/ওসনাব্রুয়েক থেকে বৈরুতমুখী ফ্লাইট আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখবে।

ইউনাইটেড এয়ারলাইনস: শিকাগো ভিত্তিক এই বিমান কোম্পানি তেল আবিবমুখী ফ্লাইট অদূর ভবিষ্যতে চালু হবে এমন আশা করছে না।

তারোম: তেল আবিবে অদূর ভবিষ্যৎ ফ্লাইট চালানো যাবে—রোমানিয়ার পতাকাবাহী এই বিমান সংস্থা এমনটা মনে করছে না।

ভার্জিন আটলান্টিক: যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই বিমান তেল আবিব ফ্লাইট আগামী মার্চ পর্যন্ত বন্ধ রাখবে।

উইজ এয়ার: হাঙ্গেরিভিত্তিক বিমান কোম্পানিটি তেল আবিব ফ্লাইট বাতিল করেছে, যা আগামী ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকবে। এ ছাড়া আম্মান, ইতালি, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া ও ব্রিটেনের মধ্যকার ফ্লাইট অক্টোবরের ১৬ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com