1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
অপরিশোধিত সোনা আমদানির পথ খুলছে
বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:১০ অপরাহ্ন
Uncategorized

অপরিশোধিত সোনা আমদানির পথ খুলছে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২ জুলাই, ২০২১

বৈধভাবে সোনা আমদানির পর অপরিশোধিত ও আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানির যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অপরিশোধিত সোনা আমদানির পর তা কারখানায় পরিশোধনের মাধ্যমে সোনার বার ও কয়েন উৎপাদন করা হবে। সেগুলো সরাসরি রপ্তানির পাশাপাশি দেশে অলংকার তৈরির পর অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো কিংবা বিদেশে রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।

দেশে প্রথমবারের মতো অপরিশোধিত ও আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানির সুযোগ দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত মাসে স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ সংশোধন করেছে। সেই আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার সোনা পরিশোধনের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে অপরিশোধিত ও আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানির অনুমতি নেবে, সে বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

জানা যায়, দেশের প্রভাবশালী একটি শিল্প গ্রুপ গত বছর সোনা পরিশোধনের কারখানা স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুমতির জন্য আবেদন করে। তাদের চাপেই মন্ত্রণালয় অনুমতি দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করে। সেই ধারাবাহিতায় স্বর্ণ নীতিমালা সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই শিল্প গ্রুপটি ছাড়াও বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির একজন নেতাও সোনা পরিশোধনের কারখানা স্থাপনের অনুমতি চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সোনা পরিশোধনের জন্য কারখানা স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। অনুমোদনের শর্তানুযায়ী, নির্ধারিত স্থানে সোনা পরিশোধনগার স্থাপন করতে হবে। অন্যান্য সব ধরনের লাইসেন্সের পাশাপাশি সোনা পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকার অনুমোদিত ব্যবসায়ী সংগঠনের বৈধ সদস্য হতে হবে।

অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানকে অপরিশোধিত ও আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানির জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করতে হবে।

আমদানির অনুমতির জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের কাগজপত্র, হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন সনদ, মূসক নিবন্ধন, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্যপদের কপি, প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জীবনবৃত্তান্ত, পরিশোধনাগারের নির্ধারিত স্থানের মালিকানার দলিল ইত্যাদি জমা দিতে হবে। অনুমতি ফি বাবদ ৩০ লাখ টাকা জমা দিতে হবে। অনুমোদনের মেয়াদকাল হবে পাঁচ বছর। মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে আবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতির নবায়ন নিতে হবে।

সংশোধিত স্বর্ণ নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিশ্বের অলংকার উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে বেলজিয়ামসহ ইউরোপের দেশ, ভারত, চীন অন্যতম। আর অলংকার আমদানিকারক দেশের মধ্যে সুইজারল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলজিয়াম, জার্মানি ও সিঙ্গাপুর শীর্ষ স্থানে রয়েছে। ২০১৯ সালে বিশ্বে মেশিন ও হাতে তৈরি সোনার অলংকারের বাজার ছিল ২২ হাজার ৯৩০ কোটি ডলারের। ২০২৫ সালে সেটির আকার বেড়ে ২৯ হাজার ১৭০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। হাতে তৈরি অলংকারের মূল্য সংযোজন বেশি। সারা দুনিয়ার ৮০ শতাংশ হাতে তৈরি অলংকার বাংলাদেশ ও ভারতে তৈরি হয়। তবে নানা কারণে রপ্তানি বাজারে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। এমনকি সোনার উচ্চমূল্যের কারণে দেশের বাজারও সংকুচিত হচ্ছে।

সুনির্দিষ্ট হিসাব না থাকলেও দেশে বছরে প্রায় ২০-৪০ মেট্রিক টন সোনার চাহিদা রয়েছে। তার মাত্র ১০ শতাংশ চাহিদা পুরোনো অলংকার দিয়ে মেটানো হয়। বাকিটা ব্যাগজ রুলের আওতায় বিদেশ থাকে আসে। অবৈধভাবেও আসে, তার প্রমাণ প্রায়ই ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণ সোনার চালান ধরা পড়ে। সোনার বাজার ও জুয়েলারি ব্যবসায় স্বচ্ছতা ফেরাতে ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে সোনা আমদানির জন্য লাইসেন্স দেয়। পরে আরেকটি প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পায়।

লাইসেন্স পাওয়ার পরও শুল্ক বেশি থাকায় প্রথম ছয় মাস কোনো সোনা আমদানি করেনি প্রতিষ্ঠানগুলো। গত অর্থবছরের বাজেটে ২০ শতাংশ কর প্রত্যাহার করা হয়। তারপর ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড গত বছরের ১০ জুন ১১ হাজার গ্রাম সোনা আমদানির জন্য আবেদন করে। দ্রুত সময়ে অনাপত্তি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। দুবাই থেকে ৩০ জুন সোনার বার আমদানি করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে আরোসা গোল্ড করপোরেশন ১৫ হাজার গ্রাম সোনা আমদানি করে। একাধিক প্রতিষ্ঠান আবেদন করলেও সোনার মান যাচাইয়ের অজুহাতে আমদানি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমদানি কয়েক মাস বন্ধ থাকলেও পরে আবার শুরু হয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com