বাংলাদেশের গ্রামের বর্ণনা দিতে গিয়ে কবি জসিমুদ্দিনের ভাবনায় এই শব্দগুলিই এসেছিল। কবিতার নাম রাখাল ছেলে। শহরের ইট কাঠ পাথরের ভিড়ে যাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সে থাকে সবুজ গাছপালা ঘেরা গ্রামে। তার রাতের স্বপ্নগুলি সব ভোরের মিঠেল রোদে শিশির-ঝরা ঘাসে উপর মিষ্টি হাসি হাসে। কবির এই কল্পনা পড়তে বা শুনতে শুনতেই মন স্নিগ্ধ হয়ে যায়। বাংলার গ্রামের এই মনোরম দৃশ্য এই সেদিনও বজায় ছিল। গ্রামের রাখালরা ছিল এমনই সাদা মনের বালক। কিন্তু দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামেও আধুনিকতার স্পর্শ পড়েছে। থাবা দিয়ে নয়া প্রযুক্তি। মানুষের সারল্য হারিয়ে গিয়ে সেখানে জায়গা করে নিয়ে আধুনিক সভ্যতা।
লাডপুরা খাস (মধ্যপ্রদেশ)
মধ্যপ্রদেশে ঘুরতে গিয়ে ওরছা, ঝাঁসি তো সকলেই যান। কিন্তু এি ওরছাতেই যে একটি ছোট্টো গ্রাম আছে তার খোঁজ প্রায় কেউই রাখেন না। গ্রামের নামটি লাডপুরা। মধ্যপ্রদেশের তিকমগড় জেলার ওরছা তহসিলে অবস্থিত এই গ্রাম। কটা দিন নিরিবিলিতে কাটানোর জন্য এই গ্রামটি আদর্শ। গ্রামীণ পর্যটনের অপূর্ব উদাহরণ এটি। এমনিতেও পর্যটনের ব্যাপারে মধ্যপ্রদেশ সরকারের পর্যটন বিভাগ সদা তৎপর। খাজুরাহ, ঝাঁসি, পান্না, কানহা, সাঁচি, ওরছাকে যেমন গুরুত্ব দেয় এই বিভাগ তেমনই লাডপুরার মতো ছোটো গ্রামকে স্নেহ করে। তবে বাংলার সবুজ ঘেরা গ্রাম নয়, মধ্যপ্রদেশের লাডপুর সেখানকার রুক্ষ প্রকৃতির সঙ্গেই মানিয়ে গুছিয়ে রয়েছে। স্থানীয় সংস্কৃতি, সাবেকি স্থানীয় খাবার, পোশাক, ভাষা, রীতিনীতি, ঐতিহ্য, স্থানীয় পরিবহন, গয়না, সাজগোজ, সঙ্গীত, বাদ্যযন্ত্র, নৃত্য, চিত্রকলা ইত্যাদি সবই নিজস্বতার ছাপ রাখে। পর্যটকদের কাছে অন্যন্ত আকর্ষণীয় এই স্থান। তাই ওরছা, খাজুরাহো, মান্ডু, সাঁচি, পাঁচমারি, তামিয়া, পান্না জাতীয় উদ্যান. বান্ধবগড় জাতীয় উদ্যান, কানহা জাতীয় উদ্যান ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি লাডপুরাকে মিস করলে পর্যটকরা কিন্তু ঠকবেন। গ্রামটি আপাতত UNWTO-র মনোনয়ন পেয়েছে তাই এই বেলা ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরে আসুন। পুরস্কার পেয়ে গেলে কিন্তু সেখানে ভিড় বাড়বে। বাড়বে জিনিসের দামও।